ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

যাত্রীর সচেতনতা কাম্য;###;খন্দকার মাহ্বুবুল আলম

সমাজ ভাবনা ॥ এবারের বিষয় ॥ চালক বনাম ঘাতক

প্রকাশিত: ০৩:৪০, ১০ নভেম্বর ২০১৬

সমাজ ভাবনা ॥ এবারের বিষয় ॥ চালক বনাম ঘাতক

সম্প্রতি সড়ক দুর্ঘটনার হার অতীতের যে কোন সময়ের তুলনায় বৃদ্ধি পেয়ে চলছে। এই সড়ক দুর্ঘটনার অমোচনীয় ক্ষত কত সহস্র পরিবার বহন করে চলছে তার কোন ইয়ত্তা নেই। প্রতিদিন দেশের কোথাও না কোথাও এমন সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেই চলছে। এসব দুর্ঘটনায় কারও প্রিয়জন হারানোর ব্যথা, কারও কারও অঙ্গহানির মতো দুঃসহ যন্ত্রণার ভার তাদের জীবনকে বিষাদময় করে তুলেছে। এ নিয়ে প্রচুর লেখালেখি এবং এর নিরাময়ের জন্য নানাজনের নানা পরামর্শও উপস্থাপন করা হচ্ছে, তবুও এই সড়ক দুর্ঘটনা থামানো যাচ্ছে না। দেশের অনেক মেধাবী শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে স্বনামধন্য অনেক খ্যাতিমান ব্যক্তিরাও এমন সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন। ক’বছর আগে বিশিষ্ট সাংবাদিক ও চিত্রনির্মাতা মিশুক মুনির এবং চিত্র নির্মাতা তারেক মাসুদ মানিকগঞ্জে এক সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান। যা সে সময়ে সমগ্র দেশে তোলপাড় সৃষ্টি করেছিল। এতদসত্ত্বেও সড়ক দুর্ঘটনার কোন সমাধান মেলেনি। এমন সড়ক দুর্ঘটনার জন্য অনেক কারণই বিদ্যমান। মহাসড়কে চলাচল অনুপযোগী গাড়ি নামানো হচ্ছে প্রায়শ। অদক্ষ ড্রাইভার অথবা হেলপারের হাতে গাড়ি ছেড়ে দেয়ার মতো ঘটনা তো ঘটছেই। এসব কারণে সড়ক দুর্ঘটনা অপ্রতিরোধ্য গতিতে বৃদ্ধি পেয়ে চলছে। এ ছাড়া আছে যাত্রীর চাপ, ওভার টেকিং তো আছেই। বিশেষত দূরপাল্লার গাড়ির ক্ষেত্রে একজন মাত্র ড্রাইভার দিয়ে গাড়ি চালানো হয়ে থাকে। যা বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ একজন মাত্র ড্রাইভার দীর্ঘপথ ও সময় ধরে গাড়ি চালানোর ক্ষেত্রে খেই হারাতে পারেন। এক্ষেত্রে একজনের স্থলে দুজন ড্রাইভার হলে একজন বিশ্রাম নিতে পারেন। এতে গাড়ি চালানোর ক্ষেত্রে চালকের মধ্যে একগুঁয়েমি যেমন আসবে না, তেমনি গাড়ি চালানোর ক্ষেত্রে চালকের মধ্যে ছন্দ পতনের (কৌশলগত ত্রুটি) আশঙ্কাও থাকবে না। অনেক চালক আছেন আগে যাওয়ার প্রচেষ্টায় ট্রাফিক আইনের তোয়াক্কা না করে দুর্ঘটনার সৃষ্টি করে থাকেন। হাইওয়েতে দূরপাল্লার গাড়ির পাশাপাশি স্থানীয় পর্যায়ের অন্য কোন যান চলাচল যেমন নছিমন, করিমন ইত্যাদি বিড়ম্বনা সৃষ্টি করে থাকে। ফলে এসব কারণেও সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। উল্লেখ্য, এসব চালকের অনেকেরই শিক্ষাগত যোগ্যতা নেই। কেউ কেউ আছেন অর্ধশিক্ষিত। ট্রাফিক আইন ইত্যাদি সম্পর্কে তাদের কোন সম্যক জ্ঞান নেই। এক্ষেত্রে চালকদের জন্য ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা এসএসসি করা উচিত। সরকারীভাবে ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ একাডেমি চালু করা দরকার। চালক এবং হেলপারদের মধ্যে এই একাডেমি থেকে হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ দেয়া উচিত। এতে করে দক্ষ চালক-হেলপার তৈরি করা সম্ভব হবে। সড়ক দুর্ঘটনার অভিশাপ থেকে মানুষ বাঁচতে চায়। প্রত্যেকটি জীবনের মূল্য আছে। এক্ষেত্রে বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালানোর কারণে যেসব মূল্যবান প্রাণ অকালে ঝরে পড়ছে এর দায় নেবে কে? এর দায় সবার। যাত্রী সচেতনতার অভাবও এখানে বিদ্যমান। রাস্তা পারাপারেও মানুষ সচেতন নয়। ফলে যা হওয়ার তাই হয়ে যায়। সড়ক দুর্ঘটনা রোধ করতে হলে বর্ণিত কারণগুলোর ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরী। মধ্যম হালিশহর, চট্টগ্রাম, থেকে
×