ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

মোস্তাফা জব্বার

বাংলাদেশ ভাষারাষ্ট্র ধর্মরাষ্ট্র নয়

প্রকাশিত: ০৫:৪৯, ১৩ নভেম্বর ২০১৬

বাংলাদেশ ভাষারাষ্ট্র  ধর্মরাষ্ট্র নয়

বাংলাদেশ কেমন রাষ্ট্র? এর জাতিসত্তা কি? কিসের ভিত্তিতে গড়ে উঠেছে এই রাষ্ট্রের জাতীয়তা? আমরা কি রাগ করে দুই ভাই আলাদা হওয়ার জন্য পাকিস্তান ভাংলাম? মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ কি ছিল? স্বাধীনতার এত বছর পর এসব প্রশ্ন ওঠারই কথা নয়। এসব প্রশ্নের জবাব আমাদের জানা থাকার কথা। কিন্তু আমরা কি জানি? আমাদের আচরণ কি স্পষ্ট করে জানিয়ে দেয় যে, আমরা একটি সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র নই। সংবিধানে এরশাদের প্রবর্তন করা রাষ্ট্রধর্ম বহাল থাকা সত্ত্বেও রাষ্ট্রটির সংবিধানের মূলনীতি ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানলে এটি জানার কথা যে, বাংলাদেশ একটি ভাষাভিত্তিক, অসাম্প্রদায়িক, শোষণহীন, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। দেশের তাবত নাগরিককুলের জানার কথা, এই রাষ্ট্রের ভিত্তিটা ধর্ম নয়। বরং মনে রাখা দরকার যে পাকিস্তান নামক একটি ধর্মরাষ্ট্রকে লাথি মেরে ভেঙ্গে আমরা বাংলা ভাষাভিত্তিক বিশ্বের প্রথম ও একমাত্র স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র গঠন করেছি। আমাদের যদি একটি ধর্মরাষ্ট্রের প্রয়োজন থাকত তবে আমরা পূর্ব পাকিস্তানের মুসলমানরা পাকিস্তানেই খুশি থাকতাম। অন্যদিকে পূর্ব পাকিস্তানে হিন্দুর বসবাস করার কোন যৌক্তিক কারণ ছিল না। মুসলমানের পূর্ব পাকিস্তানে হিন্দুর থাকার কি অধিকার ছিল? আমরা একাত্তরে এটি লক্ষ্য করেছি যে বাঙালীরা হিন্দু হিসেবে নির্যাতিত হয়েছে। এর বহু আগেই পাকিস্তানীরা যখন বাঙালীর ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতির ওপর নগ্নভাবে হামলা করে, আমাদের মুখের ভাষা উর্দু করতে চায় ও নিজেদের হাজার বছরের সংস্কৃতিকে ধ্বংস করতে চায়, তখন আমরা আমাদের ভাষা-সংস্কৃতিভিত্তিক বাঙালী জাতীয়তা গড়ে তুলেছি। আমরা বাঙালীরা হিন্দু-মুসলমান দ্বিজাতিতত্ত্ব না মেনে এই অঞ্চলের প্রথম ভাষাভিত্তিক রাষ্ট্র গড়ার স্বপ্ন দেখি। শতকরা প্রায় ৯০ ভাগ মানুষের এই দেশে ধর্মরাষ্ট্র থেকে বের হয়ে এসে ভাষাভিত্তিক একটি রাষ্ট্র গড়ে তোলার লড়াইটা দুঃসাহসী পদক্ষেপ ছিল। কিন্তু আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে পাকিস্তান আমলেই আওয়ামী মুসলিম লীগকে শুধু আওয়ামী লীগ করেছি। এরপর বাঙালীর ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতি নিয়ে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে লড়াই করেছি। সেই লড়াইয়ের চূড়ান্ত পর্যায়ে আমরা সশস্ত্র যুদ্ধ করে জিতে বাঙালীদের রাষ্ট্র বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেছি। আমাদের সংবিধান বলছে বাংলাদেশ একটি জাতীয়তাবাদী, গণতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। এর জন্মকালীন নীতিমালায় সমাজতন্ত্রও ছিল। ৭২ সালের সংবিধান অত্যন্ত স্পষ্টভাবে দেশের সকল নাগরিককে বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে এবং কে হিন্দু, কে মুসলমান বা কে বৌদ্ধ-খ্রীস্টান তার কোন বাছ-বিচার করেনি। কিন্তু পঁচাত্তরে জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যা করার পর জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের চাকাকে পাকিস্তানের দিকে ঘুরিয়ে দেন এবং এরশাদ কফিনের শেষ পেরেক হিসেবে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানে যুক্ত করেন। এর প্রথম ব্যতিক্রম হয় ১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনা যখন তাঁর প্রথম সরকার গঠন করেন। তিনি পাকিস্তানমুখী চাকাটিকে বাংলাদেশের দিকে ঘুরিয়ে দেন। কিন্তু ২০০১ সালে সেই চাকাকে আবার উল্টে ফেলা হয়। তবে ২০০৮-এর নির্বাচনের পর বাংলাদেশ তার জন্মকালীন পরিচয়ে ফিরে যেতে শুরু করে। এরপর থেকে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও ফাঁসি পাকিস্তানপন্থীদের অস্তিত্ব বিপন্ন করে তুলে। সেজন্য জামায়াতের ইচ্ছায় বিএনপিসহ পাকিস্তানপন্থী রাজনৈতিক দলগুলো ধর্ম ও সাম্প্রদায়িকতাকে নানাভাবে রাষ্ট্রের অস্তিত্ব বিপন্ন করার জন্য ব্যবহার করতে থাকে। সাম্প্রতিক সময়ে তাদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদে সন্ত্রাস, জঙ্গীবাদ ও রাষ্ট্রবিরোধী কাজ বাড়তেই থাকে। সুখের বিষয় হচ্ছে বছরের পর বছর পরিচালিত সেই সন্ত্রাস, জঙ্গীবাদ ও সাম্প্রদায়িকতা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এই দেশের মানুষ মোকাবেলা করে আসছে। মাঝে মধ্যে হলি আর্টিজানের মতো হামলা হলেও মোটামুটি এক ধরনের স্থিতিশীলতার মাঝে আমরা বসবাস করছিলাম। চারপাশে জীবনের চিত্র স্বাভাবিকই ছিল। বিদেশী ক্রিকেট টিম পর্যন্ত বাংলাদেশে খেলে গিয়ে প্রমাণ করেছে যে আমরা অশান্তিেেত নেই। এমন একটি স্থিতিশীল অবস্থায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলা সদরে শত শত হিন্দুর বাড়িঘর লুটপাট হয়, হামলা হয়, অগ্নিসংযোগ হয় এবং মন্দিরও ভাঙ্গা হয়। এর কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াও ঘটে। দেশের নানা স্থানে বিচ্ছিন্নভাবে আগুন দেয়ার চেষ্টা বা মূর্তি ভাঙ্গার চেষ্টাও হয়। সেই সব ঘটনা বিশাল আকৃতি ধারণ করতে না পারলেও আমরা নাসিরনগরের ঘটনাটিকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিতে পারি না। আমাদের জন্য এই ঘটনাটি নানাভাবে গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমত, এই ঘটনাটি ঘটেছে একটি ডিজিটাল প্রযুক্তিকে ঘিরে। নাসিরনগরের রসরাজ নামক এক জেলে কাবা শরীফের ছবির ওপর শিবের মূর্তি বসিয়ে একটি ছবি বানিয়ে তার ফেসবুক পেজে পোস্ট দেয়ার অভিযোগ ওঠে। নাসিরনগরের ফারুক নামক এক লোক সেটিকে সাধারণ মানুষের কাছে প্রচার করে এবং পুলিশ তাকে তাৎক্ষণিকভাবে গ্রেফতার করে। আমি বিস্মিত হয়েছি এটি দেখে যে পুলিশ সঙ্গে সঙ্গে কোন ধরনের যাচাই-বাছাই না করে রসরাজকে গ্রেফতার করে এবং তাকে রিমান্ডেও নেয়া হয় কেন? আমি ছবিটি দেখেছি। ছবিটি এতই নিখুঁতভাবে তৈরি করা যে পঞ্চম শ্রেণী পাস করা কোন জেলের পক্ষে ফটোশপে সেটি তৈরি করা অসম্ভব, পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করা একজন যুবকের ফেসবুক পেজ খোলা, ব্যবহার করা ও তাতে সাম্প্রদায়িক চিত্র আপলোড করার বিষয়টি আগে খতিয়ে দেখে পরে তাকে গ্রেফতার করা যেত। সেসব বিষয়গুলো তলিয়ে না দেখে রসরাজকে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নিয়ে বস্তুত প্রাথমিকভাবে সাম্প্রদায়িকতাকেই উস্কে দেয়া হয়। আমরা আরও লক্ষ্য করলাম যে প্রশাসন এরপর একটি উগ্রবাদী একটি সাম্প্রদায়িক দলকে রসরাজের ঘটনার বিরুদ্ধে সমাবেশ করতে দেয় এবং সেই সভাতে সরকারী দলের স্থানীয় নেতৃবৃন্দসহ প্রশাসনের লোকেরাও যোগ দেয়। আরও অবাক করার বিষয় ছিল যে, প্রশাসনের নাকের ডগায় সেই সমাবেশের লোকজন মিছিল করে নাসিরনগরের শত শত বাড়ি ভাঙ্গে, আগুন লাগায়, লুটপাট করে, মারধর করে এবং আমরা একাত্তরে যে ধরনের নৃশংসতা দেখেছি তার মতোই ভয়াবহতম ঘটনা ঘটে। আমাদের উদ্বিগ্ন হওয়ার দ্বিতীয় ঘটনাটি হচ্ছে সরকারী দলের রাজনীতিকদের সম্পৃক্ততা। দুশ্চিন্তার বিষয় হচ্ছে ভাষাভিত্তিক রাষ্ট্রের জন্মদাতা আওয়ামী লীগের স্থানীয় কিছু নেতা এমন একটি সাম্প্রদায়িক কাজে লিপ্ত হয়েছে। এর ফলে সরকারী দলটির মাঝে পাকিস্তানপন্থীদের ঘাপটি মেরে বসে থাকার বিষয়টি আশঙ্কায় পরিণত হয়েছে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে এই ঘটনায় শাসক দলের স্থানীয় সাংসদ পুরো বিষয়টিকে গুরুত্বহীনভাবে নিয়েছেন বলে প্রতীয়মান হয়েছে। আমার কাছে মনে হয়েছে এর সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে শম্বুকের গতি গ্রহণ করা হয়েছে। ঘটনাটির গুরুত্ব যথাযথভাবে যথাসময়ে অনুধাবন করা হয়নি এবং এর কুফল হিসেবে দেশজুড়ে আরও কিছু ঘটনা ঘটতে পারে সেটিও ভাবা হয়নি। আমাদের তৃতীয় উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে সাম্প্রদায়িকতা ছড়ানোর জন্য ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার নিয়ে। আমাদের স্মরণে থাকা দরকার যে, এর আগে রামুতে ফেসবুক নিয়ে এমন ঘটনা ঘটেছে। বগুড়ায় সাঈদীকে চাঁদে দেখার ঘটনাও ফেসবুকেরই প্রভাব। এছাড়াও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিয়ে ফেসবুক ও অন্যান্য ডিজিটাল মাধ্যমে অপপ্রচার চরম উদ্বেগের কারণ হয়ে বিরাজ করছে। নাসিরনগরের ঘটনায় কতটা অপ্রিয় সত্য দেশবাসীর সামনে উঠে এসেছে। ক. বাংলাদেশের সকল মানুষ দেশটির অস্তিত্বের আদর্শ বা অসাম্প্রদায়িকতায় বিশ্বাস করে না। ’৭০-এর নির্বাচনে এবং তার পরের বছরগুলোতে বাংলাদেশে পাকিস্তানী ধর্মরাষ্ট্রের আদর্শকে লালন করে। রামু ও নাসিরনগরের ঘটনায় উদ্বেগজনকভাবে আওয়ামী লীগের নেতাদের সাম্প্রদায়িকতায় লিপ্ত হতে দেখা গেছে। এতে বোঝা যায় যে আওয়ামী লীগের এই নেতারা বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাস না করেই আওয়ামী লীগার হয়েছে। তারা পাকিস্তানপন্থী অনুপ্রবেশকারীও হতে পারে। শাসক দল হিসেবে আওয়ামী লীগের একটি বড় চ্যালেঞ্জ হবে তার সকল নেতাকর্মীকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে স্থিরভাবে অনুপ্রাণিত করা। পাকিস্তানের আদর্শ মগজে রেখে আর যাই হোক আওয়ামী লীগ করা যাবে না। পাকিস্তানের আদর্শ দেশের প্রশাসনেও রয়েছে বলে নাসিরনগরের ঘটনায় ওসি এবং ইউএনও নিজেরাও সাম্প্রদায়িকতায় যুক্ত হয়ে গেছেন যা আমাদের সংবিধানের লঙ্ঘন ও সরকারী চাকুরের জন্য দ-নীয় অপরাধ। আমার কাছে মনে হয়েছে স্থানীয় সাংসদ একটি নিরপেক্ষ অবস্থান গ্রহণ করার বদলে সাম্প্রদায়িকতার দায়ে নিজেই অভিযুক্ত হয়ে পড়েছেন। ঘটনাটি এমন হতে পারে যে, স্থানীয় সাংসদ যথাযথ ভূমিকা পালন না করায় আওয়ামী লীগের ইউনিয়ন স্তরের নেতৃবৃন্দ ও প্রশাসন ভুল পথে পা দিয়েছেন। এখানে ভোটের রাজনীতি বা স্থানীয় দলীয় কোন্দল যুক্ত থাকতে পারে। অন্যদিকে ঘটনাটি এমন হতে পারে যে কোন একটি গোষ্ঠীর দুর্বলতার সুযোগ নেয়া হয়েছে। তবে ঘটনা যাই হোক না কেন নাসিরনগরের ঘটনায় আমাদের জাতীয় ক্ষতির পরিমাণ অনেক বেশি। এর আগে রামু-বগুড়ার ঘটনার পাশাপাশি দিনাজপুরের সাঁওতালদের ওপর গুলিবর্ষণও পুরো জাতিকে ভুল সঙ্কেত দিচ্ছে। সেখানেও স্থানীয় সাংসদ ও প্রশাসনের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। আওয়ামী লীগ বরাবরই জনগণের পক্ষে অবস্থান গ্রহণ করে। কিন্তু দিনাজপুরে সেই দলের সাংসদ গুলিবর্ষণের পরও জনগণের পক্ষে দাঁড়াতে পারেননি। আমরা শঙ্কিত হচ্ছি ডিজিটাল প্রযুক্তির অপব্যবহার নিয়ে। ফেসবুক ব্যবহার করে যেমনি আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী-সাংসদসহ কিছু মানুষকে বিভ্রান্ত করা গেছে, তেমনি প্রশাসনকেও বিভ্রান্ত করা গেছে। অন্যদিকে আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী প্রমাণ করেছে যে, ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে যেসব অপরাধ করা হচ্ছে সেটি মোকাবেলা করার ক্ষমতা তাদের নেই। বরং রসরাজের দৃষ্টান্ত বা উত্তম বড়ুয়ার দৃষ্টান্ত প্রমাণ করেছে যে আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী এই বিষয়ে ন্যূনতম যোগ্যতাও রাখে না। আমাদের এই কথাটি মনে রাখা দরকার যে সাধারণ মানুষ যাদের সঙ্গে ডিজিটাল প্রযুক্তির সম্পর্ক নেই, তাদের এই প্রযুক্তির অন্তর্গত বিষয়াদি এখনও বোঝানো যায় না। ওরা আমাজনের জঙ্গলে বাস করার মতো চাঁদে সাঈদীর ছবিকে বিশ্বাস করে। তারা রসরাজকে বা উত্তম কুমারকে অপরাধী মনে করেছে। তারা কোনভাবেই প্রকৃত অবস্থা বিবেচনা করেনি। আমরা যারা দেশের ডিজিটাল রূপান্তরের পক্ষে কাজ করি তাদের জন্য এটিকে একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখতে হবে। আমরা যদি এই অবস্থার পরিবর্তন না করতে পারি তবে রামু-নাসিরনগরের পুনরাবৃত্তি হতেই থাকবে এবং আমাদের ডিজিটাল অগ্রযাত্রা বিঘিœত হবে। তবে সবার ওপরে বড় চ্যালেঞ্জ রয়েছে বাংলাদেশ রাষ্ট্রটির। এই রাষ্ট্রের জন্মের ইতিহাস, মুক্তিযুদ্ধ এবং ৭২ সালের সংবিধান যদি এভাবে প্রশ্নবিদ্ধ হতে থাকে, তবে আমাদের জাতিসত্তায় বড় ধরনের আঁচড় পড়তে বাধ্য। যদিও পাকিস্তানপন্থীদের সংখ্যা তত বেশি নয় এবং আমাদের সঙ্গে তারা কখনও জয়ী হতেই পারেনি। তবুও আমাদের জন্য একটি বড় কর্তব্য হয়ে দাঁড়িয়েছে দেশের সব নাগরিকের কাছে আমাদের রাষ্ট্রের জন্মকাহিনী তুলে ধরা। আমরা যে পাকিস্তান, আফগানিস্তান নই এবং একটি আধুনিক ধারণার রাষ্ট্র সেটি বোঝাতে না পারলে আমরা দেশটিকে ডিজিটাল যুগের শ্রেষ্ঠ আসনে স্থাপন করতে পারব না। আসুন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের ধারাবাহিকতায় আমরা আমাদের ডিজিটাল যুদ্ধটাতে ঝাঁপিয়ে পড়ি।
×