ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

মাছ চাষের নামে হরিলুট

বরিশালে ভুয়া সমিতির নামে প্রকল্প

প্রকাশিত: ০৬:৪০, ৭ নভেম্বর ২০১৬

বরিশালে ভুয়া সমিতির নামে প্রকল্প

স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ খাল পুনঃখনন ও জলাশয় সংস্কারের মাধ্যমে মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধি প্রকল্পে নামেমাত্র কাজ সম্পাদন করে পুরো টাকা উত্তোলন করে লাপাত্তা হয়েছে চুক্তিবদ্ধ কথিত সমিতির দুই নেতা। গত ছয় মাসে ওই প্রকল্পে একটি মাছের পোনাও অবমুক্ত করা হয়নি। ফলে স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনাটি ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের পার্শ্ববর্তী গৌরনদী উপজেলার বার্থী ইউনিয়নের সাউদের খালের। জানা গেছে, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রলাণয়ের অধীনে জলাশয় সংস্কারের মাধ্যমে মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধি প্রকল্পে সাউদের খালের ৪.৪২ হেক্টর পুনঃখননের পর মাছের পোনা অবমুক্ত করার প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। ৫৬ লাখ টাকা ব্যয়ের এ প্রকল্পে জলায়তন ধরা হয় ২.৯৫ হেক্টর ও মোট মাটির কাজের পরিমাণ ধরা হয় ৪৪ হাজার ৯৯১ ঘনমিটার। সূত্রে আরও জানা গেছে, সাউদেরখালপাড় ভূমিহীন সমিতির সুফলভোগী ২৭ পুরুষ ও নয় নারী সদস্যর নাম ব্যবহার করে সম্পূর্ণ প্রতারণার মাধ্যমে ওই প্রকল্পের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয় কথিত সমিতির দলনেতা ওই এলাকার (দীর্ঘদিন থেকে ঢাকায় বসবাসরত) হাফিজুর রহমান ও জহিরুল হক চৌধুরী। স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, ভূমিহীন সমিতির নামে ওই এলাকায় কোন সমিতি নেই। সূত্রে আরও জানা গেছে, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি কিংবা উপজেলা পর্যায়ের সরকারী কোন কর্মকর্তাকে না জানিয়েই গত ৫ মে তড়িঘড়ি মেশিনের সাহায্যে খালের দুই পাড়ে বসবাসরত জনসাধারণের বসতঘর, গাছপালা, পানের বরজ বিনষ্ট করে নামেমাত্র খাল খনন করা হয়। এছাড়া খাল পারাপারের জন্য আকন বাড়ির সামনের সরকারী একমাত্র ব্রিজটির গোড়ার মাটি মেশিন দিয়ে সরিয়ে ফেলায় জনগুরুত্বপূর্ণ ওই ব্রিজটি এখন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। স্থানীয়রা আরও অভিযোগ করেন, ৫ মে থেকে শুরু করে ৩১ মের মধ্যে খাল পুনঃখনন করার কথা থাকলেও তড়িঘড়ি করে মাত্র সাতদিনের মধ্যেই নামেমাত্র খাল খনন করা হয়। গত ছয় মাসে একটি মাছের পোনাও ওই খালে অবমুক্ত করা হয়নি। এমনকি কথিত সমিতির ওই দুই নেতাকেও আর এলাকায় খুঁজে পাওয়া যায়নি। এ ব্যাপারে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান প্যাদা আক্ষেপ করে বলেন, আমার এলাকায় এতবড় উন্নয়ন কাজ হয়েছে অথচ আমি কিছুই জানি না। তিনি আরও বলেন, ঢাকার বাসিন্দা হাফিজুর রহমান ও জহিরুল হক চৌধুরী ভুয়া সমিতির নাম ব্যবহার করে নামেমাত্র খাল খননের নামে সরকারের পুরো টাকা আত্মসাত করে স্থানীয়দের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করেছেন। তিনি প্রতারণার মাধ্যমে সরকারী টাকা আত্মসাতের ঘটনার সঠিক তদন্ত করে প্রতারক হাফিজুর রহমান ও জহিরুল হক চৌধুরীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি করেছেন।
×