ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

উবাচ

প্রকাশিত: ০৫:৫৭, ১১ নভেম্বর ২০১৬

উবাচ

রাজনীতির শিক্ষক! স্টাফ রিপোর্টার ॥ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন থেকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে শিক্ষা নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতায় আছে ডেমোক্র্যাটিক পার্টি, কিন্তু জিতেছেন রিপালিকান পার্টির প্রার্থী। যুক্তরাষ্ট্রের জনগণ যে মতামত দিয়েছে সেই মতামতেরই প্রতিফলন হয়েছে সেখানে। রাজনীতির শিক্ষকের ভূমিকা নিয়েছেন রিজভী। তাই হয়ত পরামর্শ দেয়া শুরু করলেন নতুন করে। প্রশ্ন হলো- কি শিক্ষা নেবার কথা বলছেন রিজভী? সর্বশেষ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়নি বিএনপি। স্থানীর সরকারের সকল নির্বাচনে অংশ নিয়েছে দলটি। সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা থেকে শুরু উপজেলা পরিষদের নির্বাচনসহ ইউনিয়ন পরিষদের নির্বচনে অংশ নিয়েছে বিএনপি। বিজয়ী হয়েছেন তাদের প্রার্থীরা। কথা হলো, যারা ভোট পেয়েছেন তারাই বিজয়ী হলেন। বাস্তবে আমেরিকার নির্বাচন থেকে রিজভী কি শিক্ষা নেয়ার কথা বলছেন হয়ত নিজেই জানেন! রিজভী বলেন, আমরা মনে করি, সেখান থেকে যদি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শিক্ষা নেন, তাহলে তিনি সত্য কথা বলবেন। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির যে নির্বাচন হয়েছে, তাতে বিপুল ভোটে জয়ের কথা তিনি বলেছেন, সেগুলো বলার ক্ষেত্রে আমার মনে হয় উনার মধ্যে কিছুটা লজ্জা আসবে। আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, ২০১৪ সালের নির্বাচন ও সরকারের বৈধতার কথা হয়ত রিজভী ভুলে গেছেন। তাই নতুন করে রাজনীতির শিক্ষক হবার চেষ্টা চালাচ্ছেন। যুক্তরাষ্ট্রের ভোটে হিলারি ক্লিনটনকে হারিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয়ের পর বুধবার বিকেলে নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নে একথা বলেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব। তিনি বলেন, এই নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হিলারির পক্ষে ইন্টারনেটে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরব ছিলেন বিএনপির অনেক নেতা-কর্মী। হিলারির সঙ্গে খালেদার ছবিও শেয়ার করেন তারা। রিজভী সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ইতোমধ্যে ট্রাম্পকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। আওয়ামী লীগের নির্বাহী কমিটির সভায় এক দিন আগে দেয়া প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের সমালোচনা করে বিএনপি নেতা বলেন, বিশৃঙ্খলা কারা করছে? খাদিজা, মীমদের ঘটনা কারা ঘটাচ্ছে? গণতন্ত্রের কা-ারি! স্টাফ রিপোর্টার ॥ ক্ষমতায় গেলে হয়ত অনেকেই অনেক কিছু ভুলে যান। আবার ক্ষমতায় থাকতে যা করেছেন এক সময় হয়ত তাও মনে থাকে না। এটাই হয়ত রাজনীতি। তবে তা শুধুমাত্র বাংলাদেশের ক্ষেত্রে। তাই হয়ত রাজনৈতিক নেতারাই বলেন, রাজনীতিতে শেষ কথা বলতে কিছু নেই। হয়ত বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা খন্দকার মোশাররফের ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। হয়ত অতীতকে ভুলে গেছেন তিনি। এবার ৭ নবেম্বর উপলক্ষে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করতে অনুমতি চেয়েছিল বিএনপি। উদ্দেশ্য বিপ্লব ও সংহতি দিবস পালন করা। যদিও ক্ষমতাসীন দল এই দিবসকে স্বীকৃতি দিতে নারাজ। তাদের ভাষায়, এ দিন গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়েছিল। তাই সমাবেশের অনুমতি পায়নি বিএনপি। ফের বায়না ১৩ নবেম্বর বিএনপিকে সমাবেশ করার অনুমতি দিতে হবে। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, এবারও টালবাহানা করা হলে তা গণতন্ত্রের জন্য শুভ হবে না। বুধবার এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, আমাদের মহাসচিব ৭ নবেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস পালন করার জন্য সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আগামী ১৩ নবেম্বর সমাবেশ করার অনুমতি চেয়েছেন। আমরা স্পষ্টভাষায় বলতে চাই, আবার যদি তারা (সরকার) টালবাহানা করে আমাদের সমাবেশ করতে না দেয়া হয়, ধরে নিতে হবে এই সরকার সম্পূর্ণভাবে গণতান্ত্রিক চরিত্র হারিয়ে ফেলছে। তবে এবার এটা হলে আমরা আর এই সরকারের কাছে থেকে গণতন্ত্র আশা করি না, এই সরকারের কাছে জনগণের ভোটাধিকার আশা করি না, এই সরকারের কাছে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা আশা করি না। খন্দকার মোশাররফ বলেন, ৭ নবেম্বর বাংলাদেশের রাজনীতিতে গণতন্ত্র প্রবর্তনের টার্নিং পয়েন্ট। সেজন্য আওয়ামী লীগ এদিনটিকে ভয় পায়, শহীদ জিয়াউর রহমানকে ভয় পায়। ৭ নবেম্বরের চেতনায় এ দেশ থেকে স্বৈরতন্ত্র, ফ্যাসিবাদকে সরিয়ে সাবেক রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়া দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সরকার নতুন প্রজন্মকে ৭ নবেম্বর সম্পর্কে বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে ইতিহাস বিকৃত করছে বলে অভিযোগ করেন বিএনপির এই নেতা। জবাবে ক্ষমতাসীন দল ও ১৪ দলের নেতাকর্মীরা বলছেন, এখন গণতন্ত্রের কা-ারি হয়েছেন বিএনপি নেতা মোশাররফ। বিএনপি তথা চারদলীয় জোট যখন ক্ষমতায় ছিল তখন বিরোধীসহ সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি কেমন আচরণ করা হয়েছিল তা এখন ভুলে গেছেন। একারণেই হয়ত গণতন্ত্রের নামে বড় বড় বুলি দিচ্ছেন। ভবিষ্যতে ক্ষমতায় গেলে হয়ত আবারও গণতন্ত্র ও রাজনৈতিক অধিকারের কথা বেমালুম ভুলে যাবেন। ছায়েদুলের চ্যালেঞ্জ! স্টাফ রিপোর্টার ॥ সারাদেশে এখন হট ইস্যু ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে সাম্প্রদায়িক হামলা। জামায়াত, হেফাজতসহ উগ্র সাম্প্রদায়িক ও মৌলবাদী গোষ্ঠী এ হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে। নেপথ্যে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের অংশগ্রহণ ছিল। ছিল ক্ষমতাসীন দলের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ কোন্দল। এটি একটি সর্বদলীয় হামলা বলেই মনে করেন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা। ঘটনার জন্য স্থানীয় নেতা মৎস্য ও পশুসম্পদমন্ত্রী ছায়েদুল হকের বিরুদ্ধে স্থানীয়দের অভিযোগ, তিনি ঘটনা থামাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেননি। পুলিশ প্রশাসন থেকে শুরু করে দলীয় নেতাকর্মীদের ঘটনা রোধে কার্যকর ভূমিকা নেয়ার নির্দেশ দেননি। ঘটনার চারদিন পর এলাকায় যান মন্ত্রী। পাশাপাশি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকদের নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করারও অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। এই প্রেক্ষাপটে সংবাদ সম্মেলনের ডাক দেন মন্ত্রী ছায়েদুল। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে হিন্দু সম্প্রদায়কে উদ্দেশ করে ‘মালাউন’ বলে গালি অথবা কোন আপত্তিকর কথা বলেননি বলে দাবি করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী ছায়েদুল হক। তিনি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বলেছেন, ‘নাসিরনগরের একটি হিন্দু লোকও যদি বলে, আমি তাদের মালাউন বলেছি তবে আমি এখনই মন্ত্রিত্ব ছেড়ে দেব।’ নাসিরনগর উপজেলা সদরের আশুতোষ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী ছায়েদুল হক এ ঘোষণা দেন। তার দাবি, শত্রুপক্ষের লোকজন তার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগ ছড়াচ্ছে। ফেসবুকে কাবাঘরকে অবমাননা করার ঘটনার সঙ্গে রসরাজ জড়িত নয়। ঢাকা থেকে রসরাজের ফেসবুক এ্যাকাউন্টে ছবিটি পোস্ট করা হয়েছে। বর্তমানে ছবিটি ল্যাবে পরীক্ষাধীন আছে। তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ‘রানা দাশগুপ্ত, সুলতানা কামালসহ অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তি নাসিরনগরে এসেছেন অথচ আমার সঙ্গে দেখা করেননি। আমি এই এলাকার পাঁচবারের এমপি, আমার থেকে বেশি নিরপেক্ষ তথ্য কেউ দিতে পারবে না।’ নাসিরনগরে তা-বের ঘটনায় গভীর ষড়যন্ত্র আছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনার অসাম্প্রদায়িক রাজনীতির সুনাম সারা বিশ্বে নষ্ট করার জন্য জামায়াত-বিএনপি ও মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীপক্ষ নাসিরনগরে ষড়যন্ত্র করছে।
×