ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মিয়ানমারের সঙ্গে বাণিজ্য বিনিয়োগ বৃদ্ধির দ্বার খুলছে

প্রকাশিত: ০৫:৩৯, ৭ নভেম্বর ২০১৬

মিয়ানমারের সঙ্গে বাণিজ্য বিনিয়োগ বৃদ্ধির দ্বার খুলছে

এম শাহজাহান ॥ প্রতিবেশী রাষ্ট্র মিয়ানমারের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির দ্বার খুলে যাচ্ছে। গত কয়েক বছরে দেশটির সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য বেড়েছে। এ সম্পর্ক আরও প্রসারিত করতে কাজ করছে বাংলাদেশ-মিয়ানমার। এ লক্ষ্যে এবার অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য সুবিধা চালুর পক্ষে দু’দেশ। আসন্ন অষ্টম যৌথ বাণিজ্য কমিশনের বৈঠকে এ সংক্রান্ত একটি চুক্তি করা হতে পারে। এছাড়া মিয়ানমারের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বৃদ্ধিতে এলসির মাধ্যমে আমদানির সুযোগ চায় বাংলাদেশ। এর আওতায় দু’দেশের মধ্যে সীমান্ত বাণিজ্য বাড়াতে সড়ক, রেল ও নৌ যোগাযোগ বৃদ্ধির উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে দু’দেশের সীমান্তে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ রক্ষা, নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারসহ সীমান্ত এলাকার মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নসহ নানা বিষয়ে কাজ করতে আগ্রহী দুই দেশ। খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রের। জানা গেছে, দু’দেশের মধ্যকার বাণিজ্যিক সম্পর্কোন্নয়নের বিষয়ে আগামী ৯ নবেম্বর ঢাকায় আসছে মিয়ানমারের একটি বাণিজ্য প্রতিনিধি দল। এর পরই আগামী ১০-১১ নবেম্বর রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে দু’দিনব্যাপী ঢাকা-নেইপিদো যৌথ বাণিজ্য কমিশনের (জেটিসি) সচিব পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। ওই বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে নৌ প্রটোকল চুক্তি নিয়ে আলোচনার কথা রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে থাকা দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য চুক্তি প্রিফারেন্সিয়াল ট্রেড এ্যাগ্রিমেন্ট (পিটিএ) বা অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তির উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হতে পারে বৈঠকে। এরই মধ্যে দুই দেশ ওই বাণিজ্য চুক্তির একটি খসড়া তৈরি করেছে। এতে সীমান্তপথে মিয়ানমার থেকে কৃষিপণ্য, বস্ত্র, জুতা, খেলনা, খাদ্যসামগ্রী আমদানি অবাধ করার কথা বলা হয়েছে। একই সঙ্গে বাংলাদেশ থেকে তৈরি খাদ্যসামগ্রী, টয়লেট্রিজসামগ্রী রফতানির কথা উল্লেখ আছে। দুই দেশই কিছু পণ্যের ওপর শুল্ক একেবারে তুলে নিতে সম্মত হয়েছে। মিয়ানমারের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতিতে রয়েছে বাংলাদেশ। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন জনকণ্ঠকে বলেন, মিয়ানমারের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। ভৌগোলিক অবস্থানের কারণেই এ দেশটির সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক রয়েছে। তবে এখন যা হচ্ছে তার সবই প্রায় বর্ডার ট্রেড। এ ট্রেড ব্যাংকিং সিস্টেমের মধ্যে নেয়া গেলে আমদানি-রফতানি বাড়বে। এতে উভয় দেশ লাভবান হবে। আগামী জেটিসি বৈঠকে এসব বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে আলোচনা করবে সরকার। আশা করা হচ্ছে, বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো মিয়ানমারের সঙ্গেও বাংলাদেশের বাণিজ্য বৃদ্ধি পাবে। তিনি বলেন, বাণিজ্য বাড়াতে এফটিএ এবং পিটিএ করার বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করা হচ্ছে। এবারের বৈঠকেও এ বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে পর্যালোচনা করবে সরকার। এদিকে, দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে বাণিজ্যের ধারাকে উন্নয়নের লক্ষ্যে চীন সরকার ওয়ান ওয়ে-ওয়ান বেল্ট নামে একটি প্রকল্প গ্রহণ করেছে। ওই প্রকল্পের আওতায় চীনের কুনমিং শহর হবে এ অঞ্চলের ব্যবসা-বাণিজ্যের মূল কেন্দ্র। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমার হয়ে চীনের কুনমিং পর্যন্ত সড়ক যোগাযোগ স্থাপন করা হবে। চীনের প্রস্তাবিত প্রকল্প বাস্তবায়নে বাংলাদেশ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মধ্যে করিডর হলে মিয়ানমারের জন্য একটি ভাল সুযোগ সৃষ্টি হবে। বিষয়টি আমলে নিয়ে একটি অর্থনৈতিক করিডর প্রতিষ্ঠায় আগ্রহী বাংলাদেশ, চীন, ভারত ও মিয়ানমার।
×