ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

দীপু মালিক

রাশিয়ার টিকেট নিয়ে শঙ্কায় আর্জেন্টিনা!

প্রকাশিত: ০৬:০১, ৯ নভেম্বর ২০১৬

রাশিয়ার টিকেট নিয়ে শঙ্কায় আর্জেন্টিনা!

কঠিন সমীকরণের সামনে দাঁড়িয়ে আর্জেন্টিনা। বিশ্বের অন্যতম সমর্থকপুষ্ট দলটি আগামী ২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপ ফুটবল খেলতে পারবে কিনা সেটা নিয়ে সংশয় সৃষ্টি হয়েছে। দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলো ১৮টি করে ম্যাচ খেলার সুযোগ পায়। ইতোমধ্যে আর্জেন্টিনাসহ সব দেশ খেলে ফেলেছে ১০টি করে ম্যাচ। বর্তমানে আর্জেন্টিনা পয়েন্ট তালিকার ষষ্ঠ স্থানে। এই অঞ্চল থেকে ১০টি দলের মধ্যে সরাসরি বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ পাবে প্রথম চারটি দল। পঞ্চম দলকে খেলতে হবে প্লে-অফ। বাছাইপর্বের বাকি আটটি ম্যাচে হোঁচট খেলে বড়সড় অঘটনের মুখে পড়ে যাবে আর্জেন্টিনা। আগামী শুক্রবার ভোরে আর্জেন্টিনা মুখোমুখি হবে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ব্রাজিলের। এই ম্যাচের পাঁচদিন পর আর্জেন্টিনার প্রতিপক্ষ কলম্বিয়া। ম্যাচ দুটির ফলাফলের ওপর আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ ভাগ্য অনেকটাই নির্ভর করছে। বর্তমানে দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের বাছাইপর্বে ১০টি করে ম্যাচ শেষে ২১ পয়েন্ট নিয়ে সবার ওপরে রেকর্ড সর্বোচ্চ পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল। ২০ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে উরুগুয়ে। ১৭ পয়েন্ট করে নিয়ে গোলগড়ে তিনে ইকুয়েডর ও চারে কলম্বিয়া। ১৬ পয়েন্ট নিয়ে পাঁচ নম্বরে চিলি। একই পয়েন্ট নিয়ে ষষ্ঠ স্থানে আর্জেন্টিনা। তাদের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে প্যারাগুয়ে। তাদের পয়েন্ট ১৫। বাছাইপর্বের এই ম্যাচগুলোর মধ্যে লিওনেল মেসি খেলেছেন মাত্র তিনটি ম্যাচে। তিনটিতেই জয় পেয়েছে আর্জেন্টিনা। অন্যদিকে মেসিকে ছাড়া বাকি সাতটি ম্যাচে খেলতে নেমে আর্জেন্টিনা জিতেছে মাত্র একটিতে। হেরেছে দুটি ম্যাচে। ড্র করেছে চারটিতে। এ ধারা অব্যাহত থাকলে ২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা খেলতে পারবে কিনা তা নিয়ে সংশয় আছে। মেসিকে ছাড়া বাছাইপর্বের বাধা পেরনোও যে আর্জেন্টিনার জন্য অনেক কঠিন হয়ে যাবে, তা ভালমতোই টের পাওয়া যাচ্ছে। শঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশ্বনন্দিত ও সর্বকালের অন্যতম সেরা তারকা দিয়াগো ম্যারাডোনাও। তিনিও ঠিক নিশ্চিত নন, মেসিরা বিশ্বকাপে খেলতে পারবেন কিনা। এমনিতেই বেহাল অবস্থা তার ওপর বলিভিয়ার ৪ পয়েন্ট ফিফা কেটে নেয়ায় আরও বিপাকে পড়েছে আর্জেন্টিনা। বলিভিয়ার পয়েন্ট হারানোয় আর্জেন্টিনাকে গোল ব্যবধানে টপকে তালিকার পাঁচ নম্বরে উঠে এসেছে কোপা আমেরিকা বিজয়ী চিলি। অবৈধ খেলোয়াড় খেলানোর শাস্তি হিসেবে বলিভিয়ার পয়েন্ট কাটায় আর্জেন্টিনা পড়ে গেছে ঝামেলায়। এ প্রসঙ্গে দিয়াগো ম্যারাডোনা বলছেন, আর্জেন্টাইন ফুটবল এ্যাসোসিয়েশনের (এএফএ) অযোগ্যতা, অদক্ষতা ও দুর্নীতির কথা। ম্যারাডোনা বলেন, ফিফায় আমাদের পক্ষে দাঁড়াবার কেউ নেই। আর্জেন্টাইন ফুটবল এ্যাসোসিয়েশনে যা যা ঘটছে, তাতে চিন্তিত না হয়ে থাকা যায় না। সর্বকালের অন্যতম সেরা ফুটবলার বলেন, যা তা লোকজন নিয়ে এএফএ গঠিত। এদের কারণে আমরা কেবল বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতাই আমরা প্রায় হারাতে বসিনি, হারাতে বসেছি বয়সভিত্তিক সব স্তরে খেলার যোগ্যতা। ম্যারাডোনার দুশ্চিন্তা ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্টিনোকে নিয়েও। তিনি বলেন, ফুটবল থেকে যারা টাকা চুরি করেছে তাদের সবাইকে দূরে ঠেলতে ইনফান্টিনো এতটুকু দ্বিধা করবে না। আমি এই ব্যাপারটি নিয়ে ভীষণ ভয় পাই। এই দুরবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য আর্জেন্টিনার মূল ভরসাই এখন মেসি। এই মেসির বিশ্বকাপ ফুটবলের রঙ্গমঞ্চে রঙিন অভিষেক হয়েছিল। সেটা ২০০৬ জার্মান বিশ্বকাপের কথা। বিশ্বকাপ অভিষেকে মাঠে নেমেই নিজের মুন্সিয়ানা দেখিয়েছিলেন সে সময়ের ১৮ বছর বয়সী তরুণ। গ্রুপ পর্বে সার্বিয়া-মন্টেনেগ্রোর বিরুদ্ধে ৭৪ মিনিটে ম্যাক্সি রড্রিগুয়েজের বদলি হিসেবে নেমে ১৪ মিনিট পরই প্রথম গোল পেয়েছিলেন মেসি। ৮৮ মিনিটে করা সেই গোলটির মধ্য দিয়েই ফুটবল বিশ্বে নিজের আগমনী বার্তা পৌঁছে দিয়েছিলেন এ যুগের বিস্ময় বালক। কিন্তু বিশ্ব ফুটবলের সর্বোচ্চ আসরে মেসির এর পরের অধ্যায়ে যোগ হয় শুধুই হতাশা, ব্যর্থতা, আপসোস আর হাহাকার। অভিষেকে আলো ছড়ানোর পর আর নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি। ২০১০ দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপে ব্যর্থ হন। তবে ২০১৪ ব্রাজিল বিশ্বকাপে পৌঁছে গিয়েছিলেন স্বপ্ন পূরণের কাছাকাছি। কিন্তু ফাইনালে জার্মানির কাছে হেরে স্বপ্নভঙ্গ হয় মেসির। এরপর ২০১৫ ও ২০১৬ টানা দুই বছর দুটি কোপা আসরের ফাইনালেও পরাজিত দলের সদস্য হন পাঁচবারের ফিফা সেরা তারকা। এরপর রাগে-ক্ষোভে অবসর নিয়ে নিয়েছিলেন ক্ষুদে এই জাদুকর। তবে দেশের টানে আবারও ফিরেছেন। চারবার দেশের জার্সিতে ফাইনালে হারলেও অনেক মনে করেন, এখনও মেসির সুযোগ আছে বিশ্বকাপ জিতে অবসর নেয়ার। এমন জানিয়েছেন আর্জেন্টাইন কোচ এডগার্ডো বাউজা। গত মাসেও তিনি একই কথা বলেছিলেন। আর্জেন্টিনার কোচ আশাবাদী সুরে বলেছেন, আরও একটি বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলার সুযোগ ভালমতোই আছে মেসির। দেশের জন্য শিরোপা জিততে মরিয়া মেসি, এ কথাটিই আরেকবার সবাইকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন বাউজা। গত তিন বছরে তিনটি ফাইনাল থেকে খালি হাতে ফেরা এই আর্জেন্টাইন কতটা ক্ষুধার্ত, সেটিও ব্যাখ্যা করেছেন আর্জেন্টাইন কোচ। মেসি প্রসঙ্গে কোচ বাউজা বলেন, তাকে (মেসি) জাতীয় দলের প্রতি নিবেদিতপ্রাণ বলা যায়। অবসর নেয়ার সময় সে নিজের না পাওয়ার হতাশা থেকেই অনেক সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। সেসব এখন অতীত। আগের মতোই দেশের জার্সিতে মেসি শিরোপা জেতার জন্য ক্ষুধার্ত। মেসি শুধু ফুটবল নিয়েই বেঁচে আছে। সবার মতো আমিও জানি, জাতীয় দলের হয়ে তার মতো করে আর কেউ শিরোপা জিততে চায় না। আশাবাদী আর্জেন্টাইন কোচ বলেন, মেসি জাতীয় দলের প্রতি খুবই নিবেদিত। ওই সময় (অবসর) সে হতাশা থেকে কিছু কথা বলেছিল। কিন্তু আমরা ফুটবল নিয়ে কথা বলা শুরু করলাম এবং আপনারাও দেখলেন, সে ফুটবল নিয়েই বাঁচে। আর্জেন্টাইন কোচ মনেপ্রাণে চাচ্ছেন, দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে বিশ্বকাপে খেলুক তার দল। তার চাওয়া, ১৯৮৬ সালে সর্বশেষ পাওয়া সাফল্যের পুনরাবৃত্তিও হোক মেসিদের হাত ধরে। এ প্রসঙ্গে বাউজা বলেন, আরেকটি বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলতে চাই আমরা। এটা সহজ হবে না। কিন্তু আমাদের জীবনটাই সংগ্রামে ভরা। মনেপ্রাণে চাইলেও কাজটা সহজ হবে না তা ভালমতোই জানেন আর্জেন্টিনা কোচ। নিজের শঙ্কার কথা জানাতেও ভুল করেননি। এ প্রসঙ্গে বাউজা বলেন, আমি উদ্বিগ্ন। কারণ বাছাইপর্ব উতরানো এখনও নিশ্চিত হয়নি আর এখনও জিততেই হবে। বাছাই হওয়ার বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে আমাদের ওপর। আমি এখনও মনে করি, আমরা যদি ঘরের মাঠে নিজেদের সবগুলো ম্যাচ জিতি, আমরা বিশ্বকাপে খেলতে পারব। ব্রাজিল ও কলম্বিয়ার বিরুদ্ধে ম্যাচ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ম্যাচ দুটিতে অন্তত চার পয়েন্ট পেতে চাই আমরা। তাহলে অনেকটা এগিয়ে যাব। মস্কোয় সেরা পোগোরিলায়া বরাবরই রাশিয়ার মেয়েরা ভিন্ন এক আকর্ষণ ফিগার স্কেটিংয়ে। শুধু মনোহর দেহবল্লরীই নয়, শারীরিক কসরতেও অন্য যে কোন দেশের নারীদের চেয়ে বাড়তি এক নজর কেড়ে নেয় তারা। এবার নিজেদের দর্শক ছিল, তাই মস্কোতে স্বাভাবিকভাবেই কেউ ছুঁতে পারল না রাশিয়ান সুন্দরী আনা পোগোরিলায়াকে। ১৮ বছর বয়সী এ রাশিয়ান তরুণী মেগাস্পোর্ট এ্যারেনায় উইমেন্স কাপ অব রাশিয়া জয় করেছেন -এএফপি
×