ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

তৃতীয় সাক্ষীর জবানবন্দী

যুদ্ধাপরাধী বিচার ॥ সুধারামের ৫ রাজাকার শ্রীপুরের শতাধিক লোককে হত্যা করে

প্রকাশিত: ০৫:৫২, ১৪ নভেম্বর ২০১৬

যুদ্ধাপরাধী বিচার ॥ সুধারামের ৫ রাজাকার শ্রীপুরের শতাধিক লোককে হত্যা করে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে নোয়াখালীর সুধারামে পাঁচ রাজাকারের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের তৃতীয় সাক্ষী আব্দুল খালেক জবানবন্দী প্রদান করেছেন। জবানবন্দীতে সাক্ষী বলেন, রাজাকার আমীর হোসেনসহ অন্যান্য রাজাকার আমার বড়ভাই আব্দুর রব বাচ্চুসহ শ্রীপুর গ্রামের শতাধিক লোককে গুলি করে হত্যা করে। জবানবন্দী শেষে আসামিপক্ষের আইনজীবী সাক্ষীকে জেরা করেন। পরবর্তী সাক্ষীর জন্য আজ সোমবার দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। চেয়ারম্যান বিচারপতি আনোয়ারুল হকের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ আদেশ প্রদান করেছেন। সাক্ষী জবানবন্দীতে বলেন, আমার নাম আব্দুল খালেক। বর্তমান বয়স আনুমানিক ৬১ বছর। আমার ঠিকানাÑ গ্রাম-সোনাপুর, থানা-সুধারামপুর, জেলা-নোয়াখালী। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় আমি নোয়াখালী সরকারী কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিলাম। বর্তমানে আমি ব্যবসা করি। একাত্তরে আমরা চার ভাই ও তিন বোন ছিলাম। ভাইদের মধ্যে আমি দ্বিতীয়। আমার বড় ভাই আব্দুর রব বাচ্চু নোয়াখালী সরকারী কলেজের বিকম পরীক্ষার্থী এবং ওই কলেজের ছাত্রলীগের নেতা ছিলেন। অন্য দুই ভাই তখন ছোট ছিল। মুক্তিযুদ্ধের সময় আমাদের সোনাপুর ও পার্শ্ববর্তী শ্রীপুর গ্রামের সাধারণ লোকজন আওয়ামী লীগের সমর্থক ছিলেন। তিনি জবানবন্দীতে বলেন, ১৯৭১ সালের ১৫ জুন দুপুর আনুমানিক দুইটা-আড়াইটার দিকে পাকিস্তান সেনাবাহিনী ও স্থানীয় রাজাকাররা আমাদের শ্রীপুর ও সোনাপুর গ্রামের আশপাশ এলাকায় আক্রমণ করে। স্থানীয় রাজাকারদের মধ্যে আসামি আবুল কালাম ওরফে এম মনসুর, মোঃ ইউসুফ, মোঃ জয়নাল আবেদীন, মোঃ আবুল কুদ্দুসসহ অন্যান্য রাজাকার। পাকিস্তানী আর্মি ও রাজাকাররা প্রথমে এসে মাইজদী ও সোনাপুর প্রধান রাস্তায় এসে আহমেদীয়া স্কুলের মোড়ে নামে। তারপর পাকি আর্মি ও রাজাকাররা তিন ভাগে বিভক্ত হয়ে উত্তর, দক্ষিণ ও পূর্বদিকে আক্রমণ করে। ওই গাড়ির সঙ্গে আসা একটি জীপ থেকে রাজাকারদের নেতা আবু সুফিয়ান (মৃত) ও পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর অফিসাররা নামে। তারা শলাপরামর্শ করার পর একজন পাকিস্তানী আর্মি একটি ফাঁকা গুলি করে। একই সময়ে তারা একটি ট্রাকে আক্রমণ করে ইয়াসিন ও আলী করিম ওরফে তোতা মিয়াকে গুলি করে হত্যা করে। ওই দিনের ঘটনায় পাকিস্তান আর্মি ও রাজাকাররা আমাদের গ্রামের আশপাশের প্রায় শতািধক লোককে গুলি করে হত্যা করে।
×