ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

চিটাগাংয়ের জয়ে শুরু বিপিএল

প্রকাশিত: ০৫:৪১, ৯ নভেম্বর ২০১৬

চিটাগাংয়ের জয়ে শুরু বিপিএল

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ আমাদের ব্যাটসম্যানরা ব্যর্থ হয়েছে। ভুল শট খেলে আউট হয়েছে। -কথাগুলো বলেছেন বর্তমান চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। মঙ্গলবার যার ক্রিকেট ক্যারিয়ারের ১৫ বছর পূর্তি হলো। প্রথম ম্যাচটি খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। জিতে অনেক ভাল লাগছে। -কথাগুলো বলেছেন চিটাগাং ভাইকিংসের অধিনায়ক তামিম ইকবাল। যিনি চিটাগাংয়ের হয়ে সর্বোচ্চ ৫৪ রানের ইনিংস খেলেছেন। এ দুইদলের মধ্যকার বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগের (বিপিএল টি২০) চতুর্থ আসরের প্রথম ম্যাচটি হয়। দুই অধিনায়কের কথাতেই স্পষ্ট, কোন দল জিতেছে। চিটাগাং ভাইকিংস ২৯ রানে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে হারিয়ে দিয়েছে। চিটাগংয়ের সূচনাটা হয়েছে দারুণ। আর কুমিল্লার শুরুটা হয়েছে হার দিয়ে। তাতে করে ১৫ বছর পূর্তিটি আনন্দময় হলো না মাশরাফির। বোলিংয়ে কিছুই করতে পারেনি কুমিল্লা। মাত্র ৩ উইকেট হারায় চিটাগাং। তাও আবার দুটি রান আউট হয়েছে। বাংলাদেশ ওপেনার তামিম ইকবালের ৫৪, পাকিস্তান অলরাউন্ডার শোয়েব মালিকের অপরাজিত ৪২, জহুরুল ইসলাম অমির অপরাজিত ২৯ ও এনামুল হক বিজয়ের ২২ রানে স্কোরবোর্ডে ১৬১ রান জমা করে চিটাগাং। তাও আবার টুর্নামেন্টের মাঝপথে এসে ৫ ম্যাচ খেলার সম্ভাবনায় থাকা ওয়েস্ট ইন্ডিজের দানবীয় ব্যাটসম্যান ক্রিস গেইলকে ছাড়াই এমন স্কোর করে চিটাগাং। ব্যাটিংয়ে পুরোই দুর্বলতা ধরা পড়েছে কুমিল্লার। নাজমুল হোসেন শান্ত (৫৪*) শুধু দুর্দান্ত ব্যাটিং করতে পেরেছেন। শেষ ওভারে যখন কুমিল্লার জিততে ৪৮ রান লাগে, তখন তাসকিনের করা ওভারে ৬ বলের মধ্যে প্রথম চার বলে বাউন্ডারি হাঁকান। শেষ বলে ২ রান নিয়ে এক ওভারেই ১৮ রান নেন শান্ত। তাতেও জিততে ৩০ রান শর্ট থাকে। বাকি ব্যাটসম্যানরা এমনই ব্যর্থ হলে হারই হয় নিয়তি। ৮ উইকেট হারিয়ে ২০ ওভারে ১৩২ রানের বেশি করতে পারেনি কুমিল্লা। ঠিক গত আসরের মতোই শুরু হলো কুমিল্লার। প্রথমদিন নিজেদের প্রথম ম্যাচেই হেরেছিল কুমিল্লা। এবারও তাই হলো। তবে গত আসরে শেষ পর্যন্ত চ্যাম্পিয়ন হয় কুমিল্লাই। এবার কী হবে? তা সময়ই বলবে। তবে কুমিল্লার চেয়ে চিটাগাং অনেক শক্তিশালী দল। এমনকি কাগজে-কলমে এবার বিপিএলের সেরা দলগুলোর একটি চিটাগাং। এরপরও চিটাগাংকে নিয়ে সবার ভেতরই আছে শঙ্কা। কারণ গত আসরেও যে শক্তিশালী দল নিয়ে কিছুই করতে পারেনি চিটাগাং। ১০ ম্যাচের মধ্যে ৮টিতেই হারে! লীগ পদ্ধতি শেষে ৬ দলের মধ্যে ৪ পয়েন্ট নিয়ে সবার নিচে অবস্থান হয়েছিল। তবে গত আসরের মতো এবার খারাপ শুরু হয়নি চিটাগাংয়ের। এবার অন্যরকম দল চিটাগাং এবং জয় দিয়েও শুরুটা করেছে। আর চিটাগাংয়ের এই ভাল শুরুতে একজন বিদেশী ক্রিকেটার আফগানিস্তান অলরাউন্ডার মোহাম্মদ নবীই ম্যাচ জয়ের নায়ক হয়েছেন। তিনি একাই ৪ উইকেট তুলে নিয়েছেন। চিটাগাংয়ের ব্যাটিং যেমন, বোলিংও অনেক শক্তিশালী। একদিকে স্পিন আক্রমণে অভিজ্ঞ স্পিনার আব্দুর রাজ্জাক, মালিক ও নবী আছেন। আরেকদিকে পেস আক্রমণে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ডোয়াইন স্মিথ, তাসকিন আহমেদ ও ইংল্যান্ডের হয়ে মাত্র ১টি টি২০ খেলা টাইম মিলস রয়েছেন। নবী উইকেট নিয়েছেন ঠিকই। তবে মিলস গতির ঝড় তুলেছেন। বাউন্স দিয়ে কুমিল্লা ব্যাটসম্যানদের কাঁপিয়ে তুলেছেন। মিলসের কথা তাই বিশেষভাবে বলতেও হয়েছে মাশরাফিকে, মিলসের বলে যে গতি, তা খেলে আমাদের ব্যাটসম্যানরা অভ্যস্ত নয়। মাশরাফির কথাতেই বোঝা যাচ্ছে মিলস ব্যবধান গড়ে দিয়েছেন। গতি ও বাউন্স বাদ দিয়ে একবারতো স্লো বল দিয়ে দেন মিলস। আর তাতেই বোকা বনে গিয়ে বোল্ড হয়ে যান মাশরাফি নিজেই। মিলসের মতোই গতি চিটাগাং দলেও দেখা যাচ্ছে। সেই গতি আর আত্মবিশ্বাসে কুমিল্লাকে হারিয়ে দিয়ে টুর্নামেন্টে শুভ সূচনা করেছে। চিটাগাংয়ের জয় দিয়ে বিপিএলের চতুর্থ আসরও শুরু হলো।
×