ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

ভারত-ইংল্যান্ড সিরিজ

আত্মবিশ্বাস নিয়ে খেলতে চায় ইংলিশরা

প্রকাশিত: ০৬:২৬, ৬ নভেম্বর ২০১৬

আত্মবিশ্বাস নিয়ে খেলতে চায় ইংলিশরা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ঢাকা টেস্টে হারের গ্লানি ভুলে আত্মবিশ্বাসী হতে চাইছে ইংলিশরা। ভারতের মাটিতে দীর্ঘ সিরিজ সামনে রেখে দলের জন্য এটিই এখন প্রথম কাজ বলে মনে করছেন কোচ ট্রেভর বেইলিস ও তারকা ব্যাটসম্যান জো রুট। ভারতে বাইরের দলগুলোর জন্য স্পিন সামলানোটাই বড় চ্যালেঞ্জ। মেহেদী হাসান মিরাজ ও সাকিব-আল হাসানের ঘূর্ণিতে কুপোকাত ইংল্যান্ডের জন্য রবিচন্দ্রন অশ্বিন আর রবীন্দ্র জাদেজা যে বিভীষিকা হয়ে হাজির হবেন সেটি অনুমেয়। ইংলিশ গ্রেট গ্রায়েম সোয়ানও সেটি মনে করিয়ে দিয়েছেন। সর্বোপরি মাঠের দ্বৈরথের আগে শিষ্যদের মাঝে ঘুরে দাঁড়ানোর মন্ত্র জপে দিচ্ছেন বেইলিস। ইংলিশরা অতীতে অনেকবার সেটি করে দেখিয়েছে বলেও মন্তব্য করেছেন হাইপ্রোফাইল এ অস্ট্রেলিয়ান। ওদিকে সহসা আদালতের রায়কে কেন্দ্র করে লোধা কমিশন ও ইন্ডিয়ান বোর্ডের (বিসিসিআাই) মধ্যকার দ্বন্দ্বের অবসান হবে বলে খবরে প্রকাশ। বুধবার রাজকোটে প্রথম টেস্ট দিয়ে শুরু আলোচিত পাঁচ টেস্টের দীর্ঘ এই সিরিজ। ইংল্যান্ড ব্যাটিংয়ের অন্যতম স্তম্ভ রুট বলেন, ‘বাংলাদেশের কাছে ওই রকম একটা হার নিশ্চই যন্ত্রণাদায়ক। কিন্তু ভাল দিক হচ্ছে, শুধরানোর জন্য আমরা সময় পাচ্ছি। প্রস্তুতিতে ঘাম ঝরাচ্ছি। সবাই নিজেদের সামর্থ্য সম্পর্কে আত্মবিশ্বাসী হতে চাইছি। সন্দেহ নেই ভারত মারাত্মক দল। কিন্তু আমরা দেখাতে চাই, আমাদের পক্ষে এখনে ভাল করা সম্ভব।’ আর বস ট্রেভর বেইলিসের মতে, ‘অতীতে দক্ষিণ আফ্রিকা ও অস্ট্রেলিয়ার মতো কঠিন সিরিজে হেরেও আমরা ঘুরে দাঁড়িয়েছি। এবার না পারার কোন কারণ নেই।’ বাংলাদেশ ধাক্কার পর ইংল্যান্ড ব্যাটসম্যানরা কিভাবে ভারতীয় স্পিানরদের সামলবে, সেটি নিয়েই বেশি আলোচনা হচ্ছে। পাশাপাশি স্পিনে অতিথিদের ভরসা মঈন আলী ও আদিল রশীদরা কি বিরাট কোহলিদের কাছে পাত্তা পাবেন? সেই প্রশ্নও উঠছে। গ্রেট ইংলিশ স্পিনার গ্রায়েম সোয়ান মনে করেন পূর্বসূরি স্পিনারদের জন্য কঠিন বিপদ অপেক্ষা করছে। এজন্য তিনি নিজেদের মানসিকতাকেই দায়ী করেছেন। ২০১২ সালে ভারত সফরে ২-১ ব্যবধানে ইংল্যান্ডের সিরিজ জয়ে মুখ্য ভূমিকা পালন করা সোয়ান মনে করেন বর্তমান ভারতীয় দলের বিপক্ষে ইংলিশদের সে সফরের পুনরাবৃত্তি ঘটানোর কোন সম্ভাবনাই নেই। কারণ ইংল্যান্ডে নাকি স্পিনারদের তৃতীয় শ্রেণীর নাগরিক হিসেবে গণ্য করা হয়! ‘আমি এবং মন্টি ছিলাম প্রকৃতির দান। আমরা উত্তরাঞ্চলে বেড়ে উঠেছি। তবে ননটার্নিং পিচে ভাল করার লক্ষ্যে আমি নটিংহ্যামশায়ারে চলে আসি। ইংল্যান্ডে আমরা স্পিনকে মোটেই গুরুত্বের সঙ্গে নেইনি। তবে উপমহাদেশ সফরে আসল সত্যিটা উপলব্ধি করলাম যে, আমাদের বিশ্বমানের স্পিনার নেই।’ সে বছর ভারত সফরে ইংল্যান্ড দলের সাফল্য এনে দিয়েছিলেন সোয়ান এবং তার সতীর্থ মন্টি পানেসার। ইংল্যান্ডের ঘরোয়া ক্রিকেটে ব্যাটিং, ফাস্ট বোলিং, ফিল্ডিং, ফিটনেস এবং পুষ্টির কথা বিবেচনা করা হয়, স্পিন বোলিং নিয়ে সেভাবে ভাবা হয় না বলে মনে করেন সোয়ান। উপমহাদেশে সফল হতে এ ধারণার পরিবর্তন চান তিনি। ওদিকে বিসিসিআই ই-মেইল করে ইংল্যান্ড বোর্ডকে (ইসিবি) মেইল করে জানিয়ে দিয়েছে যে, তাদের পক্ষে সফরকারীদের খরচ বহন করা সম্ভব নয়। অতিথি ইংলিশরা যেন নিজেদের খরচ নিজেরাই মেটায়। এ নিয়ে ইসিবির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দেয়া হয়নি। কিন্তু দু’দেশের বোর্ডের তরফ থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে টেস্ট সিরিজের প্রস্তুতিতে কোন পরিবর্তন নেই। ইসিবির মুখপাত্র বলেন, ‘সিরিজের সূচীতে কোন পরিবর্তন হয়নি। ইন্ডিয়ান বোর্ডের এক কর্তাকে উদ্ধৃত করে জানান হয়েছে, সিরিজ নিয়ে দু’দেশের মধ্যে ‘মউ’ (দৈনন্দিন খরচের আনুষ্ঠানিক পরিকল্পনা) পরে করলেও চলবে। কারণ, টিম হোটেলগুলোর সঙ্গে বিসিসিআইর চুক্তি আগে থেকেই হয়ে আছে। ঝামেলা হতে পারে কেবল ক্রিকেটারদের দৈনিক ভাতা নিয়ে। দীর্ঘ দুই মাসের সফর হিসেব করলে সেটিও কম অঙ্কের নয়। আদালতের রায় অনুযায়ী লোধা কমিশনের অনুমতি ছাড়া আবার বিসিসিআই অতিথিদের সেই অর্থ দিতে পারবে না!
×