ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ইব্রাহীম রাসেল

চাই দক্ষ চালক

প্রকাশিত: ০৩:৪০, ১০ নভেম্বর ২০১৬

চাই দক্ষ চালক

সংবাদ মাধ্যমগুলোতে চোখ রাখলেই ‘সড়ক দুর্ঘটনা’ শিরোনামের খবর চোখে পড়বেই। প্রতিদিনই দেশের কোথাও না কোথাও সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে। মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে, অনেকে মারাত্মক আহত হয়ে পঙ্গুত্বসহ নানাবিধ শারীরিক বিকলাঙ্গতা গ্রহণ করছে। অনেক দুর্ঘটনার খবর সংবাদ মাধ্যমে আসছেও না। দেশের মানুষের স্বাভাবিক মৃত্যুর সবচেয়ে বড় অন্তরায় এই সড়ক দুর্ঘটনা। রোজই আমাদের আতঙ্কে থাকতে হয়, সড়ক দুর্ঘটনায় কখন কোন প্রিয়জন হারানো কিংবা আহত হওয়ার দুঃসংবাদ আসে! সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে আমাদের ক্ষোভের অন্ত নেই। এ নিয়ে অনেক লেখালেখি, আন্দোলন, প্রতিবাদ অহরহ হচ্ছে। চিত্র নায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ নামে দীর্র্র্র্র্র্র্ঘ সময় ধরে আন্দোলন করে আসছেন। কিন্তু সুফলটা এখনও অধরাই রয়ে গেছে। সড়ক দুর্ঘটনার জন্য চালকের অদক্ষতা, গাফিলতি যেমন রয়েছে, তেমন রয়েছে যাত্রীদের অসচেতনতাও। সার্বিক বিচার বিশ্লেষণ করে সড়ক দুর্ঘটনার জন্য দায়ী কারণগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- অদক্ষ চালক; বেপরোয়া গাড়ি চালানো, পুরনো ও ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন, সরু রাস্তা, রাস্তায় ডিভাইডার না থাকা, সনাতনী ট্রাফিক সিগনাল ব্যবস্থা, যুগোপযোগী ট্রাফিক আইন প্রণয়ন ও প্রয়োগের অভাব, বিকল্প যানবাহনের পর্যাপ্ত সুবিধা না থাকা, বিভিন্ন গতির যানের একই সড়কে চলাচল, সড়কের নকশায় ত্রুটি, চালকদের সড়কে নির্ধারিত গতিসীমা না মানা, মালিক পক্ষের অধিক মুনাফার লোভ, সড়ক নিরাপত্তার বিষয়ে সচেতনতার অভাব ও পথচারীর ঝুঁকিপূর্ণ আচরণ, দুর্ঘটনা ঘটিয়ে চালকদের পার পেয়ে যাওয়ার সংস্কৃতি ও অপ্রতুল শাস্তির বিধান ইত্যাদি। হরহামেশা দেখতে পাচ্ছি হেলপার থেকে রাতারাতি চালক বনে যাচ্ছে। প্রশিক্ষণ নেই, কোন রকম অনুমোদন নেই অথচ গাড়ি চালাচ্ছে। এমন চালকরাই ঘাতক হয়ে প্রাণ কেড়ে নিচ্ছে। আবার দেখা যায় এ ঘাতক চালকরা গ্রেফতার হয়েও আইনের ফাঁক দিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছে। সুতরাং এসব ঘাতক চালকের ক্ষেত্রে কঠোর বিচার ব্যবস্থার পাশাপাশি সড়ক দুর্ঘটনা রোধে যা করণীয় তা হলো-অদক্ষ চালকদের সড়ক থেকে উচ্ছেদ করতে হবে, গাড়ি চালানোর সময় চালকের ধূমপান এবং মোবাইলে কথা বলা বন্ধ করতে হবে, চালক নেশাগ্রস্ত কিনা মালিক পক্ষকে সেদিকে বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে, ফিটনেস ও সনদবিহীন গাড়ি রাস্তায় নামা বন্ধ করতে হবে, হেলপার দিয়ে গাড়ি চালানো বন্ধ করতে হবে, উন্নত ট্রাফিক মনিটরিং ব্যবস্থা ও উন্নত সড়ক তৈরি করতে হবে, পাশাপাশি চালকদের সঠিক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করে দক্ষ চালক বৃদ্ধিতে যথাযথ দৃষ্টি দিতে হবে, ট্রাফিক আইন সম্পর্কে চালক, যাত্রী ও পথচারীরা যাতে সহজ উপায়ে জানতে পারে তার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে বিভিন্ন গতির যানবাহনের জন্য যথাসম্ভব আলাদা লেন তৈরি করতে হবে, সড়কের ঝুঁিকপূর্ণ মোড়গুলো ভেঙ্গে সোজা করতে হবে; সর্বোপরি সড়কে যানবাহন চলাচল এবং দুর্ঘটনা সংক্রান্ত ব্যাপারগুলোতে আইনের সঠিক প্রয়োগ করতে হবে। আর এ বিষয়ে সরকার ও জনগণ উভয়েরই একান্ত সহযোগিতা ও সচেতনতা প্রয়োজন। মোহাম্মদপুর, ঢাকা থেকে
×