ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

ব্যাটিংয়ে অস্ট্রেলিয়ার লজ্জার দিন

প্রকাশিত: ০৬:৪৪, ১৩ নভেম্বর ২০১৬

ব্যাটিংয়ে অস্ট্রেলিয়ার লজ্জার দিন

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ক্রিকেট গৌরবময় অনিশ্চয়তার খেলা। ব্যাট-বলের লড়াইয়ে কোন রেকর্ডই সেখানে চিরস্থায়ী নয়। তবু মাঝে মধ্যে এমন সব ঘটনা ঘটে যা দেখলে চোখ কপালে উঠে যায়। মজার বিষয়, সেই কপালে চোখ উঠে যাওয়া রেকর্ডও একদিন ভেঙ্গে যায়। অস্ট্রেলিয়া বতর্মান বিশ্বচ্যাম্পিয়ন। তার ওপর প্রোটিয়াদের সঙ্গে এই সিরিজটা তারা খেলছে ঘরের মাটিতে। দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে প্রথম টেস্টে হারের পর ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যয় ঝরেছিল অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথের কণ্ঠে। কিন্তু অবর্ণনীয় ব্যর্থতায় হোবার্টে দ্বিতীয় টেস্টের প্রথমদিনেই নিজেদের লজ্জার রেকর্ডগুলো স্মরণ করিয়েছেন স্বাগতিক ব্যাটসম্যানরা। প্রথম ইনিংসে স্মিথরা অলআউট মাত্র ৮৫ রানে, ঘরের মাটিতে গত ৩২ বছরে এটিই অস্ট্রেলিয়ার সর্বনিম্ন রান (ওভারের হিসেবে)! পেসার ভারনন ফিল্যান্ডারের (৫/২১) ত্রাস বোলিংয়ের কোন উত্তরই খুঁজে পায়নি অসিরা। জবাবে ৫ উইকেট হারিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার সংগ্রহ ১৭১ রান। অর্থাৎ ৮৭.৫ ওভারে ১৫ উইকেটের পতন! ইনজুরির কারণে নেই স্ট্রাইক বোলার ডেল স্টেইন। সকালে টস জিতে ফিল্যান্ডারের হাতে বল তুলে দেন অতিথি অধিনায়ক ফ্যাফ ডুপ্লেসিস। তখনও কি তিনি ভেবেছিলেন তাদের সামনে এমন স্বপ্নের সময় অপেক্ষা করছে? প্রথম ওভারেই ইনফর্ম ডেভিড ওয়ার্নারকে (১) ফিরিয়ে তা-বের শুরুটা করেন ফিল্যান্ডার। পরের ওভারেই জো বার্নসকে (১) তুলে নেন কাইল এ্যাবট। নবম ওভারে উসমান খাজাকে (৪) প্যাভিলিয়নের পথ ধরান ফিল্যান্ডার। পরের বলেই এ্যাডাম ভোজেসকে (০) তুলে নিয়ে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনাও জাগিয়েছিলেন তিনি। কলাম ফার্গুসনের দৃঢ়তায় সেটি হয়নি। তবে দলীয় ৮ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে কার্যত দিশেহারা হয়ে পড়ে অস্ট্রেলিয়া। স্মিথ একপ্রান্তে দাঁড়িয়ে অসহায় চোখে কেবল সতীর্থদের আসা-যাওয়াই দেখেছেন। ২১তম ওভারে প্রোটিয়াদের প্রথম টেস্টের জয়ের নায়ক কাগিসো রাবাদা যখন পিটার নেভিলকে (৩) এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন ৩১ রানে ৬ উইকেট নেই অস্ট্রেলিয়ার! সপ্তম উইকেটে স্মিথ-জো মিনের ২৮ রানই জুটিতে সর্বোচ্চ! শেষ পর্যন্ত ৮০ বলে ৫ চারের সাহায্যে অপরাজিত ৪৮ রান করে অস্ট্রেলিয়াকে আরও বড় লজ্জা থেকে বাঁচিয়েছেন স্মিথ। মিনে ১০। বাকি ব্যাটসম্যানদের স্কোর দেখলে মোবাইল ডিজিট বলে ভ্রম হবেÑ ১, ১, ৪, ০, ৩, ৩, ৪, ৮ ও ২! ফিল্যান্ডারের বোলিং ফিগার ১০.১-৫-২১-৫, এ্যাবট ১২.৪-৩-৪১-৩। জবাবে মিচেল স্টার্কের তা-বে (৩/৪৯) দ. আফ্রিকাও স্বস্তিতে ছিল না। ৪৬ রানে তৃতীয় ও ৭৬ রানে চতুর্থ উইকেট হারায় তারা। দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান টেম্বা বাভুমা (৩৮*) ও কুইন্টন ডি’ককের (২৮*) দৃঢ়তায় শেষ পর্যন্ত ৮৬ রানে এগিয়ে সফরকারীরা। ৮৫/১০ (৩২.৫ ওভার)Ñ ঘরের মাটিতে অস্ট্রেলিয়ার ১১তম সর্বনিম্ন রানের স্কোর যা দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সর্বনিম্ন। এর আগে ১৯৮৪ সালে পার্থে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৭৪ রানে (৩১.২ ওভার) অলআউট হয়েছিল অসিরা। সর্বোপরি তাদের সর্বনিম্ন ৪২ রানের রেকর্ডটা অবশ্য ১৮৮৮ সালে সিডনিতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। স্কোর ॥ অস্ট্রেলিয়া প্রথম ইনিংস ৮৫/১০ (৩২.৫ ওভার; স্মিথ ৪৮*, জো মিনে ১০, ওয়ার্নার ১, বার্নাস ১, খাজা ৪, ভোজেস ০, ফার্গুসন ৩, নেভিল ৩, মিলনে ১০, স্টার্ক ৪, হ্যাজলউড ৮, লেয়ন ২; ফিল্যান্ডার ৫/২১, এ্যাবট ৩/৪১, রাবাদা ১/২০) দক্ষিণ আফ্রিকা প্রথম ইনিংস ১৭১/৫ (৫৫ ওভার; আমলা ৪৭, বাভুমা ৩৮*, ডি’কক ২৮*, স্টিফেন কুক ২৩, এলগার ১৭, ডুমিনি ১, ডুপ্লেসিস ৭; স্টার্ক ৩/৪৯, হ্যাজলউড ২/৩৬) ** প্রথমদিন শেষে
×