ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

দেশীয় কোম্পানিকে সুদানে পাট রফতানির পক্ষে মত দিল আইন মন্ত্রণালয়

প্রকাশিত: ০৫:৫৯, ৬ নভেম্বর ২০১৬

দেশীয় কোম্পানিকে সুদানে পাট রফতানির পক্ষে মত দিল আইন মন্ত্রণালয়

জনকণ্ঠ রিপোর্ট ॥ আইন মন্ত্রণালয় সুদানী ব্যবসায়ীর কাছে পাট পণ্য বিক্রির চুক্তি বাতিলের মতামত দিয়েছে। সম্প্রতি বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়কে এই মতামত জানিয়ে দেয়া হয়েছে। দেশীয় একটি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি থাকা সত্ত্বেও বিজেএমসি সুদানে পাট পণ্য বিক্রির জন্য এক সুদানী ব্যবসায়ীর সঙ্গে চুক্তি করে। ফলে সুদানে পাটের ব্যাগ রফতানির জন্য বাংলাদেশী কোম্পানির সাড়ে তিনশ’ কোটি টাকার অর্ডার হাতছাড়া হওয়ার উপক্রম হয়। এ ব্যাপারে বাংলাদেশী কোম্পানিটি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের হস্তক্ষেপ চাইলে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত চায়। আইন মন্ত্রণালয় ওই সুদানী ব্যবসায়ীর সঙ্গে করা বিজেএমসির চুক্তিতে অবৈধ আখ্যায়িত করে তা বাতিলের মতামত দিয়েছে। জানা যায়, রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল সংস্থা বিজেএমসি সুদানে পাট পণ্য বিক্রির জন্য বাংলাদেশের গোল্ডেন ফাইবার ট্রেড সেন্টারের সঙ্গে চুক্তি করে। সেই সঙ্গে গোল্ডেন ফাইবারকে সুদানে সরকারীভাবে পাট পণ্য বিক্রির জন্য একক এজেন্ট নিয়োগ দেয়া হয়। চুক্তি অনুযায়ী, সুদানের তিনটি সরকারী প্রতিষ্ঠান এগ্রিকালচারাল ব্যাংক অব সুদান, সুদান কটন কোম্পানি লিমিটেড এবং ফার্মার্স কমার্শিয়াল ব্যাক এই কোম্পানির মাধ্যমে বাংলাদেশের বিজেএমসির কাছ থেকে পাট পণ্য ক্রয় করে থাকে। সুদান একটি কৃষিপ্রধান দেশ বিধায় সেদেশের সরকার কৃষি পণ্য সংরক্ষণের জন্য কৃষকদের পাটের ব্যাগ সরবরাহ করে। এর উদ্দেশ্য হচ্ছেÑ বেসরকারী কোম্পানি যাতে বাজারে পাটের ব্যাগের কৃত্রিম সঙ্কট সৃষ্টি করতে না পারে। সুদানে প্রতি বছর প্রায় এক থেকে দেড় লাখ বেল পাটের ব্যাগের প্রয়োজন হয়। কিন্তু এই চুক্তি সত্ত্বেও বিজেএমসির একটি স্বার্থান্বেষী মহল সুদানে পাট পণ্য বিক্রির জন্য আমিন আবদেল লতিফ নামে এক সুদানী ব্যবসায়ীর সঙ্গে চুক্তি করে। শুধু তাই নয়, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় এই চুক্তির ব্যাপারে আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত জানতে চাইলে, ওই মতামত আসার আগেই বিজেএমসি ওই সুদানী ব্যবসায়ীর কাছে ২০ হাজার ২০ বেল পাটের ব্যাগ পাঠাতে তার মিলগুলোকে শিপমেন্টের নির্দেশ দেয়। ইতোমধ্যে বিজেএমসির মিলগুলো ২০ হাজার ২০ বেল পাটের ব্যাগ শিপমেন্ট করে ফেলেছে। তবে বিজেএমসি এখনও পণ্য রফতানির ডকুমেন্ট সুদানী ব্যবসায়ীর কাছে পাঠায়নি। যদিও ওই ডকুমেন্ট তড়িঘড়ি পাঠানোর উদ্যোগ চলছিল। এরই মধ্যে আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত চলে আসায় তা থমকে গেছে। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে গোল্ডেন ফাইবার ট্রেড সেন্টারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোশতাক হোসেন বলেন, এখন যদি বিজেএমসি এই ডকুমেন্ট এগ্রিকালচারাল ব্যাংক অব সুদানের কাছে পাঠায় তাহলে এ জটিলতার নিরসন হতে পারে। তিনি জানান, ইতোমধ্যে সুদান সরকার বাংলাদেশ থেকে পাট পণ্য ক্রয় করতে অগ্রিম টাকা পাঠিয়েছে। গত বৃহস্পতিবার আমরা বিজেএমসির কাছে ৩০ হাজার ৩০ বেল পাটের ব্যাগের অগ্রিম মূল্য বাবদ ৬৫ কোটি টাকা হস্তান্তর করেছি। এর আগেও আমরা ২০ হাজার ২০ বেল পাটের ব্যাগের অগ্রিম মূল্য বাবদ ৫০ কোটি টাকা বিজেএমসিকে দিয়েছি। এই টাকা দিয়ে বিজেএমসি আরও অন্তত দেড়শ’ থেকে দুইশ’ কোটি টাকার কাঁচাপাট ক্রয় করতে পারবে। তিনি বলেন, এখনও কাঁচাপাটের দাম কিছুটা কম আছে। এখন বিজেএমসি সস্তায় কাঁচাপাট ক্রয় করতে পারবে। পরে আবার দাম বেড়ে যাবে। মোশতাক হোসেন বলেন, অগ্রিম টাকার পাট পণ্য সুদানে পাঠালে সুদান সরকার বাংলাদেশকে আরও টাকা দেবে। সুদানের দ্রুত পাটের ব্যাগ দরকার। এজন্য তারা আরও টাকা দিতে প্রস্তুত আছে।
×