ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

মাহিয়ান দ্বীপ

হারিয়ে গেলেন বাউচার্ড!

প্রকাশিত: ০৬:০০, ৯ নভেম্বর ২০১৬

হারিয়ে গেলেন বাউচার্ড!

দুই বছর আগের কথা। হঠাৎ করেই প্রাদপ্রদীপের আলোয় ইউজেনি বাউচার্ড। মৌসুমের প্রথম দুই গ্র্যান্ডসøাম টুর্নামেন্টের সেমিফাইনালের টিকেট নিশ্চিত করেন তরুণ প্রতিভাবান এই টেনিস তারকা। কানাডার প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে সে বছর উইম্বলডনেরও ফাইনালে জায়গা করে নেন বাউচার্ড। টেনিস কোর্টে যেমন তেমনি মডেলিংয়েও আলাদা করে নজর কাড়েন তিনি। কিন্তু হায়! পারফর্মেন্সের সেই ধারাবাহিকতার ছিটেফোঁটাও ধরে রাখতে পারেননি এই কানাডিয়ান। যে চমক নিয়ে টেনিস কোর্টে আলো ছড়াতে শুরু করেন পরের দুই মৌসুমে আর সেই বাউচার্ডকে যেন খুঁজেই পাওয়া যায়নি। ২০১৪ সালটা দারুণ কাটে বাউচার্ডের। মেজর কোন শিরোপা জিততে পারেননি সেবার। কিন্তু তারপরও তরুণ প্রতিভাবান খেলোয়াড় হিসেবে পুরো মৌসুমজুড়েই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন তিনি। সেই মৌসুমের প্রথম গ্র্যান্ডস্লাম টুর্নামেন্ট অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের সেমিফানালে উঠেন তিনি। চীনার লি নার কাছে হেরে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের শেষ চার থেকে বিদায় নেন পাঁচ ফুট ১০ ইঞ্চি উচ্চতার এই টেনিস তারকা। ধারাবাহিক পারফর্মেন্সের সৌজন্যে ফ্রেঞ্চ ওপেনেও শেষ চারের টিকেট নিশ্চিত করেন বাউচার্ড। এবার থাকে থামিয়ে দেন রাশিয়ান টেনিসের গ্ল্যামারগার্ল মারিয়া শারাপোভা। তারপরও দমে যাননি তিনি। মৌসুমের তৃতীয় গ্র্যান্ডস্লাম টুর্নামেন্ট উইম্বল্ডনে নিজেকে আরও একধাপ এগিয়ে নেন প্রতিভাবান এই তারকা। প্রথম কানাডিয়ান খেলোয়াড় হিসেবে উইম্বলডনের ফাইনালে উঠার বিস্ময়কর কীর্তিও গড়েছিলেন তিনি। কিন্তু দুর্ভাগ্য। শিরোপা জয়ের লড়াইয়ে সেবার চেক প্রজাতন্ত্রের পেত্রা কেভিতোভার কাছে পরাজয় মানেন বাউচার্ড। মৌসুমের প্রথম তিন মেজর টুর্নামেন্টের তিনটিতেই ব্যর্থ। তারপরও বিশ্ব টেনিসকে চমকে দিয়ে র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ পাঁচে জায়গা করে নেন তিনি। তবে দুই বছর আগে দুর্দান্ত শুরুর সেই চমক খুব বেশিদিন ধরে রাখতে পারেননি এই কানাডিয়ান। টেনিস কোর্টে গত দুটি বছর তো একেবারেই বাজেভাবে কেটেছে তার। মেজর কোন টুর্নামেন্টেই নিজেকে মেলে ধরতে ব্যর্থ হন তিনি। যে কারণেই শীর্ষ পাঁচ তো দূরের কথা! বর্তমানে বিশ্বের শীর্ষ পঞ্চাশেও খুঁজে পাওয়া যায়নি তার নাম। এই মুহূর্তে টেনিস র‌্যাঙ্কিংয়ের ৫১তম স্থানে রয়েছেন বাউচার্ড। শুধু টেনিস কোর্টে নয়, ক্যারিয়ারের শুরুতে মডেল হিসেবেও দ্যুতি ছড়ান তিনি। তার খেলার কৌশল, অসাধারণ ব্যক্তিত্ব ও সুন্দর মুখ অবয়বের জন্য মডেলিংয়েও নাম করেন বাউচার্ড। কিন্তু কানাডিয়ান এই গ্ল্যামারগার্ল টেনিস কোর্টে নিষ্প্রভ থাকার কারণে মডেলিং থেকেও যেন আড়ালে হারিয়ে গেলেন। টেনিস বিশ্বে তরুণ খেলোয়াড়দের মধ্যে চলতি মৌসুমে আলো ছড়িয়েছেন স্পেনের গারবিন মুগুরুজা এবং পুয়ের্তো রিকোর মনিকা পুইগ। স্প্যানিশ তারকা মুগুরুজা এই মৌসুমে ফ্রেঞ্চ ওপেনের শিরোপা জিতেছেন। তাও আবার সেরেনা উইলিয়ামসকে হারিয়ে। ক্যারিয়ারের প্রথম গ্র্যান্ডস্লাম জয়ের স্বাদ পান তিনি। এর আগে তার সর্বোচ্চ অর্জন ছিল উইম্বলডনের ফাইনাল। ২০১৫ সালে শিরোপা জয়ের লড়াইয়ে এই সেরেনা উইলিয়ামসের কাছেই হেরেছিলেন মুগুরুজা। এবার যেন সেই হারের প্রতিশোধই নিয়ে নেন তিনি। মুগুরুজা ছাড়া এই মৌসুমে তরুণ প্রতিভাবান খেলোয়াড়দের মধ্যে আলোচনায় ছিলেন মনিকা পুইগ। রিও অলিম্পিকের ফাইনালে উঠে রীতিমতো অবাক করেই চ্যাম্পিয়ন হন তিনি। সেইসঙ্গে পুয়ের্তো রিকোকে প্রথম অলিম্পিক স্বর্ণপদক উপহার দেন ২২ বছরের মনিকা পুইগ। নিষেধাজ্ঞার কারণে চলতি মৌসুমের শুরুতেই টেনিস থেকে নির্বাসনে চলে যেতে হয় মারিয়া শারাপোভাকে। অন্তঃসত্ত্বা হওয়ায় কোর্টের বাইরে ছিলেন ভিক্টোরিয়া আজারেঙ্কাও। পেত্রা কেভিতোভা, সিমোনা হ্যালেপ, এ্যাগ্নিয়েস্কা রাদওয়ানস্কা কিংবা ক্যারোলিন ওজনিয়াস্কিরা মৌসুমজুড়ে আলোচনায় থাকলেও কোন গ্র্যান্ডসøাম জিততে পারেননি। যে কারণে ইউজেনি বাউচার্ডের মতো হতাশা নিয়েই এই মৌসুম শেষ করতে হবে তাদের। তবে শুরু থেকে শেষ মৌসুমের পুরোটা সময়ই যেন নিজের করে নিয়েছেন এ্যাঞ্জেলিক কারবার। প্রথমবারের মতো গ্র্যান্ডসøাম জয়। অলিম্পিকের রৌপ্যপদক। এমনকি বিশ্ব টেনিস র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষস্থানও দখল করেন এই জার্মান তারকা।
×