ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

নাসিরনগরে হামলায় জড়িতদের ছাড় নয় ॥ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৫:৫২, ১২ নভেম্বর ২০১৬

নাসিরনগরে হামলায় জড়িতদের ছাড় নয় ॥ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এমপি বলেছেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে হামলার ঘটনা দেশে সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ ছড়ানোর নতুন ষড়যন্ত্র। এটি দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রেরও অংশ। তবে যারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না। এ ঘটনার পেছনে যারাই থাকুন, তদন্তের মাধ্যমে খুঁজে বের করে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ দেশে সাম্প্রদায়িকতার কোন জায়গা নেই। ধর্ম যার যার দেশ সবার। তাই কোন শ্রেণীর ওপর হামলা করে কেউ ফায়দা লোটার চেষ্টা করলে ভুল করবে। অপেক্ষা করুন, তদন্তেই সব বেরিয়ে আসবে। সরকারী অভিযানে ইতোমধ্যে সন্দেহভাজন হামলাকারীদের অনেকেই গ্রেফতার হয়েছে। অভিযান ও তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। শুক্রবার রাজধানীর বটমলী হোম অর্ফানেজ টেকনিক্যাল স্কুল প্রাঙ্গণে দি খ্রীস্টান কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লিমিটেড(দিসিসিসিইউলি), ঢাকার ৫৬তম বার্ষিক সাধারণ সভায় সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। দিসিসিসিইউলি, ঢাকার প্রেসিডেন্ট বাবু মার্কুজ গমেজের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন কার্ডিনাল প্যাট্রিক ডি’ রোজারিও। বিশেষ অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য জুয়েল আরেং, এমপি, দি সেন্ট্রাল এ্যাসোসিয়েশন অব খ্রীস্টান কো-অপারেটিভস (কাক্কো) লিমিটেডের চেয়ারম্যান নির্মল রোজারিও, আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য উপাধ্যক্ষ রেমন্ড আরেং, সমবায় অধিদফতরের নিবন্ধক ও মহাপরিচালক মোঃ মফিজুল ইসলাম, দি মেট্রোপলিটন খ্রীস্টান কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটি লিমিটেডের চেয়ারম্যান আগস্টিন পিউরিফিকেশন প্রমুখ। আলোচনা সভা পরিচালনা করেন দিসিসিসিইউলি, ঢাকার সেক্রেটারি ইগ্নাসিওস হেমন্ত কোড়াইয়া। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সম্প্রীতির দেশ বাংলাদেশ। এখানে সকল ধর্মের মানুষের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান রয়েছে। দেশের উন্নয়নে অবদান রেখে চলেছে সব ধর্মের মানুষ। খ্রীস্টান সম্প্রদায়ের অবদানের বিষয়টি উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে খ্রীস্টান সম্প্রদায়ের অবদান অনস্বীকার্য। আর এ সম্প্রদায়ের জীবনমান উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে বর্তমান সরকার। স্বাধীনতাযুদ্ধে বড় অবদান রেখেছে বাংলাদেশের খ্রীস্টান সম্প্রদায়। দেশের সার্বিক প্রবৃদ্ধিতে বিশেষ করে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সেক্টরে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে এদেশের খ্রীস্টান সম্প্রদায়। বাংলাদেশ খ্রীস্টান এ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব নির্মল রোজারিও বলেন, ১৯৭২ সালের সংবিধানে সমবায়কে মালিকানার দ্বিতীয় খাত হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করে গেছেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সংবিধানে সমবায়কে এমন স্বীকৃতি প্রদানের নজির খুবই বিরল। সমবায় দেশের সকল শ্রেণীর জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান, দারিদ্র্য বিমোচন ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করে আসছে। বর্তমানে সারাদেশে নিবন্ধিত মোট সমবায় সমিতির সংখ্যা প্রায় দু’ লাখ। এর মধ্যে জাতীয় পর্যায়ের সমবায়ের সংখ্যা ২২টি। সমবায় সমিতির মোট সদস্য সংখ্যা প্রায় এক কোটি। সমিতিগুলো কার্যকরী মূলধনের পরিমাণ প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকা। স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে সমবায় সমিতিগুলো ‘কর’ এর আওতামুক্ত ছিল। কোন ধরনের বৈদেশিক ঋণ গ্রহণ ছাড়া সাধারণ সদস্য-সদস্যাদের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র আমানত গঠন ও বিনিয়োগ করে স্বল্প লাভের উপর ১৫ শতাংশ কর আরোপ করা হলে সমিতিগুলোর অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা কঠিন হবে। প্রায় ১ কোটি সদস্য-সদস্যা ও তাদের পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হবে। হাজার হাজার কর্মচারী চাকরি হারাবে। গ্রামীণ জনপদে ক্ষুদ্র বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সংকুচিত হবে। তাই সমবায় সমিতিগুলো রক্ষা ও কোটি সমবায়ীর স্বার্থে এই কর আরোপ প্রত্যাহার করা দরকার।
×