ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

জিনের আগুনের সেই রহস্যময় নারী মারা গেছেন

প্রকাশিত: ০৫:৪৪, ১৪ নভেম্বর ২০১৬

জিনের আগুনের সেই রহস্যময় নারী মারা গেছেন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ শত চেষ্টা করেও বাঁচানো যায়নি রহস্যজনকভাবে অগ্নিদগ্ধ শামীমা আক্তার রুনাকে। রবিবার সকালে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। বার্ন ইউনিটের আবাসিক চিকিৎসক ডাঃ পার্থ শঙ্কর পাল জানান, সকাল সাড়ে ৮টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শামীমার মৃত্যু হয়েছে। শামীমার শরীরের শ্বাসনালীসহ ৪৫ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল। কিভাবে তার শরীরে আগুন লেগেছে তা জানা যায়নি। যদিও শামীমা বার বারই বলছিল- জিনই তাকে আগুন লাগিয়েছে। পুলিশ রবিবার রাত পর্যন্ত শামীমার প্রকৃত পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারেনি। এ বিষয়ে ফতুল্লা থানা থেকেও কোন ধরনের তথ্য পাওয়া যায়নি। বিমানবন্দর ওসি নূরে আজম মিয়া বলেছেন, শামীমা মানসিক রোগী। হতে পারে শীতের রাতে বা ভোরে খোলা আকাশের নিচে আগুনের পাশে বসে শরীর গরম করতে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে। এ ঘটনার কোন প্রত্যক্ষদর্শী না পাওয়ায় সুস্পষ্ট কিছু বলা যাচ্ছে না। সবই অনুমাননির্ভর বলতে হচ্ছে। এদিকে শামীমার লাশের সন্ধানে রবিবার রাত পর্যন্ত কেউ এগিয়ে আসেনি। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের হিমঘরে পড়ে রয়েছে তার মরদেহ। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন থাকাবস্থায়ও কোন আত্মীয়স্বজন তাকে দেখতে যায়নি। হাসপাতালের চিকিৎসকরা তার কাছে নিকটাত্মীয়ের সন্ধান চাইলেও তিনি তা দিতে ব্যর্থ হন। এতে বিষয়টি আরও রহস্যজনক হয়ে ওঠে। এদিকে বিমানবন্দর থানা থেকে ফতল্লা থানায় মেসেজ পাঠানোর পরও কোন ধরনের তথ্য পাওয়া যায়নি। মৃত্যুর আগে হাসপাতালের কারও কাছে শামীমা নিজের প্রকৃত ঠিকানা দিতে পারেননি। এতে এ মামলার তদন্তেও জটিলতা দেখা দিতে পারে। তার নাম ঠিকানা পেলে আত্মীয়স্বজনের জবানবন্দী পাওয়া গেলে এ আগুনের প্রকৃত রহস্য উদঘাটন করা যেত। উল্লেখ্য, শামীমা নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার কাশিপুর এলাকায় থাকতেন। শামীমা নিজেই জানিয়েছেন- শুক্রবার রাত দুইটার সময় তার সঙ্গে থাকা বদ জিন তাকে বিমানবন্দর রেললাইন বালুর মাঠ এলাকায় নিয়ে আসে। সকাল সাড়ে ৭টার দিকে বিমানবন্দর গোলচত্বরে তার গায়ে আগুন লাগিয়ে পালিয়ে যায়। পরে দৌড়ে বিমানবন্দর পুলিশ ফাঁড়ির সামনে এসে পড়লে তাকে উদ্ধার করে বার্ন ইউনিটে ভর্তি করে। হাসপাতালের বেডে শুয়েও শামীমা বার বার বলেছেন- আমাকে জিনই আগুন লাগিয়েছে। লুনার বরাত দিয়ে এসআই বলেন, ‘দগ্ধ নারী জানিয়েছে তার গ্রামের বাড়ি নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার কাশিপুর এলাকায়। তার স্বামী মৃত আবুল কালাম আজাদ। তবে শামীমার বর্ণনা আমার কাছে রূপকথার গল্প মনে হয়েছে। তিনি বার বারই জানাচ্ছিলেন- তাকে লোহার জিন নারায়ণগঞ্জ থেকে ঢাকায় নিয়ে আসে। প্রথমে তাকে বিমানবন্দরের যাত্রী ছাউনিতে বসিয়ে রেখেছিল। এরপর র‌্যাবের নবনির্মিত ভবনের সীমানা প্রাচীরের কাছের একটি ঝোপের ভেতর নিয়ে শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়। তিনি আর কিছুই বলতে পারেন না। আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখেছি। আগুনের অস্তিত্ব রয়েছে। লুনার দেয়া ঠিকানা অনুযায়ী ফতুল্লা থানায় জানানো হয়েছে। তবে এখনও তার কোন স্বজন আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি।
×