ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

যুক্তরাষ্ট্র-ইউরোপ সহযোগিতা নিয়ে এখন প্রশ্ন তোলার সময় নয় ॥ ট্রাম্পের উদ্দেশে ন্যাটোপ্রধান

একলা চলার সুযোগ নেই

প্রকাশিত: ০৬:১৫, ১৪ নভেম্বর ২০১৬

একলা চলার সুযোগ নেই

ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ায় পর এবার উদ্বেগ প্রকাশ করলেন ন্যাটো প্রধান জেনস স্টোলটেনবার্গ। ব্রিটেনের অবজারভার পত্রিকায় লেখা নিবন্ধে তিনি উল্লেখ করেন, একাকী পথ চলা ইউরোপ অথবা যুক্তরাষ্ট্র কারও জন্য বিকল্প ব্যবস্থা হতে পারে না। অবজারভারের উদ্দেশে এককভাবে লেখা ওই নিবন্ধে উত্তর আটলান্টিক সামরিক জোটের প্রধান স্টোলটেনবার্গ বলেন যে, পশ্চিমা দেশগুলো এখন এমন এক নিরাপত্তা হুমকির মুখোমুখি হয়েছে যা গত এক প্রজন্মের মধ্যে দেখা যায়নি। যুক্তরাষ্ট্রে ৯/১১ হামলার পর ন্যাটো দেশটির সহায়তা এগিয়ে এসেছে। ন্যাটো জোটভুক্ত দেশগুলো এ পর্যন্ত বিভিন্ন যুদ্ধে ত্যাগ স্বীকারের কথা উল্লেখ করে স্টোলটেনবার্গ বলেন, ২৮ জাতি জোটটিতে ‘আমেরিকার শক্তিশালী নেতৃত্বের’ মাধ্যমে ঐক্য কিভাবে ধরে রাখা যায় সেদিকে মনোযোগ দেয়াই এবার লক্ষ্য হওয়া উচিত। নির্বাচনী প্রচারাভিযানকালে ট্রাম্প ন্যাটোকে অপ্রয়োজনীয় জোট উল্লেখ করে বলেছিলেন প্রেসিডেন্ট হলে তিনি জোটের প্রতি মার্কিন অনুদান কমিয়ে দেবেন, একথা উল্লেখ করে স্টোলটেনবার্গ লিখেছেন, ‘আমরা এখন নিরাপত্তা এমন মারাত্মক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছি যা এক প্রজন্মের মধ্যে হইনি। যুক্তরাষ্ট্র-ইউরোপ সহযোগিতা সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন তোলার সময় এটি নয়।’ তিনি আরও লিখেন যে, ‘জোটভুক্ত যে কোন একটি দেশের ওপর আক্রমণ সবগুলো দেশের ওপর আক্রমণ বলে গণ্য হবেÑ আত্মরক্ষার এই বিধি বাস্তবায়নে সক্রিয় রয়েছে ন্যাটো। এটি কেবলমাত্র একটি প্রতীকী বিষয় নয়। যুক্তরাষ্ট্রে ৯/১১ হামলার পর থেকে সামরিক অভিযানে নিয়োজিত রয়েছে জোট। আফগানিস্তানে যুদ্ধের কমান্ড নিয়েছিল ন্যাটো এবং এখনও ওই অভিযান থেকে পুরোপুরি সরে আসেনি। আফগান যুদ্ধে এ পর্যন্ত এক হাজারের বেশি ইউরোপীয় সৈন্য তাদের সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেছে। ন্যাটো যা করেছে সবই ছিল যুক্তরাষ্ট্রে ওই হামলার প্রত্যক্ষ জবাব।’ ন্যাটোর আর্থিক খরচের ৭০ শতাংশ যুক্তরাষ্ট্র বহন করে থাকে এ কথা স্বীকার করে স্টোলটেনবার্গ বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া ন্যাটোর অন্য সদস্যদেরও এখন এ ব্যয়ভার আরও বেশি বহন করা উচিত। ক্যাম্পেন চলাকালে ট্রাম্পও বলেছিলেন, ন্যাটোর অন্য সদস্যদের এখন আর্থিক অনুদান বাড়ানো উচিত। স্টোলটেনবার্গ লিখেছেন যে, ‘একথা ঠিক আটলান্টিকের এপারে ও ওপারের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে মতপার্থক্য রয়েছে। তা সত্ত্বেও আমরা এক। আমরা নিজেদের মধ্যে ঐক্যের এক অনন্য বন্ধন অনুভব করি। স্বাধীনতা, নিরাপত্তা ও সমৃদ্ধির মতো মৌলিক বিষয়গুলো আমাদের মধ্যে অভিন্ন। বর্তমান অনিশ্চয়তার সময়ে আমরা আমেরিকার শক্তিশালী নেতৃত্ব কামনা করি। আমরা এটিও আশা করি যে ইউরোপীয় দেশগুলোতে ন্যয়সঙ্গত যার যার অংশের আর্থিক ব্যয়ভার বহন করবে। কারণ সবাই এক পারস্পরিক অবিচ্ছেদ্য বন্ধনে আবদ্ধ।’ যুক্তরাষ্ট্রে মঙ্গলবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পের অপ্রত্যাশিত জয় ভাবিয়ে তুলেছে ইউরোপের সামরিক নেতৃত্বকে। কারণ জুলাই মাসে, ট্রাম্প বলেছিলেন সন্ত্রাস দমনের সামর্থ্য ন্যাটোর নেই। আমেরিকা আর্থিক সহায়তার ওপর ভর করে চলা জোটের সদস্যদের নিজ নিজ দায়িত্ব পালনের সময় এখন এসে গেছে। এর জবাবে স্টোলটেনবার্গ লিখেন যে, ন্যাটো ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রেখেছে। উত্তর আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যে জঙ্গী বিরোধী সামরিক অভিযানেও অবদান রাখছে ন্যাটো। ইউরোপীয় ইউনিয়ন কমিশন প্রধান জ্যঁ ক্লদ জাঙ্কর শুক্রবার ট্রাম্পের নির্বাচনে জয় নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশের একদিন পর এ নিয়ে উদ্বেগের কথা জানালেন ন্যাটো প্রধান। এর আগে জাঙ্কার বলেছিলেন, ‘আমেরিকা আর ইউরোপের নিরাপত্তা দায়িত্ব বহন করবে না।
×