ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

তিন উইকেট নিয়ে জেতালেন খুলনাকে, ৪ রানে হার চিটাগাংয়ের

আবারও শেষ ওভারে মাহমুদুল্লাহ ম্যাজিক

প্রকাশিত: ০৬:৪৪, ১৩ নভেম্বর ২০১৬

আবারও শেষ ওভারে মাহমুদুল্লাহ ম্যাজিক

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ কি অসাধারণ বোলিং। টান টান উত্তেজনার ম্যাচে রাজশাহীর বিপক্ষে শেষ ওভারে ৩ উইকেট নিয়ে যেভাবে ম্যাচ জিতিয়েছিলেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, ঠিক তেমনি চিটাগাং ভাইকিংসের বিপক্ষেও একই রকম বোলিং করে শেষ ওভারে ৩ উইকেট নিয়ে খুলনা টাইটান্সকে জিতিয়ে দেন মাহমুদুল্লাহ। এবার চিটাগাংকে ৪ রানে হারায় খুলনা। খুলনার করা ১২৭ রান অতিক্রম করতে গিয়ে ১২৩ রান করতে পারে চিটাগাং। তাতে করে তিন ম্যাচের মধ্যে চিটাগাংয়ের টানা দ্বিতীয় হার হয়। আর খুলনা তিন ম্যাচের মধ্যে দুই ম্যাচে জয় তুলে নেয়। খুলনার ছুড়ে দেয়া ১২৮ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে ৯ রানেই তামিমকে হারায় চিটাগাং। ২০ রান হতেই ডোয়াইন স্মিথও সাজঘরে ফেরেন। দুটি উইকেটই নেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের কেভন কুপার। অথচ এ বোলারকেই প্রথম দুই ম্যাচে খেলায়নি খুলনা। বিপিএলের চতুর্থ আসর শুরু হওয়ার আগ পর্যন্ত কুপারই সর্বোচ্চ উইকেট (৪৯ উইকেট) শিকারি ছিলেন। আগেরদিন সাকিব (৫০ উইকেট) কুপারকে টপকে যান। শনিবার স্মিথকে আউট করতেই আবার সাকিবকে পেছনে ফেলেন কুপার (৫১ উইকেট)। ১০ রান যোগ হতেই শোয়েব মালিককে এলবিডাব্লিউ করে দেন শফিউল। চিটাগাং বিপাকে পড়ে যায়। ৩৩ রান হতেই বিজয়কেও যখন এলবিডাব্লিউ করে দেন শফিউল, খেলা খুলনার নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। চিটাগাংয়ের স্কোরবোর্ডে ৫৪ রান যোগ হতেই জাকির হাসানকেও আউট করে দেন শফিউল। কি দুর্দান্ত বোলিংই না করতে থাকেন। হারের মুখেই পড়ে যায় চিটাগাং। এরমধ্যে আবার ফিল্ডিং মিস, রান আউট মিসগুলো শঙ্কাও জাগাতে থাকে। আবার জহুরুল ইসলাম অমি ও মোহাম্মদ নবী মিলে যে বড় জুটি গড়ার ইঙ্গিত দেন, সেখানেও চিটাগাং ভরসা পায়। দল ৭৮ রানে যেতেই অমিকে (২৫) আউট করে দেন শফিউল। ২৪ রানের চেয়ে বড় জুটি হতে দেননি। ৪ উইকেটও নেন শফিউল। ১৮ বলে জিততে ২৯ রান লাগে। মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের করা ১৮তম ওভারে শ্রীলঙ্কান চতুরঙ্গ ডি সিলভার দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে ১২ রান আসে। তাতে করে ১২ বলে জিততে ১৭ রান লাগে। পাকিস্তান পেসার জুনায়েদ খানের করা ১৯তম ওভারের প্রথম বলেই ছক্কা হাঁকান নবী। ওভারটিতে ১১ রান আসায় জয়ের একেবারে দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যায় চিটাগাং। ৬ বলে জিততে ৬ রান লাগে। মাহমুদুল্লাহ এবারও শেষ ওভারে বল করতে আসেন। ঠিক যেমনটি রাজশাহীর বিপক্ষে এসেছিলেন। শেষ ওভারেই ৩ উইকেট নিয়ে খুলনাকে জিতিয়েছিলেন। এবার চিটাগাংয়ের বিপক্ষেও শেষ ওভারের দ্বিতীয় বলে সিলভাকে (১৪ বলে ১৯) আউট করে সেইরকম কিছুরই ইঙ্গিত দেন। ৩ বলে ১ রান দিয়ে ১ উইকেটও নেন মাহমুদুল্লাহ। ৩ বলে জিততে লাগে ৫ রান। চতুর্থ বলে রাজ্জাককেও আউট করে দেন মাহমুদুল্লাহ। ২ বলে দরকার লাগে ৫ রান। পঞ্চম বলে কোন রান হয়নি। ১ বলে লাগে ৫ রান। নবীকেও (৩৯) আউট করে দিয়ে ম্যাচ জিতিয়ে দেন মাহমুদুল্লাহ। খুলনার দুই ওপেনার ইংল্যান্ডের রিকি ওয়েসেলস ও মোহাম্মদ হাসানুজ্জামান ভালই ব্যাটিং করছিলেন। ৩৪ রান পর্যন্ত দুইজন এগিয়ে যান। এমন সময় এসে আফগানিস্তান স্পিনার নবীর বলে ডিপ মিডউইকেট দিয়ে বাউন্ডারি হাঁকাতে যান একবার ‘নতুন জীবন’ পাওয়া হাসান। ঠিকমতো ‘ব্যাটে-বলে’ হয়নি। আর তাই ক্যাচ আউট হয়ে যান টি২০তে অনভিজ্ঞ হাসান। এরপর মুহূর্তেই আরও ২টি উইকেটের পতন ঘটে যায়। স্কোরবোর্ডে আর ৮ রান যোগ হতেই নবীর বলে শুভাগত ও আব্দুর রাজ্জাকের বলে ওয়েসেলস (২৮) আউট হয়ে সাজঘরে ফেরেন। ৪২ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে যায় খুলনা। সেখান থেকে ৫২ রানে যেতেই নেই ৪ উইকেট। তাসকিনের বলে দুর্দান্ত ক্যাচ ধরে মাহমুদুল্লাহকে সাজঘরে ফেরান তামিম। আগের ম্যাচেই ৪৪ রানে অলআউট হওয়ার লজ্জা এড়ায় খুলনা। তবে অল্প রানেই গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কা তখনও থাকে। পঞ্চম উইকেটেই খানিক ঘুরে দাঁড়ায় দলটি। অলক কাপালী ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের নিকোলাস পুরান মিলে ২৫ রানের জুটি গড়ে দলকে কিছুটা এগিয়ে দেন। ৭৭ রানে গিয়ে নবীর বলে ক্যাচ আউট হয়ে যান কাপালী (২৩)। ষষ্ঠ উইকেটে গিয়ে যখন নিকোলাস ও আরিফুল মিলে বড় জুটি গড়েন, তখন দলের স্কোরবোর্ডে ১০০ রানও জমা হয়; দল ১৯ ওভারে ১১৬ রানেও পৌঁছে যায়। শেষ ওভারের প্রথম দুই বলে একটি ছক্কাসহ ৮ রানও নিয়ে নেন নিকোলাস। ১২৫ রানেও চলে যায় দল। তৃতীয় বলে গিয়ে ভুলবোঝাবুঝিতে ১ রান নিয়ে আরেক রান নিতে গিয়েই রান আউট হয়ে যান নিকোলাস (২৯)। দুইজনের ৪৮ রানের জুটি হয়। এ জুটিই খুলনাকে অনেক দূর নিয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত আরিফুল হক ২৫ রানে অপরাজিত থাকেন। দলও ৭ উইকেট হারিয়ে ২০ ওভারে ১২৭ রান করে। মোহাম্মদ নবী ৩ উইকেট নেন। এত কম রানে খুলনাকে আটকে দিয়েও ম্যাচ জিততে পারেনি চিটাগাং। জিতবে কি করে। মাহমুদুল্লাহ যে আবারও শেষ ওভারে স্পিন ভেল্কি দেখান। খুলনাকে আবারও জেতান।
×