ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ঘুষের টাকা নিতে এসে সওজ কর্মকর্তা গ্রেফতার

প্রকাশিত: ০৮:৪৭, ১০ নভেম্বর ২০১৬

ঘুষের টাকা নিতে এসে সওজ কর্মকর্তা গ্রেফতার

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ঘুষের টাকার কিস্তি নিতে এসে দুর্নীতি দমন কমিশনের কর্মকর্তার কাছে হাতেনাতে ধরা খেলেন রাজধানীর তেজগাঁও সড়ক ও জনপথ বিভাগের এস্টেট আইন কর্মকর্তার কার্যালয়ের সহকারী আইন কর্মকর্তা জহুরুল হক। মিরপুরের মুক্তিযোদ্ধা মোঃ সালাহউদ্দিনের দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কাছে অভিযোগের প্রেক্ষিতে বুধবার তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকার বেনিয়ান শেড ফুড কোর্ট থেকে ১৫ হাজার টাকা ঘুষ গ্রহণকালে দুদক পরিচালক নাসিম আনোয়ারের নেতৃত্বে আট সদস্যের একটি বিশেষ টিম হাতেনাতে তাকে গ্রেফতার করে। এরপরই দুদকের সহকারী পরিচালক মোঃ মনিরুল হক বাদী হয়ে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। একই সঙ্গে মিরপুর বিআরটিএ’র সাব পোস্ট অফিসের সাবেক পোস্টমাস্টার সিরাজুল ইসলাম পরস্পর যোগসাজশে টোকেনের মাধ্যমে মোটরযান কর বাবদ প্রায় ১০ লাখ টাকার সরকারী রাজস্ব আত্মসাতের দায়ে গ্রেফতার করেছে। দুদকের উপসহকারী পরিচালক সিলভিয়া ফেরদৌস তাকে গ্রেফতার করেন। এছাড়া প্রায় ৩ কোটি ৪৬ লাখ ৩২ হাজার টাকা অসৎ উদ্দেশ্যে অন্যায় ও আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার জন্য দুর্নীতি, প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে ব্যাক টু ব্যাক এলসির বিপরীতে পোশাক রফতানি না করে সোনালী ব্যাংক লিমিটেড, প্রধান কার্যালয়, ঢাকা হতে চেকের মাধ্যমে সরাসরি উত্তোলনপূর্বক আত্মসাত করার অভিযোগে জালকুড়ি, সিদ্ধিরগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জের জাগরণ টেক্সটাইল মিল্স লিমিটেডের সাবেক চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম মিয়াজীকে (৫৯) রাজধানীর সেগুনবাগিচা থেকে উপ-পরিচালক শেখ আবদুস ছালাম গ্রেফতার করেন। অপরদিকে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, চাপারহাট শাখা, কালীগঞ্জ, লালমনিরহাটের শস্য গুদামের সাধারণ সম্পাদক মোঃ আমিনুল ইসলাম ও রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, চাপারহাট শাখা, কালীগঞ্জ, লালমনিরহাটের সাবেক সুপারভাইজার মতিউর রহমানকে পরস্পর যোগসাজশে অপরাধজনক বিশ্বাস ভঙ্গ ও ক্ষমতার অপব্যবহার করার অভিযোগে ৪ লাখ ৪১ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে রংপুরের সহকারী পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম গ্রেফতার করেছেন। সূত্র জানায়, তেজগাঁওয়ের সহকারী ভূমি আইন কর্মকর্তা জহুরুল হক পঁয়তাল্লিশ হাজার টাকা ঘুষ লেনদেনের মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধা মোঃ সালাহউদ্দিনকে বাসা থেকে উচ্ছেদ না করে থাকার ব্যবস্থা করে দেবেন। পরিবার নিয়ে থাকতে সমস্যা যেন না হয় তার সকল দায়িত্বও নেন তিনি। একই সঙ্গে সবার বাসা উচ্ছেদ করলেও তার বাসা সড়ক ও জনপথ বিভাগ উচ্ছেদ করবে নাÑ এমন আশ্বাস দেন সালাউদ্দীনকে। জহুরুল হক তাকে বলেন, বড় বস এ কাজের জন্য ২ লাখ টাকা চাইলেও বসকে বুঝিয়ে তিনি ৪৫ হাজার টাকায় রাজি করিয়েছেন। তাই সালাউদ্দীন জহুরুল হককে ৪৫ হাজার টাকার প্রথম কিস্তি ১৫ হাজার টাকা প্রদান করতে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকার একটি দোকানে আসতে বলেন। এরপরই দুদক টিম তাকে টাকা লেনদেনের সময় গ্রেফতার করেন। দুদক সূত্র জানায়, মুক্তিযোদ্ধা মোঃ সালাহউদ্দিন দুদকে অভিযোগ করেন যে, মোঃ জহুরুল হকসহ সড়ক ও জনপথ বিভাগের ৩০-৩৫ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী উচ্ছেদ নোটিস নিয়ে গত ২৪ অক্টোবর তার বাসায় প্রবেশ করে মালামাল তাৎক্ষণিকভাবে বের করে নিতে নির্দেশ দেন। পরবর্তীকালে উচ্ছেদ না করে তাদের পক্ষ হতে মোঃ জহুরুল হক জানান, তাদের খরচাপাতি দিলে সব ঠিক করে দেবেন। বাধ্য হয়ে গত ৩ নবেম্বর জহুরুল হকের সঙ্গে যোগাযোগ করলে সে জানায় যে, তাদের কর্মকর্তা বলেছেন ২ লাখ টাকা নিয়ে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে সেখানে থাকতে দেয়া হোক। এরপর দুদকের কাছে বিস্তারিত জানিয়ে অভিযোগ করলে দুদক টিম তাকে গ্রেফতার করে।
×