ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচনে জয়লাভ

ইউরোপের রাজনীতি নিয়ে শঙ্কা কনজারভেটিভদের

প্রকাশিত: ০৪:০৮, ১২ নভেম্বর ২০১৬

ইউরোপের রাজনীতি নিয়ে শঙ্কা কনজারভেটিভদের

যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের অপ্রত্যাশিত জয়কে উদ্বেগের চোখে দেখছেন ইউরোপের রাজনীতিকদের একাংশ। জার্মান অর্থমন্ত্রী উলফগ্যাং শ্যাউবলসহ অন্যান্য কনজারভেটিভ রাজনীতিকরা বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে তাদের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। তারা বলেছেন, মার্কিন নির্বাচনের ফল যে বার্তাটি দিয়ে গেল মূলধারার রাজনীতিকরা যদি এর গুরুত্ব অনুধাবন না করেন তবে অদূর ভবিষ্যতে সঙ্কটে পড়তে পারে ইউরোপের রাজনীতি। খবর ওয়েবসাইটের। ইউরোপের কয়েকটি দেশে আগামী বছর নির্বাচন হবে। ফ্রান্স ও জার্মানির দক্ষিণপন্থীরা এ নির্বাচনে ভাল করতে পারে বলে আগে থেকেই ধারণা করা হচ্ছিল। ট্রাম্পের জয় তাদের প্রত্যাশার মাত্রা বহুগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে । ফলে মূলধারার রাজনীতিকরা কিছুটা উৎকণ্ঠিত। বিল্ড সংবাদপত্রকে বৃহস্পতিবার জার্মান অর্থমন্ত্রী শ্যাউবল বলেন, সাময়িকভাবে জনসমর্থনকে পুঁজি করে এগিয়ে যাওয়ার এই যে ধারা এটি কেবল আমেরিকা নয় ইউরোপের অনেক দেশে এমন প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সব মিলিয়ে রাজনীতি এখন এক বিপজ্জনক পর্যায়ে। আগামী সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে জার্মান চ্যান্সেলর এ্যাঞ্জেলা মেরকেল চতুর্থ মেয়াদে ক্ষমতায় থেকে যাওয়ার আশা করছেন। নিকটতম প্রতিপক্ষের চেয়ে তার রক্ষণশীল দল মাত্র ১০ পয়েন্টে এগিয়ে আছে। ভোটারদের অনেকেই মেরকেলের উন্মুক্ত দুয়ার অভিবাসী নীতি সমর্থন করেন না। দক্ষিণপন্থী দল অলটারনেটিভ ফর জার্মানি (এএফডি) অভিবাসীবিরোধী বাগাড়ম্বর করে জনসমর্থনের দিক থেকে এগিয়ে গেছে। মাত্র চার বছরের কিছু কম সময় আগে দলটি গঠিত হলেও রাজ্য পর্যায়ে আইন সভাগুলোর অর্ধেকের বেশি আসন এখন এএফডির দখলে। শ্যাউবল বলছেন, রাজনীতিকদের এখন অভ্যন্তরীণ ইস্যুগুলোর দিকে বেশি করে মনোযোগ দেয়া উচিত। অপর সিনিয়র কনজারভেটিভ রাজনীতিক হ্যান্স পিটার ফ্রেডারিকও এদিন ওই পত্রিকাটি একই রকম উদ্বেগের কথা প্রকাশ করে বলেছেন, ‘ইউরোপেও ট্রাম্প প্রতিক্রিয়া দেখা যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তিনি বলেন, ভোটররা এখন উপলব্ধি করতে শুরু করেছে যে, ইউরোপিয়ান সেন্ট্রাল ব্যাংক থেকে অভিবাসী নীতি পর্যন্ত কোন কিছুর ওপরই তাদের নিয়ন্ত্রণ নেই। তিনি বলেন, ‘আমাদের রাজনীতিকরা যদি ভোটারদের এসব ব্যাপারে আশ্বস্ত করতে না পারেন তবে চমক সৃষ্টিকারীরাই শেষ পর্যন্ত জয়ী হবে।’ তিনি বলছেন, ট্রাম্পের যেসব কথা আমেরিকার মধ্যবিত্ত শ্রেণীকে প্রভাবিত করেছে তা ইউরোপের বেলায়ও খাটে। এএফডির প্রধান ফ্রাউক পেট্রি বলেছেন, কর ও অভিবাসন ইস্যুকে নিয়েই তারা ভোটারদের কাছে যাবেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর যুক্তরাষ্ট্র এই প্রথম এমন একজন প্রেসিডেন্ট বেছে নিয়েছে যার আন্তর্জাতিক ইস্যুর চেয়ে অভ্যন্তরীণ ইস্যুই প্রধান। তার অন্যতম নির্বাচনী অঙ্গীকার ছিল সীমান্ত শক্তিশালী করা। ট্রাম্পের এই জয়ের সঙ্গে চলতি বছর আরও আগে অনুষ্ঠিত ব্রিটেনে ইইউ প্রশ্নে গণভোটের সঙ্গে মিল রয়েছে। ওই ভোটে বেক্সিট বা ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছাড়ার পক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট পড়ে। ট্রাম্পের জয় জনগণপন্থী, জাতীয়তাবাদী, স্বদেশী এবং বদ্ধ দুয়ার নীতির অনুসারীদের পালে যে হাওয়া লাগাবে তাতে কোন সন্দেহ নেই। এ ধারার রাজনৈতিক দলগুলো ইউরোপে কখনই এতটা শক্তিশালী ছিল না। কিন্তু তারা এখন ক্ষমতায় যাওয়ার মতো অবস্থায় পৌঁছে গেছে।
×