ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

গ্যাব্রির হ্যাটট্রিকে উড়ছে জার্মানি

প্রকাশিত: ০৬:৪৬, ১৩ নভেম্বর ২০১৬

গ্যাব্রির হ্যাটট্রিকে উড়ছে জার্মানি

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ আন্তর্জাতিক ফুটবলের অভিষেকেই আলো ছড়ালেন সার্জ গ্যাব্রি। শুক্রবার বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচে সান মারিনোর বিপক্ষে দুর্দান্ত এক হ্যাটট্রিক করেন তিনি। সেইসঙ্গে তার দল জার্মানিও ৮-০ গোলের বড় ব্যবধানে হারায় খর্বশক্তির সান মারিনোকে। বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের হয়ে এদিন জোড়া গোল করেছেন জোনাস হেক্টর। এছাড়াও গোলের দেখা পেয়েছেন সামি খেদিরা ও কেভিন ভোল্যান্ড। বাকি গোলটি ছিল আত্মঘাতী। সান মারিনোর মাঠে গোল উৎসবের শুরুটা করেন সামি খেদিরা। ম্যাচ শুরুর সাত মিনিটেই তার গোলে এগিয়ে যায় বিশ্ব ফুটবলের বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। তার দুই মিনিট পর ক্যারিয়ারের প্রথম আন্তর্জাতিক গোল সার্জ গ্যাব্রি। সেই যে শুরু, এরপর ম্যাচের ৫৮ ও ৭৬ মিনিটে আরও দুই গোল করেন সাবেক আর্সেনালের প্রতিভাবান এই ফুটবলার। সেইসঙ্গে নিজের হ্যাটট্রিকও পূর্ণ করেন তিনি। শুধু তাই নয় অভিষেকে হ্যাটট্রিক করে নিজেকে নিয়ে গেলেন ইতিহাসে। ৪০ বছর পর জার্মানির জার্সিতে অভিষেকেই হ্যাটট্রিক করার রেকর্ড গড়লেন গ্যাব্রি। তার আগে ১৯৭৬ সালে জার্মানির জার্সিতে অভিষেকেই হ্যাটট্রিক করার রেকর্ড গড়েছিলেন দিয়েতার মুলার। গ্যাব্রির হ্যাটট্রিকের মাঝেই জোড়া গোল করেন জোনাস হেক্টর। ম্যাচের দুইঅর্ধে গোল দুটি করেন তিনি। প্রথমার্ধের ৩২ মিনিটে দলের তৃতীয় এবং ৬৫ মিনিটে জার্মানির পঞ্চম গোলটি করেন হেক্টর। তবে গোল উৎসব তখনও থামেনি জোয়াকিম লোর শিষ্যদের। ম্যাচের শেষ মুহূর্তে মাত্র তিন মিনিটের ব্যবধানে আরও দুই গোল খেয়ে বসে সান মারিনো। ৮২ মিনিটে আত্মঘাতী গোল করেন স্টেফানেল্লি। আর ৮৫ মিনিটে প্রতিপক্ষের জালে শেষ পেরেকটি ঠুকে দেন কেভিন ভোল্যান্ড। এর ফলে বড় জয়ের স্বাদ নিয়েই মাঠ ছাড়ে বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। বিশ্বকাপের বাছাইপর্বের সবগুলো ম্যাচেই জয়ের দেখা পেয়েছে জোয়াকিম লোর দল। যে কারণে সান মারিনোর বিপক্ষেও জয় পাবে তা আগে থেকেই নিশ্চিত ছিল জার্মানরা। কিন্তু প্রতিপক্ষের জালে কতগুলো গোল করতে পারবে বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা? ভক্ত-অনুরাগীরা তা দেখার জন্যই অপেক্ষায় ছিলেন। শেষ পর্যন্ত হতাশ করেননি সমর্থকদের। কোচ লোও বলেছেন তাদের পরিকল্পনা সঠিকভাবেই কাজে লেগেছে। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে লো বলেন, ‘আমরা চেয়েছিলাম যতগুলো সম্ভব তাদের জালে বল জড়াতে এবং তাদের দৌড়ের ওপর রাখতে। তা খুব ভালভাবেই কাজে লেগেছে।’ এক দশকের ক্যারিয়ারের এটা লোর ৯৫তম জয়। যা ১৪২টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ থেকে এসেছে। এর আগে কিংবদন্তি সেপ হারবার্গার ৯৪তম ম্যাচ জিতেছিলেন। পশ্চিম জার্মানিকে ১৯৫৪ বিশ্বকাপের শিরোপাও জিতিয়েছিলেন তিনি। ২০১৪ সালে জোয়াকিম লোও ব্রাজিল বিশ্বকাপের শিরোপা উপহার দেন জার্মানদের। সান মারিনোর বিপক্ষে দারুণ জয়ের পর লো প্রশংসা করেছেন হ্যাটট্রিকম্যান গ্যাব্রিকেও। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘গ্যাব্রি ওয়েরডারে এবং আমাদের সঙ্গে অনুশীলনে নিজেকে প্রদর্শন করেছেন। অভিষেক ম্যাচেও তার পারফর্মেন্সের ধারাবাহিকতা ধরে রেখেছেন।’ তবে ভাল ফর্মে থাকলেও নিজের প্রথম ম্যাচেই যে জার্মানিকে হ্যাটট্রিক উপহার দিবেন তা বিশ্বাস করতে পারছেন না গ্যাব্রি নিজেও। তাই তো ম্যাচ শেষে গ্যাব্রি বলেন, ‘হ্যাটট্রিক করে ফেলব তা বিশ্বাসই করতে পারছি না। তবে দলের জয়ে ভূমিকা রাখতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত। গত কয়েক মৌসুম আমার জন্য খুব কঠিন ছিল। তাই গোল পাওয়ার উচ্ছ্বাসটা অনেক বেশি। আশাকরি পারফর্মেন্সের এই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারব।’ সান মারিনোর বিপক্ষে জয়ের ফলে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে শতভাগ সফল দল জার্মানি। সেইসঙ্গে ‘সি’ গ্রুপের শীর্ষস্থানটাও আরও মজবুত হলো জোয়াকিম লোর দলের। চার ম্যাচ থেকে তাদের সংগ্রহ ১২ পয়েন্ট। সমান সংখ্যক ম্যাচ খেললেও দুইয়ে থাকা নর্দান আয়ারল্যান্ডের সংগ্রহে ৭ পয়েন্ট।
×