ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

জাপানী কোম্পানিগুলো ভারতকে দেবে পরমাণু প্রযুক্তি

জ্বালানি এবং সামরিক সম্পর্ক জোরদারে একমত আবে ও মোদি

প্রকাশিত: ০৬:১০, ১৩ নভেম্বর ২০১৬

জ্বালানি এবং সামরিক সম্পর্ক জোরদারে  একমত আবে ও মোদি

জাপান ও ভারত তাদের অর্থনৈতিক, জ্বালানি ও প্রতিরক্ষা সম্পর্ক জোরদার করতে শুক্রবার একমত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র এশিয়ায় অবাধ বাণিজ্য ও স্থিতিশীলতার গ্যারান্টিদাতার ভূমিকা থেকে সরে যেতে পারেÑপ্রেসিডেন্ট পদে ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচন এরূপ উদ্বেগ সৃষ্টি করার প্রেক্ষাপটে ঐ মতৈক্য প্রতিষ্ঠিত হলো। খবর এএফপি ও ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের। টোকিওতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের মধ্যে বৈঠকের পর দু’পক্ষ ঐ মতৈক্যের কথা জানায়। তারা ভারতের কাছে জাপানের পারমাণবিক ও দ্রুতগতিতে রেল চলাচলের প্রযুক্তি রফতানি করা, ভারতীয় নৌবাহিনীর কাছে উভচর উদ্ধার বিমান বিক্রির বিষয়ে আলোচনা ত্বরান্বিত করা এবং আগামী ১০ বছরে ৩০ হাজার ভারতীয়ের জন্য প্রশিক্ষণ কর্মসূচী তৈরি করার বিষয়ে একমত হয়। আবের সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে মোদি বলেন, বেসামরিক পরমাণু চুক্তি আমাদের সম্পর্কের গভীরতার স্বাক্ষর। শুক্রবার স্বাক্ষরিত এ বিতর্কিত চুক্তির আওতায় জাপানী কোম্পানিগুলোকে ভারতের কাছে পরমাণু প্রযুক্তি রফতানি করার অনুমতি দেয়া হয়। জাপান এই প্রথম এমন একটি দেশের সঙ্গে এরূপ চুক্তি করল, যা পরমাণু অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তি (এনপিটি) সই করেননি। এনপিটিতে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচ স্থায়ী সদস্য ছাড়া অন্যান্য দেশের জন্য পরমাণু অস্ত্র তৈরি ও মজুদ করা নিষিদ্ধ করে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষ সময়ে মার্কিন আণবিক বোমাবর্ষণের শিকার জাপান এনপিটি ইস্যুকে কেন্দ্র করে জ্বালানি সঙ্কটগ্রস্ত ভারতের সঙ্গে বেসামরিক পরমাণু সহযোগিতা দীর্ঘদিন ধরে এড়িয়ে চলেছিল। কিন্তু আকর্ষণীয় চুক্তির জন্য জাপানের প্রতিযোগী হওয়া এবং এ অঞ্চলে চীনের সম্প্রসারমাণ অর্থনৈতিক ও সামরিক উপস্থিতির মুখে নয়াদিল্লীর সঙ্গে জাপানের সামরিক সহযোগিতা জোরদার করার প্রেক্ষাপটে টোকিও এর অবস্থান নমনীয় করে। আবে সাংবাদিকদের বলেন, ভারত যাতে পরমাণু জ্বালানির শান্তিপূর্ণ ব্যবহারের জন্য দায়িত্বশীলতার সঙ্গে কাজ করে, চুক্তিটি তা নিশ্চিত করার এক আইনগত কাঠামো। এক জাপানী কর্মকর্তা সাংবাদিকদের বলেন, ভারত পরমাণু পরীক্ষা আবার শুরু করলে জাপান সেই সহযোগিতা বন্ধ করে দিতে পারে বলে দুটি দেশ একমত হয়েছে। পরমাণু জ্বালানি চুক্তিটি ২০১৫ সালের প্যারিস জলবায়ু চুক্তির অধীনে গ্রীন হাউস গ্যাস নিগর্মন হ্রাস করার প্রতিশ্রুতি পালনে ভারতকে সহায়তা করবে। চীনের অর্থনৈতিক ও সামরিক শক্তি প্রদর্শন মোকাবেলা করতে আবে মোদির মিত্রতাকে বরণ করে নিচ্ছেন। আবে বলেন, এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল এবং বিশ্বকে শান্তি ও সমৃদ্ধির পথে নিয়ে যেতে জাপান ও ভারতের এক সঙ্গে কাজ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলতে আবে পরমাণু চুক্তির প্রতি অভ্যন্তরীণ বিরোধিতা উপেক্ষা করে যান। এ চুক্তির ফলে পরমাণু অস্ত্র বিস্তার রোধ করার বিষয়ে জাপানের প্রতিশ্রুতি ক্ষুণœ হবে বলে সমালোচকরা করা মন্তব্য করেন।
×