ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

রিমান্ডে নব্য জেএমবি

ঢাকায় তারা আরেকটি বড় হামলা চালাত

প্রকাশিত: ০৫:৫৪, ৮ নভেম্বর ২০১৬

ঢাকায় তারা আরেকটি বড় হামলা চালাত

শংকর কুমার দে ॥ আমের ঝুড়িতে করে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ থেকে অস্ত্র ও গোলাবারুদ আনা হয়েছে ঢাকায়। ঢাকায় অস্ত্র ও গোলাবারুদ আসার পর তা গ্রহণ করেছে নব্য জেএমবির শীর্ষস্থানীয় জঙ্গী নিহত তামিম আহমেদ চৌধুরী ও পলাতক নুরুল ইসলাম মারজান। ঢাকায় নব্য জেএমবির জন্য অস্ত্র পাঠাত ভারতের পশ্চিমবঙ্গে গ্রেফতারকৃত ত্রিশালে প্রিজনভ্যান থেকে তিন জেএমবি সদস্য ছিনতাইয়ের হোতা জেএমবির নেতা আনোয়ার হোসেন ফারুক ওরফে জামাই ফারুক। স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীতে এই কথা বলেছে গুলশান হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গী হামলার জন্য অস্ত্র ও গোলাবারুদ সরবরাহের অভিযোগে গ্রেফতারকৃত নব্য জেএমবির চার সদস্য। রাজধানীর গুলশান হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গী হামলায় ব্যবহৃত অস্ত্র ও গোলাবারুদ সরবরাহকারী গ্রেফতার হওয়া চার জন নব্য জেএমবির সদস্য মোঃ আবু তাহের (৩৭), মিজানুর রহমান (৩৪), মোঃ সেলিম মিয়া (৪৫) ও তৌফিকুল ইসলাম ওরফে ডাঃ তৌফিক (৩২) তিন দিনের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিট। পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিট সূত্রে এ খবর জানা গেছে। তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানান, জেএমবির চার জঙ্গীকে রিমান্ডে আনার পর জিজ্ঞাসাবাদে দেয়া জবানবন্দীতে বলেছে, তারা ধরা না পড়লে এসব ডেটনেটর হ্যান্ডগ্রেনেডের মাধ্যমে ঢাকার কোন একটি এলাকায় বড় ধরনের নাশকতা চালাতে এসব গ্রেনেড ব্যবহার করা হতো। গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে বিদেশীদের টার্গেট করে হত্যার আগেও নব্য জেএমবির সাবেক সমন্বয়ক তামিম চৌধুরী (নিহত) তাদের কাছ থেকে অস্ত্র গ্রেনেড নিয়েছিল দাবি করে মিজান জবানবন্দীতে বলেছে, গুলশান হামলার আগে তামিম চৌধুরীর সঙ্গে তার কথা হয়েছিল। চাঁপাইনবাবগঞ্জের বেশ কয়েকজন অস্ত্র ব্যবসায়ী তামিমকে গুলশান হামলার জন্য অস্ত্র গ্রেনেড দিয়ে সহযোগিতা করেছিল। তারা সবাই জেএমবি সদস্য। ওই গ্রেনেড অস্ত্র ব্যবহার করে গুলশান ও শোলাকিয়ায় হামলা চালায় নব্য জেএমবি। আর এসব অস্ত্র পাকিস্তানের জঙ্গী নেতাদের মাধ্যমে ভারতীয় সীমান্ত হয়ে দেশে ঢুকছে। জবানবন্দীতে মিজানুর রহমান জানিয়েছেন, পুরাতন জেএমবির সদস্যরাই চাঁপাইনবাবগঞ্জের বড় অস্ত্র ব্যবসায়ী। তিনি ছাড়াও জেএমবি নেতা বড় মিজান, রবিউল,জেল্টু, লাল্টুসহ অন্তত ৪০ জন সীমান্তে অস্ত্র ব্যবসায় সম্পৃক্ত। সীমান্ত এলাকায় তিনি ছোট মিজান নামে পরিচিত। তিনি ধরা পড়লেও বড় মিজান এখন চাঁপাইনবাবগঞ্জের জেএমবির অস্ত্র ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ করছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ থানার ভারতীয় সীমান্ত এলাকায় জেএমবির অস্ত্র ও বিস্ফোরক মজুদ আছে দাবি করে মিজান বলেছে, দীর্ঘদিন ধরে অস্ত্র চোরাচালানের সঙ্গে জেএমবি নেতারা জড়িত। গত বুধবার রাতে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের কাউন্টার টেররিজম এ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি) গত বুধবার রাতে রাজধানীর দারুস সালাম থানাধীন গাবতলী বাস টার্মিনাল এলাকায় গ্রেফতার করে। বৃহস্পতিবার তাদের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। সিটিটিসি সংশ্লিষ্টদের দাবি, তিন দিনের রিমান্ডে আনার পর গ্রেফতারকৃতদের দলনেতা মিজানুর স্বীকার করেছে, গুলশান হত্যাযজ্ঞে ব্যবহƒত অস্ত্র ও সরঞ্জাম পুরাতন জেএমবি অর্থাৎ তারাই সরবরাহ করেছিল। ছোট মিজান ছাড়াও বড় মিজানও গুলশান হামলার অন্যতম পরিকল্পনাকারী তামিম চৌধুরী (নিহত) ও নুরুল ইসলাম মারজানের (পলাতক) সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ছিল। গুলশান হামলার আগে তামিম ও মারজানের হাতে গ্রেনেড বানানোর উপকরণ ও অস্ত্র তুলে দিয়েছিল এরা দুজনসহ পুরাতন জেএমবির শীর্ষ নেতারা।
×