ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

একনেকে ১২ প্রকল্প অনুমোদন

চট্টগ্রাম-ঢাকা-আশুগঞ্জ নৌপথ উন্নয়নে প্রকল্প অনুমোদন

প্রকাশিত: ০৬:০১, ১১ নভেম্বর ২০১৬

চট্টগ্রাম-ঢাকা-আশুগঞ্জ নৌপথ উন্নয়নে প্রকল্প অনুমোদন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আশুগঞ্জ থেকে ঢাকা হয়ে চট্টগ্রাম পর্যন্ত নৌপথের উন্নয়নে একটি প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। এর আওতায় বছরজুড়ে নাব্য রক্ষার জন্য সংশ্লিষ্ট নদী বিশেষভাবে খনন করা হবে। ব্যাপক উন্নয়ন করা হবে নৌ-অবকাঠামোর। এতে নৌ-বাণিজ্যে এবং পণ্য পরিবহনে গতি বাড়বে। আট বছর মেয়াদী এ প্রকল্পে অর্থায়ন করবে বিশ্বব্যাংক। এ সংক্রান্ত একটি প্রকল্পসহ মোট ১২টি উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। এগুলো বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৯ হাজার ৬৬৪ কোটি টাকা। বৃহস্পতিবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেকের সভায় এ অনুমোদন দেয়া হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপার্সন শেখ হাসিনা। সভা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। মন্ত্রী বলেন, প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে সরকারের নিজস্ব তহবিল (জিওবি) থেকে ব্যয় হবে ৪ হাজার ২৫৫ কোটি টাকা এবং সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন থেকে পাওয়া যাবে প্রায় ৫৩৩ কোটি টাকা। আর অবশিষ্ট প্রায় ৪ হাজার ৮৭৬ কোটি টাকা যোগান দেয়া হবে বৈদেশিক সহায়তা থেকে। সভায় ‘বাংলাদেশ আঞ্চলিক অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন প্রকল্প-১ (চট্টগ্রাম-ঢাকা-আশুগঞ্জ) সংযুক্ত নৌপথ খনন এবং টার্মিনালসহ আনুষঙ্গিক স্থাপনাদি নির্মাণ’ শীর্ষক প্রকল্প অনুমোদন পেয়েছে। এটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ হাজার ২০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে দেয়া হবে ৩২০ কোটি টাকা আর প্রকল্প সাহায্য হিসেবে বিশ্বব্যাংক দেবে ২ হাজার ৮৮০ কোটি টাকা। এ প্রসঙ্গে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, সমগ্র বাংলাদেশ হবে এশিয়া অঞ্চলের সুপার করিডর। এ লক্ষ্যে দেশের নদীগুলোকে কাজে লাগানো হবে। প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে এ প্রকল্পে অনুমোদন দেয়া হয়েছে। ‘গ্রীডভিত্তিক বিদ্যুত সরবরাহে দক্ষতা উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পটিও সভায় অনুমোদন পেয়েছে। এটি বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ২ হাজার ৯৮২ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে দেয়া হবে ১ হাজার ২৫৩ কোটি টাকা। জার্মান দাতা সংস্থা কেএফডব্লিউ’র কাছ থেকে প্রকল্প সাহায্য পাওয়া যাবে প্রায় ১ হাজার ২৪৩ কোটি টাকা। অবশিষ্ট প্রায় ৪৮৭ কোটি টাকার যোগান দেবে বাস্তবায়নকারী সংস্থা পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ লিমিটেড (পিজিসিবি)। এ প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, বিদ্যুত উৎপাদন সক্ষমতা বাড়ানোর ক্ষেত্রে সরকার সঠিক পথেই এগোচ্ছে। ২০২১ সালের মধ্যে দেশের প্রতিটি ঘরে বিদ্যুত পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে। তবে আমরা ২০১৯ সালের মধ্যেই এ লক্ষ্য অর্জন করতে চাই। এজন্য কয়লাভিত্তিক বিদ্যুত উৎপাদন বাড়াতে হবে। মন্ত্রী জানান, এরই ধারাবাহিকতায় প্রায় ৮৭০ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ের ‘পটুয়াখালী ১৩২০ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ, উন্নয়ন এবং পুনর্বাসন’ প্রকল্পটিও অনুমোদন পেয়েছে। এছাড়া সভায় রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুত কেন্দ্রের জন্য জরুরী ভিত্তিতে আলাদাভাবে ৪০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি। অনুমোদিত অন্য প্রকল্পগুলো হচ্ছে- ঝিনাইদহ-চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুর-মুজিবনগর সড়ক উন্নীতকরণ প্রকল্প (প্রথম সংশোধিত)। এটি বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ২৮৭ কোটি টাকা। ১৯টি নৌ-পুলিশ ফাঁড়ি ও ব্যারাক নির্মাণ প্রকল্প। এটি বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে ৯৭ কোটি টাকা। জামালপুর-মাদারগঞ্জ-মহাসড়কে তিনটি পিসি গার্ডার সেতু নির্মাণ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৭০ কোটি টাকা। তিতাস গ্যাস ফিল্ডের লোকেশনে এতে ওয়েলহেড কম্প্রেসার স্থাপন প্রকল্প, যার ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৯১০ কোটি টাকা। নোয়াখালী এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও নিষ্কাশন ব্যবস্থা উন্নয়ন প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৩২৫ কোটি টাকা। অনুমোদন পাওয়া কুমার নদ পুনর্খনন প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ২৩৭ কোটি টাকা। সারাদেশে বিদ্যমান পুলিশ হাসপাতালসমূহের আধুনিকীকরণ সংক্রান্ত প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ২৯২ কোটি টাকা। বিএনএ বঙ্গবন্ধু কমপ্লেক্স নির্মাণ, পতেঙ্গা, চট্টগ্রাম (১ম সংশোধিত) প্রকল্প। এর ব্যয় ধরা হয়েছে ২৭৮ কোটি টাকা এবং অনুমোদন পাওয়া সিএমএইচ, ঢাকা সম্প্রসারণ ও আধুনিকায়ন প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ১১৫ কোটি ৬২ লাখ টাকা।
×