ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সোয়া দুই ঘণ্টা পর উদ্ধার

আওয়ামী লীগের দু’ শতাধিক নেতাকর্মী নিয়ে পদ্মার ডুবোচরে ফেরি আটকা

প্রকাশিত: ০৫:৪৩, ৯ নভেম্বর ২০১৬

আওয়ামী লীগের দু’ শতাধিক নেতাকর্মী নিয়ে পদ্মার ডুবোচরে ফেরি আটকা

স্টাফ রিপোর্টার, মুন্সীগঞ্জ ॥ শিমুলিয়া-কাওড়াকান্দি নৌপথের মুন্সীগঞ্জের লৌহজং টার্নিং পয়েন্টে পদ্মার ডুবোচরে নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খানসহ ২ শতাধিক আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী নিয়ে আটকা পড়ে রো রো ফেরি ভাষা শহীদ ডাঃ গোলাম মাওলা। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় আটকা পড়ে ফেরিটি। এ সময় নৌমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন নৌসচিব আশোক মাধব রায়, বিআইডব্লিউটিসির চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান, বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান কমোডর মোহাম্মদ মোজাম্মেল হকসহ উর্ধতন সরকারী কর্মকর্তা ও দলীয় নেতৃবৃৃন্দ। টুঙ্গিপাড়া বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে যাওয়ার পথে লৌহজং চ্যানেল থেকে আধা কিলোমিটারের মধ্যে চায়নিজ চ্যানেল পর্যন্ত ফেরিটি তিন দফায় আটকে যায়। পরে দীর্ঘ সোয়া ২ ঘণ্টা পরে ফেরিটি বিআইডব্লিউটিএর ২টি টাগবোট ও বিআইডব্লিউটিসির একটি টাগবোটসহ মোট তিনটি টাগবোট দিয়ে দুপুর পৌনে ১টার দিকে উদ্ধার করা হয়। এদিকে চ্যানেলের মুখে ফেরিটি আটকে যাওয়ায় বন্ধ হয়ে যায় এই রুটে ফেরি সার্ভিস। এ সময় কোন ফেরি ঢুকতে বা বেরোতে পারছিল না। মাঝ পদ্মায় ভাসতে ছিল ৬টি ফেরি। দু’পাড়ে আটকা পড়ে ৫ শতাধিক যান। যাত্রী দুর্ভোগ চরমে পৌঁছে। বিআইডব্লিউটিসির শিমুলিয়া ঘাটস্থ এজিএম শাহ মোঃ খালেদ নেওয়াজ জানান, সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে মুন্সীগঞ্জে লৌহজংয়ের শিমুলিয়া ঘাট থেকে রো রো ফেরি ভাষা শহীদ ডাঃ গোলাম মাওলা ফেরিতে নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান নেতা কর্মীদের নিয়ে ৪টি বাস ও ১৯টি প্রাইভেটকারে চড়ে বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে যাওয়ার জন্য উঠেন। এখানে প্রায় দুই থেকে আড়াই শ’ দলীয় নেতাকর্মী ছিল। সাড়ে ১০টার দিকে ফেরিটি লৌহজং টার্নিং পয়েন্টে পৌঁছলে ডুবোচরে আটকে যায়। এ সময় মন্ত্রীর বহনকারী ফেরিটিকে উদ্ধার করতে বিআইডব্লিউটিসির টাগবোট আইটি-৩৯৭ উদ্ধার তৎপরতা শুরু করে। ফেরিটি ওই পয়েন্ট থেকে উদ্ধার হয়ে একটু আগাতেই আবারও একটি ডুবোচরে আটকা পড়ে। তখন আইটি-৩৯৭-এর সঙ্গে যোগ দেয় বিআইডব্লিউটিএর উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ইঞ্জিনের জাহাজ আশা ও ক্ষণিকা। এই তিনটি জাহাজ নৌপরিবহনমন্ত্রীর ফেরিটি সেখান থেকে উদ্ধার করলেও আরও একটি পয়েন্টে মন্ত্রীর ফেরিটি আবারও আটকে যায়। এভাবে লৌহজং টার্নিং পয়েন্ট থেকে চায়নিজ চ্যানেল পর্যন্ত মন্ত্রীর ফেরিটি তিন দফা আটকা পড়ে। তিনটি জাহাজ মিলে মন্ত্রীর ফেরিটিকে সোয়া দুই ঘণ্টা চেষ্টার পরে দুপুর পৌনে ১টার দিকে ফেরিটিকে চ্যানেল অতিক্রম করাতে সক্ষম হয়। কিন্তু তার আগেই মন্ত্রীর সঙ্গে থাকা অন্যান্য নেতাকর্র্মীরা সিবোট যোগে পদ্মা পাড়ি দিয়ে বিকল্প পথে টুঙ্গিপাড়া চলে যায়। এদিকে প্রধানমন্ত্রীর টুঙ্গিপাড়া পৌঁছার সময় হয়ে যাওয়ায় অবশেষে ফেরি উদ্ধার হওয়ার কিছুক্ষণ আগে নৌপরিবহনমন্ত্রীও ফেরি থেকে সিবোট যোগে কাওড়াকান্দি গিয়ে বিকল্প পথে টুঙ্গিপাড়া রওনা হন। অপরদিকে মন্ত্রীর ফেরিটি চ্যানেলে আটকে পড়ায় এই সময় কোন ফেরিই পদ্ম পাড়ি দিতে পারেনি। চ্যানেলের উভয় দিকে আটকা পড়ে ৬টি ফেরি। এই ছয়টি ফেরি যাত্রী ও যানবাহন নিয়ে পদ্মায় ভেসেছিল দীর্ঘ এই সোয়া দুই ঘণ্টা। খালেদ নেওয়াজ আরও জানান, গোলাম মাওলা ফেরিটি যখন ছেড়ে যায় তখন এটির নিচের অংশ পানির নিচে সাড়ে ছয় ফুট ডুবে ছিল। অথচ রো রো ফেরির চলাচলের জন্য সাড়ে ছয় থেকে সাত ফুটের মতো পানির গভীরতা দরকার হয়। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে চ্যানেলে পর্যাপ্ত পানি নেই। তাই এক রকম ঝুঁকি নিয়েই চলতে হচ্ছে ফেরিগুলোকে।
×