ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সেই উন্মাদনা কোথায়?

প্রকাশিত: ০৬:১১, ১২ নভেম্বর ২০১৬

সেই উন্মাদনা কোথায়?

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ক্ষুদ্র ফরমেটের ক্রিকেট টি২০। এমন প্রতিযোগিতায় দর্শকরা সবসময়ই দেখার প্রত্যাশা করেন প্রচুর রানের। কিন্তু চলমান বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ (বিপিএল) টি২০ আসরে তেমন ব্যাটিং ঝড় দেখা যায়নি, এমনকি খুব বড় কোন দলীয় সংগ্রহও হয়নি। এমনকি বিপিএল ইতিহাসের সর্বনিম্ন দলীয় সংগ্রহে (৪৪ রান, খুলনা টাইটান্স) গুটিয়ে যাওয়ার ঘটনাও আছে। এ কারণেই বিপিএল সেভাবে পারছে না দর্শক টানতে। আয়োজকরা আশা প্রকাশ করেছিলেন ছুটির দিনগুলোতে পরিপূর্ণ হবে স্টেডিয়াম। কিন্তু শুক্রবারও সবগুলো গ্যালারি পুরোপুরি দর্শকপূর্ণ হয়নি। অবশ্য চিটাগাং ভাইকিংসের টপঅর্ডার জহুরুল ইসলাম অমি দাবি করছেন স্পোর্টিং উইকেট হয়েছে এবং এখানে ব্যাটে-বলে সমান নৈপুণ্য দেখানোর সুযোগ আছে। তবে বড় রানের ইনিংস ও দলীয় সংগ্রহ না হওয়া পর্যন্ত টি২০ ক্রিকেটের যে উন্মাদনা সেটা দর্শকদের মধ্যে দেখতে পাওয়া কঠিন হবে। সেই আমেজ পাওয়া যায়নি বিপিএল ৪ দিন পেরিয়ে গেলেও। বিপিএলের প্রথম ও দ্বিতীয় আসরটি দারুণ জাঁকালো আয়োজনে করা হয়েছিল। মূলত ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগ (আইপিএল) টি২০ বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়তা ও আকর্ষণে সবাইকে মুগ্ধ করার পরই বিপিএল সেই আদলে করা হয়। প্রথম ও দ্বিতীয় আসরে আইপিএলের অনুকরণে প্রায় সবকিছুই ছিল। মাঠে ছিলেন প্রতিটি অংশগ্রহণকারী দলের সুন্দরী চিয়ারলিডাররা। নামি-দামি বলিউড সেলিব্রেটিদের আনাগোনা ছিল পুরো আসরজুড়েই। এমনকি উদ্বোধনী অনুষ্ঠানেও ছিল বিস্ময়কর আকর্ষণ। তৃতীয় আসরে চিয়ার লিডাররা এবং আসর চলাকালীন সেলিব্রেটিদের আনাগোনা না থাকলেও জমকালো উদ্বোধনে শুরু হয়েছিল। এবার কোনকিছুরই বালাই নেই। সেসব খেলার বাইরের বাড়তি উন্মাদনাÑ যা দর্শকদের দৃষ্টি কাড়া এবং আগ্রহী করে তোলার বিকল্প উপাদান। মাঠের প্রতিযোগিতায়ও ভাটার টান এবার। টিকেট মূল্য অত্যধিক বেশি হওয়ার কারণে মাঠেই আসছেন না দর্শকরা। তবুও আসতেন যদি বিধ্বংসী ইনিংস উপহার দিতেন কোন ব্যাটসম্যান। বড় বড় দলীয় সংগ্রহ হতো। টি২০ ক্রিকেটে মানুষ আগ্রহী থাকে চার-ছক্কার ফুলঝুরি দেখার জন্য। ইতোমধ্যে শেষ হওয়া ৬ ম্যাচে সেসব দেখা যায়নি। অধিকাংশ ম্যাচেই ব্যাটসম্যানরা বড় রান করতে পারছেন না। বিস্ফোরক ইনিংস বলতে বুধবার রংপুর রাইডার্সের মোহাম্মদ শাহজাদের ৫২ বলে ৮০ এবং ৮ নবেম্বর ঢাকা ডায়নামাইটসের হয়ে মেহেদি মারুফের করা ৪৫ বলে অপরাজিত ৭৫ রানের দুটি ইনিংসই উল্লেখযোগ্য। এছাড়া তামিম ইকবালের ৩৮ বলে ৫৪, মুশফিকুর রহীমের ৩৬ বলে ৫০ ও শাহরিয়ার নাফীসের ৩৪ বলে ৫৫ রানের ইনিংসগুলো আছে। তবে দলীয় সংগ্রহে ১৪০ পেরোতেই হিমশিম খেয়ে যাচ্ছে দলগুলো। এখন পর্যন্ত চিটাগাং ভাইকিংস সর্বোচ্চ ১৬১ রানের একটি দলীয় সংগ্রহ উপহার দিয়েছে প্রথম ম্যাচে। এরপর আর বড় কোন সংগ্রহ দেখা যায়নি। উইকেটের কারণেই কি এমন ঘটছে? এ বিষয়ে জহুরুল বলেন, ‘অবশ্যই উইকেটগুলো বেশ ভাল। উইকেট এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যেন ব্যাটসম্যান ও বোলার উভয়েই সমান সুবিধা পায়। সবগুলো স্পোর্টিং উইকেট। আমরা গত বছর খুব বেশি হাইস্কোরিং ম্যাচ দেখিনি। এ বছরও একই ঘটনা দেখা যাচ্ছে। কিন্তু আগের চেয়ে এবারের উইকেটগুলো ভাল।’ এরপরও রান হচ্ছে না। কিন্তু সবগুলো দলেই টি২০ ক্রিকেটে বিস্ফোরক ইনিংস খেলা ব্যাটসম্যান আছেন। এবার বিপিএলে ইতোমধ্যেই খেলছেন মারলন স্যামুয়েলস, ডোয়াইন স্মিথ, আন্দ্রে রাসেল, ডোয়াইন ব্রাভো, শহীদ আফ্রিদি, শোয়েব মালিক, তামিম, সৌম্য সরকার, সাব্বির রহমান, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, মুশফিক, কুমার সাঙ্গাকারা, রবি বোপারাদের মতো ব্যাটসম্যানরা। এরপরও খুলনা বিপিএল ইতিহাসে সর্বনিম্ন এবং টি২০ ইতিহাসে নবম সর্বনিম্ন ৪৪ রানে গুটিয়ে গেছে। সে কারণে টসটাও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। কিন্তু জহুরুল বলেন, ‘আমার মনে হয় দিনের ম্যাচগুলোর চেয়ে রাতের ম্যাচগুলোয় তুলনামূলকভাবে টস গুরুত্বপূর্ণ। দিনের ম্যাচগুলোয় টস হার-জিত যাই হোক আমার মনে হয় না সেটা খেলায় কোন প্রভাব ফেলবে।’
×