ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মার্কিন নির্বাচনে প্রযুক্তির প্রভাব

প্রকাশিত: ০৬:১৮, ১২ নভেম্বর ২০১৬

মার্কিন নির্বাচনে প্রযুক্তির প্রভাব

মার্কিন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সারা বিশ্বে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে একরকম আগুন লাগিয়ে নতুন রেকর্ড গড়া হয়েছে। কোটি কোটি গ্রাহক তাদের মনোভাব শেয়ার করেছেন ফেসবুক এবং টুইটারের মতো সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতে। রাজনৈতিক আলাপ আলোচনার জন্য এই পরিমাণ পারস্পরিক প্রতিক্রিয়া পূর্বের সকল রেকর্ড ভেঙ্গে দিয়েছে বলে জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন। টুইটারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ট্রাম্পকে বিজয়ী ঘোষণা করার পর ২০১৬ সালের মার্কিন নির্বাচন সম্পর্কে সাড়ে সাত কোটি গ্রাহক টুইট করেছেন। ২০১২ সালের নির্বাচনী মেসেজের পরিমাণের তুলনায় এই সংখ্যা অনেক বেশি, যা ছিল ৩.১ কোটি। এদিকে ফেসবুক জানায়, ১১ কোটি ৫০ লাখের বেশি মানুষ ফেসবুকের মাধ্যমে নির্বাচন নিয়ে আলোচনা করেন। প্রায় ৭১ কোটি ৬০ লাখ লাইক, পোস্ট এবং কমেন্ট পাওয়া যায় যা ভোট সম্পর্কিত। হ্যাকের চেষ্টা হয়েছিল ট্রাম্প, হিলারির সাইটও সম্প্রতি ইন্টারনেটে চালানো বিশাল সাইবার হামলার সময় হ্যাকাররা সে সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন প্রার্থী ডোনান্ড ট্রাম্প এবং হিলারি ক্লিনটনের ওয়েবসাইটও হ্যাকের চেষ্টা চালিয়েছিল, জানিয়েছে সিএনএন। সম্প্রতি ইন্টারনেটে চালানো বিশাল সাইবার হামলার সময় হ্যাকাররা সে সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন প্রার্থী ডোনান্ড ট্রাম্প এবং হিলারি ক্লিনটনের ওয়েবসাইটও হ্যাকের চেষ্টা চালিয়েছিল, জানিয়েছে সিএনএন। মিরাই বনেট দিয়ে এই সাইবার আক্রমণ চালানো হয়। এটি হচ্ছে সংক্রমিত ইন্টারনেট সংযুক্ত ডিভাইসের জোট, এগুলো সাইবার হামলায় মহাঅস্ত্রের মতো কাজ করে থাকে। মিরাই বনেট বিশাল পরিমাণে ডেটা কম্পিউটার সার্ভারে প্রেরণ করে। ওয়েবসাইটকে সরিয়ে ফেলা এবং দক্ষতার সঙ্গে প্রতিষ্ঠানগুলোকে ইন্টারনেটের বাইরে নিয়ে আশা এর কাজ। এই নতুন অস্ত্রটিকে প্রথম কাজে লাগানো হয় যখন এটি মানুষের নেটফ্লিক্স, স্পটিফাই এবং টুইটারের মতো ওয়েবসাইটগুলোতে প্রবেশে বাধা দিয়েছিল। এই সাইবার অস্ত্রের কম্পিউটার কোডটি কারা বানিয়েছিল, তা এখনও জানা যায়নি। হ্যাকাররা পুনরায় এমন আক্রমণ করার জন্য এ ধরনের ব্লুপ্রিন্ট চারদিকে ছড়িয়ে দিচ্ছে। অন্যদিকে, হ্যাকাররা এখন এই অস্ত্র নিজেদের নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এক সঙ্গে অনেক মানুষ এটি ব্যবহারের চেষ্টা করার ফলে এর শক্তিশালী রশ্মির ওপর প্রভাব পড়ে এবং এই সাইবার অস্ত্রটি দুর্বল হয়ে পড়ছে। ‘ট্রাম্প প্রভাব’ নিউজিল্যান্ডের সাইটেও কানাডার পর নিউজিল্যান্ডের অভিবাসন সংস্থার ওয়েবসাইটেও পড়েছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলাফলের প্রভাব। সাইটটিতে হঠাতই বেড়ে গেছে ডেটা ট্রাফিক। ইমিগ্রেশন নিউজিল্যান্ড (আইএনজেড) জানিয়েছে, তাদের ওয়েবসাইটে ২৪ ঘণ্টা সময়ে ৫৬৩০০ ভিজিট হয়েছে। সাইটটিতে প্রতিদিন গড়ে ২৩০০ ভিজিট হয়ে থাকে, সে হিসেবে বৃদ্ধির পরিমাণ ২৫০০ শতাংশ বলে জানিয়েছে বিবিসি। বুধবার কানাডার অভিবাসন সংস্থার ওয়েবসাইট উচ্চমাত্রার ডেটা ট্রাফিকের কারণে ক্র্যাশ করে। একই ধরনের চাপের সম্মুখীন হতে হয়েছে নিউজিল্যান্ডে থাকা, কাজ করা, শিক্ষা, বিনিয়োগ ইত্যাদি নিয়ে তথ্যপ্রদান করা সাইট ‘নিউজিল্যান্ড নাও’-কেও। আইএনজেডের বিপণন ব্যবস্থাপক গ্রেগ ফোর্সিথে বলেন, ‘বুধবার স্থানীয় সময় (নিউজিল্যান্ড) সকাল নয়টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় এনজেড নাও-এ যুক্তরাষ্ট্র থেকে সাড়ে ৭০ হাজার ভিজিট হয়েছে, সাধারণত সাইটটিতে দৈনিক ভিজিটের সংখ্যা গড়ে দেড় হাজার।’ যুক্তরাষ্ট্রে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার ফলে অনেক মার্কিনী নিউজিল্যান্ডে চলে যাওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন বলে জানায় বিবিসি। তবে, দেশটির সবাই মার্কিনীদের সাদরে গ্রহণ করবে বলে ধারণা করছে না সংবাদমাধ্যমটি। ফোর্সিথে জানান, ২৪ ঘণ্টায় ৭২৮৭ জন মার্কিনীর নিবন্ধন জমা পড়েছে, যেখানে সাধারণ দিনে গড়ে তিন হাজার নিবন্ধন হয়ে থাকে। তবে, এগুলো শুধু আগ্রহ প্রকাশের জন্য নিবন্ধন করা, ভিসার আবেদন নয় বলেও জানিয়েছেন তিনি। রুশ টিন্ডার ব্যবহারকারীদের পছন্দ ট্রাম্প রুশ যেসব টিন্ডার ব্যবহারকারী ডেটিং অ্যাপটির ‘সোয়াইপ দ্য ভোট’ ফিচার ব্যবহার করেছেন, তাদের অধিকাংশের কাছেই পছন্দের প্রার্থী ছিলেন সদ্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন জয়ী ডোনাল্ড ট্রাম্প, বুধবার এ খবর জানিয়েছে এ্যাপটির পরিচালনা প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী। অক্টোবরে টিন্ডার মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে সামনে রেখে ‘সোয়াইপ দ্য ভোট’ ফিচার চালু করেছিল। ট্রাম্প আর হিলারি, দুই প্রার্থীর মধ্যে কাকে পছন্দ তা জানাতে এই ফিচারে ডানে-বামে সোয়াইপ করার অপশন দেয়া হয়। আর এই ফিচার ব্যবহার করা রুশদের পছন্দের তালিকায় শীর্ষে ছিলেন ট্রাম্প, জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনবিসি। বুধবার টিন্ডার প্রধান সির্নাড বলেন, ‘আপনি এখানে দেখবেন, প্রচুর ভিন্ন দর্শন রয়েছে... মেক্সিকোতে হিলারি সবচেয়ে পছন্দের ছিলেন... আর রাশিয়ায় ছিলেন ডোনাল্ড।’ এই ফিচার ১৫টি দেশে চালু করা হয়, আর এটি টিন্ডারকে সামাজিক দায়বদ্ধ করার একটি চেষ্টা বলে জানান। তিনি বলেন, ‘ব্যবহারকারীদের আমরা যতভাবে পারি সহায়তা করতে আমাদের একটি দায়বদ্ধতা রয়েছে।’ নির্বাচন জেতার পর ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অভিনন্দন জানিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন। তার দেশ ‘যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পূর্ণভাবে সব ধরনের সম্পর্ক পুনঃস্থাপন করতে প্রস্তুত’ বলেও বলেন পুতিন।
×