ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

রাজশাহীতে বোমা বিস্ফোরণে উড়ে গেল জেএমবি জঙ্গীর দুই হাতের কব্জি

প্রকাশিত: ০৫:৪০, ৭ নভেম্বর ২০১৬

রাজশাহীতে বোমা  বিস্ফোরণে উড়ে গেল জেএমবি জঙ্গীর দুই হাতের কব্জি

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ রাজশাহীর পুঠিয়ায় বোমা তৈরির সময় বিস্ফোরণে আব্দুল খালেক নামে এক জেএমবি সদস্যের দুই হাতের কব্জি উড়ে গেছে। শনিবার রাত আটটার দিকে বেলপুকুর ইউনিয়নের তাড়াশ গ্রামের সোহরাব হোসেন সৌরভ নামে এক ব্যক্তির বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। আহত জেএমবি সদস্য খালেক চারঘাটের গোপালপুর গ্রামের আবু বক্করের ছেলে। তাকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে পুলিশ হেফাজতে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। ঘটনার পর পুলিশ ওই বাড়িসহ খালেকের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে বেশ কিছু বোমা, অস্ত্র ও জিহাদী বই উদ্ধার করে। আহত খালেক জঙ্গী সংগঠন জেএমবির সঙ্গে জড়িত বলে পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে। এ ঘটনায় পুঠিয়া ও চারঘাট থানায় পৃথক মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ জানায়, শনিবার সন্ধ্যায় তাড়াশ গ্রামের সোহরাব হোসেন সৌরভের বাড়িতে যান তার জামাই বুলবুল ও খালেক। বুলবুলের শাশুড়ি ও শ্যালক জাহিদ ছাড়া ওই বাড়িতে তখন আর কেউ ছিল না। রাতে জাহিদের ঘরে বোমা বানানোর সময় বিস্ফোরণে খালেকের দুই হাতের কবজি উড়ে যায়। এ ঘটনার পর বুলবুল ও জাহিদ বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। বোমা বিস্ফোরণের শব্দ শুনে স্থানীয় লোকজন গিয়ে খালেককে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে পুলিশকে খবর দেয়। পরে পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। পুঠিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হাফিজুর রহমান হাফিজ বলেন, রাতে পুলিশ ওই বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে ৫টি হাতেবোমা ও ৫টি জিহাদী বইসহ বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করে। এর পর পুলিশ গভীর রাতে চারঘাটের গোপালপুর গ্রামে খালেকের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে তিনটি পেট্রোল বোমাসহ ৫টি হাতবোমা, ৫টি চাপাতি ও ২টি চাইনিজ কুড়াল উদ্ধার করে। এ ছাড়াও তার বাড়ি থেকে উগ্র মতাদর্শের বইয়ের বেশ কিছু ফটোকপি উদ্ধার করে পুলিশ। ওসি আরও বলেন, এ ঘটনায় পুঠিয়া ও চারঘাট থানায় পৃথক চারটি মামলা করা হয়েছে। বিস্ফোরক দ্রব্য ও সন্ত্রাস বিরোধী আইনে দায়ের করা চারটি মামলা করা হয়। মামলায় আহত খালেক, বুলবুল ও জাহিদকে আসামি করা হয়েছে বলে ওসি জানান। চারঘাট মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নিবারণ চন্দ্র বর্মণ বলেন, খালেকের বিরুদ্ধে থানায় কোন অভিযোগ নেই। তবে তার পরিবার ও আশপাশের লোকজন এবং তার শয়নকক্ষ থেকে উদ্ধার জিহাদী কাগজপত্র দেখে নিশ্চিত হওয়া গেছে সে জেএমবির সঙ্গে জড়িত। সে জেএমবির কোন পর্যায়ের নেতা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ওসি আরও বলেন, খালেক চারঘাটের এমএ হাদি ডিগ্রী কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের অনিয়মিত ছাত্র। তবে বেশির ভাগ সময় সে বাড়ির মধ্যে নিজ ঘরে দরজা বন্ধ করে থাকত। কারও সঙ্গে তেমন মিশত না। নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়লেও মসজিদে নামাজ পড়তে যেত না। ছয় ভাইয়ের সবার ছোট খালেক। তার এক ভাই মাজেদুল ইসলাম মালয়েশিয়াতে থাকেন। ওসি বলেন, খালেক তার চাচাত ভাই লালনের সঙ্গে বেশি চলাফেরা করত। লালন ছিল জেএমবির নেতা ও বোমা তৈরির কারিগর। গত ১১ জুন ৫টি হাত বোমা ও বিপুল পরিমাণ জিহাদী বইসহ লালন গ্রেফতার হয়। এর পর থেকে লালন কারাগারে রয়েছে। এর আগে ২০০৬ সালে লালন গ্রেফতার হয়। পরে জেএমবির একটি মামলায় তার ৭ বছর সাজা হয়। দ্বিতীয় বার গ্রেফতার হওয়ার কয়েক মাস আগে সে জামিনে ছাড়া পায়। এর পর সে আবারও জেএমবির কর্মকা-ে জড়িয়ে পড়ে।
×