ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

এতিমের টাকা আত্মসাতের মামলা

খালেদা জিয়ার আত্মপক্ষ সমর্থনের দিন ২৪ নবেম্বর

প্রকাশিত: ০৬:০২, ১১ নভেম্বর ২০১৬

খালেদা জিয়ার আত্মপক্ষ সমর্থনের দিন ২৪ নবেম্বর

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিচারের শেষ পর্যায়ে থাকা জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য ২৪ নবেম্বর দিন ধার্য করেছেন আদালত। এছাড়া জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় তদন্ত কর্মকর্তার জেরার জন্য ১৭ নবেম্বর নতুন তারিখ রাখা হয়েছে। খালেদা জিয়ার উপস্থিতিতে তার সময়ের আবেদনে ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আবু আহমেদ জমাদার এ তারিখ নির্ধারণ করে দেন। বকশীবাজার কারা অধিদফতরের প্যারেড মাঠে ঢাকার তিন নম্বর বিশেষ জজ আদালতে এ দুই মামলার বিচার চলছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দুর্নীতির এ দুই মামলায় হাজিরা দিতে বৃহস্পতিবার সকাল দশটার দিকে আদালতে আসেন। প্রথমে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক হারুন অর রশিদকে তিন বিষয়ে নতুন করে জেরা করেন খালেদার আইনজীবী আব্দুর রেজ্জাক খান। হারুন অর রশিদ বাদী ও তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে সাক্ষ্য দেয়ার আগেও একবার তাকে জেরা করেছিলেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা। আপীল বিভাগের অনুমতি নিয়ে তিনটি প্রশ্নে এবার তাকে নতুন করে জেরা করলেন তারা। এ মামলার ৩২ সাক্ষীর সাক্ষ্য ও জেরা শেষ হওয়ার পর প্রধান আসামি খালেদা জিয়ার আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য ২৪ নবেম্বর দিন ঠিক করে দেন বিচারক। আর আসামিপক্ষের আবেদনে অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় তদন্ত কর্মকর্তা হারুন অর রশিদের জেরা পিছিয়ে ১৭ নবেম্বর তারিখ রাখা হয়। চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলা ॥ জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে আসা অবৈধভাবে তিন কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ২০১০ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় এ মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। খালেদা জিয়া ছাড়া এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন তার সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, হারিছের তখনকার সহকারী একান্ত সচিব ও বিআইডব্লিউটিএ এর নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান। তদন্ত কর্মকর্তা হারুন অর রশিদ ২০১২ সালের ১৬ জানুয়ারি খালেদা জিয়াসহ চারজনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন। পরের বছরের ১৯ মার্চ অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে আসামিদের বিচার শুরু হয়। দুদকের উপ-পরিচালক হারুন অর রশিদ চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি এ মামলায় সাক্ষ্য দেন। এরপর ১১ ফেব্রুয়ারি আসামিপক্ষের আইনজীবীরা তাকে জেরা শুরু করেন। খালেদা জিয়া বার বার সময় নিয়েও হাজির না হওয়ায় আদালতের আদেশে তার অনুপস্থিতিতেই তদন্ত কর্মকর্তাকে জেরা করেন বিএনপি নেত্রীর আইনজীবীরা। এরপর ৯ মার্চ খালেদার আইনজীবীরা হারুনুর রশিদকে তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগের গেজেট প্রকাশ না করার বৈধতার প্রশ্ন তুলে মামলার কার্যক্রম স্থগিতের জন্য হাইকোর্টে আরজি জানান। ওই আবেদনের কথা জানিয়ে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা জজ আদালতে সময় চাইলে ৭ এপ্রিল তা নাকচ করে খালেদাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য ১৭ এপ্রিল হাজির হতে নির্দেশ দেন ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আবু আহমেদ জমাদার। এরপর ১৭ এপ্রিল আইনজীবীরা তদন্ত কর্মকর্তার সাক্ষ্য নিয়ে আপত্তি তুলে খালেদা জিয়ার উপস্থিতিতে নতুন করে সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরার আবেদন করেন, যা বিচারক নাকচ করে দেন। ওই আদেশ বাতিল চেয়ে পরদিন হাইকোর্টে দুটি আবেদন করেন বিএনপি চেয়ারপার্সন, যা ১৯ এপ্রিল আদালতে ওঠে। খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা সেদিন জানান, তদন্ত কর্মকর্তাকে পুনরায় জেরা এবং তদন্ত নথি (কেস ডকেট) দেখানোর জন্য বিচারিক আদালতে আবেদন করা হলে ১৭ এপ্রিল তা খারিজ হয়। ওই আদেশ বাতিল ও মামলার কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে তারা দুটি আবেদন করেছেন। দুই আবেদন শুনে হাইকোর্ট ১৫ মে তা খারিজ করে আদেশ দেয়। এরপর আপীলের আবেদন করেন খালেদা জিয়া, যার নিষ্পত্তি করে সর্বোচ্চ আদালত জানায়, তিন প্রশ্নে তদন্ত কর্মকর্তাকে নতুন করে জেরা করা যাবে। তিন প্রশ্ন ॥ ট্রাস্ট এ্যাক্টের ২৩ ধারা অনুসারে ট্রাস্ট বোর্ডের কোন সম্পত্তির অপব্যবহার হলে বোর্ড অব ট্রাস্টি দায়ী কিনা, হলফকারী হিসেবে তদন্ত কর্মকর্তা হলফ করে কী বলেছেন। এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হারুন অর রশিদকে ২০০৫ সালে দুদক থেকে প্রত্যাহার করা হয়, তারপরও কীভাবে তিনি কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন? অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা ॥ এতিমদের জন্য বিদেশ থেকে আসা ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা আত্মসাত করার অভিযোগে জিয়া অরফানেজ মামলাটি দায়ের করে দুদক। ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় দায়ের মামলায় ২০০৯ সালের ৫ আগস্ট আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়া হয়।
×