ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

টিউমার অপারেশনের নামে স্থায়ী বন্ধ্যা ॥ মামলা

প্রকাশিত: ০৫:৫১, ১৩ নভেম্বর ২০১৬

টিউমার অপারেশনের নামে স্থায়ী বন্ধ্যা ॥ মামলা

স্টাফ রিপোর্টার, গলাচিপা ॥ চোখের টিউমার অপারেশনের নামে অসীম চন্দ্র শীলের স্থায়ী বন্ধ্যাকরণের এনএসভি অপারেশন করা হয়েছে। এলাকার দায়িত্বরত পরিবার কল্যাণ সহকারী পপি আক্তার স্থানীয় দালালের মাধ্যমে এ অপকর্ম করেছে। এ ঘটনায় অসীম চন্দ্র শীলের স্ত্রী পুতুল রানী পরিবার কল্যাণ সহকারীসহ দু’জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। মামলার সূত্র ধরে সরেজমিন অনুসন্ধানেও ঘটনার সত্যতা মিলেছে। অভিযোগ উঠেছে, পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের একশ্রেণীর মাঠকর্মী টার্গেট পূরণের নামে এভাবে নারী-পুরুষ বা পরিবারের কারও অনুমতি না নিয়ে গ্রামের সহজ-সরল লোকজনদের প্রতারণার মাধ্যমে স্থায়ী বন্ধ্যাকরণের অপারেশন করে। পরবর্তীতে এ নিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েও ক্ষতিগ্রস্তরা কোন সুফল পায় না। জানা গেছে, গজালিয়া ইউনিয়নের এক নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা অসীম চন্দ্র শীল জন্ম থেকেই শ্রবণ ও বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী। তার তিন ছেলেমেয়ে। তার চোখের ওপরে একটি টিউমার রয়েছে। গত ২৯ অক্টোবর শনিবার অসীম চন্দ্র শীল সুপারি বিক্রির জন্য গ্রামের বাড়ি থেকে গলাচিপা শহরে আসেন। পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের মাঠকর্মীদের দালাল হিসেবে পরিচিত একই এলাকার মিলন চৌকিদার চোখের ওপরের টিউমার অপারেশনের প্রলোভন দেখিয়ে অসীম চন্দ্র শীলকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায় এবং পরিবার কল্যাণ সহকারী পপি আক্তারের মাধ্যমে সেখানে অজ্ঞান করে স্থায়ী বন্ধ্যাকরণের এনএসভি অপারেশন করিয়ে দেয়। জ্ঞান ফিরে পাওয়ার পর অসীম চন্দ্র শীল অসুস্থ অবস্থায় স্থানীয় কয়েকজনের সহায়তায় স্ত্রীর কাছে ফোন করেন এবং এরপরই ঘটনা জানাজানি হয়। এ ঘটনায় অসীম চন্দ্র শীলের স্ত্রী পুতুল রানী গত ৭ নবেম্বর সোমবার পপি আক্তার ও মিলন চৌকিদারকে আসামি করে গলাচিপা উপজেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন। আদালত গলাচিপা থানার অফিসার ইনচার্জকে ঘটনা তদন্ত করে প্রতিবেদন দেয়ার আদেশ দিয়েছেন। স্থায়ী বন্ধ্যাকরণের জন্য দুই হাজার এবং যিনি রোগী নিয়ে আসে তাকে পাঁচ শ’ টাকা করে দেয়া হয়। এক্ষেত্রে অসীম চন্দ্র শীলকে টাকাও দেয়া হয়নি। অভিযোগের বিষয়ে পপি আক্তারের মোবাইল ফোনে বার বার চেষ্টা করেও কথা বলা যায়নি। তবে দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা ইসরাত জাহান ওইদিন অসীম চন্দ্র শীলসহ মোট পাঁচজনের স্থায়ী বন্ধ্যাকরণ অপারেশনের সত্যতা স্বীকার করে জানান, অসীম চন্দ্র শীল স্বেচ্ছায় অপারেশন করেছেন এবং কাগজপত্রে স্বাক্ষর করেছেন। অভিযোগকারী পুতুল রানী জানিয়েছেন, তার স্বামী শ্রবণ ও বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী হওয়ার সুযোগ নেয়া হয়েছে।
×