ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

নিম্নচাপ আরও ঘনীভূত, উপকূলে ভারি বর্ষণ জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা

প্রকাশিত: ০৫:৫৪, ৬ নভেম্বর ২০১৬

নিম্নচাপ আরও ঘনীভূত, উপকূলে ভারি বর্ষণ জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপটি আজ রবিবার সকাল নাগাদ বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করতে পারে। নিম্নচাপটি শনিবার রাতেও ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেয়নি। তবে উপকূলের দিকে এগিয়ে আসছে। সমুদ্র বন্দরসমূহকে তিন নম্বরের পরিবর্তে চার নম্বর সতর্কতা সঙ্কেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। এর ফলে উপকূলীয় জেলাগুলোতে ভারি বর্ষণ ও এসব জেলার ওপর দিয়ে ঝড়োহাওয়া বয়ে যেতে পারে। জেলার চর ও উপকূলীয় এলাকা দুই থেকে তিন ফুট পর্যন্ত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে। নিম্নচাপের প্রভাবে শনিবারও রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হয়েছে। আগামী দুই দিনও দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অফিস। নিম্নচাপ কেটে গেলেই শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি পাবে বলেও জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। শনিবারও দিনভর বৃষ্টিতে দুর্ভোগে পড়ে রাজধানীবাসী। রোপা আমন ও শীতকালীন শাকসবজি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা করছেন উপকূলীয় অঞ্চলের কৃষকরা। জাহাজ চলাচল বন্ধ থাকায় সেন্টমার্টিনে আটকা পড়েছেন শতাধিক পর্যটক। কুয়াকাটা সংলগ্ন গভীর সাগরে মাছ ধরার ট্রলার ডুবিতে নিখোঁজ রয়েছেন তিন জেলে। বন্ধ রাখা হয়েছে বরিশালের অভ্যন্তরীণ রুটে লঞ্চ চলাচল। আবহাওয়া অধিদফতর জানায়, গভীর নিম্নচাপটি শনিবার চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৫০০ কিলোমিটার পশ্চিম-দক্ষিণ পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৩০ কিলোমিটার পশ্চিম-দক্ষিণ পশ্চিমে, মংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৬০ কিলোমিটার দক্ষিণ পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৫৫ কিলোমিটার দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও ঘনীভূত ও উত্তর-উত্তর পূর্বদিকে অগ্রসর হয়ে রবিবার সকাল নাগাদ বরিশাল-চট্টগ্রাম উপকূল অতিক্রম করতে পারে। নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৮ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ এখন ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়োহাওয়ার আকারে ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছে। নিম্নচাপের প্রভাবে উপকূলীয় এলাকায় ২ থেকে ৩ ফুট উঁচু জোয়ার সৃষ্টি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি এসে সাবধানে চলাচল করতে পরামর্শ দেয়া হয়েছে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা ও সাতক্ষীরায় ভারি বর্ষণের সঙ্গে ৫০-৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড়োহাওয়া বয়ে যেতে পারে। এ নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিলে তার নাম হবে ‘নাদা’। এ নামটি ওমানের দেয়া। এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সাগর তীরের আট দেশের আবহাওয়া দফতর ও বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার দায়িত্বপ্রাপ্ত প্যানেল এ অঞ্চলে সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়ের একটি তালিকা করে রেখেছে। কোন নিম্নচাপ সাইক্লোনের রূপ নিলে ওই তালিকা থেকে নির্ধারিত নামটি বরাদ্দ হয়। গত মাসের শেষ সপ্তাহে একটি নিম্নচাপ ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিলে মিয়ানমারের প্রস্তাব অনুসারে নাম দেয়া হয় কায়ান্ট, যার অর্থ কুমির। কায়ান্ট দুর্বল হয়ে আবার সাগরেই নিম্নচাপে পরিণত হয়; সেটি উপকূল অতিক্রম করেনি। আবহাওয়াবিদ বজলুর রশীদ শনিবার বলেন, নিম্নচাপটি গভীর নিম্নচাপে রূপ নিয়েছে। গভীর নিম্নচাপটির আর শক্তি সঞ্চয় করে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেয়ার সম্ভাবনা দেখছি না। তারপরও এটি নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না, আরও এগোলে বিষয়টি স্পষ্টভাবে বলা যাবে। গভীর নিম্নচাপটি রবিবার সকাল নাগাদ বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করতে পারে। প্রাকৃতিক নানা কারণে সমুদ্রের একটি অঞ্চলে কেন্দ্রাভিমুখী ঝড়োহাওয়ার অঞ্চল বা লঘুচাপ সৃষ্টি হয়। ক্রমান্বয়ে এ ঝড়োহাওয়ার অঞ্চলটি শক্তি সঞ্চয় করে (বাতাসের গতি বৃদ্ধি পেয়ে) সুস্পষ্ট লঘুচাপ, নিম্নচাপ, গভীর নিম্নচাপ ও শেষে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়। আবহাওয়া অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, গভীর নিম্নচাপ হচ্ছে একটি ঝড়োহাওয়ার অঞ্চল, যেখানে বাতাসের গতিবেগ ৫১ থেকে ৬০ কিলোমিটারের মধ্যে থাকে। বাতাসের গতিবেগ ৬১ থেকে ৮৮ কিলোমিটারের মধ্যে হলে তাকে বলে ঘূর্ণিঝড়। আবহাওয়া অধিদফতরের এক কর্মকর্তা বলেন, নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়ে যদি আরও উত্তর দিকে অগ্রসর হয়, তাহলে এটি খুলনা ও বরিশাল অঞ্চলের দিকে আঘাত হানতে পারে। তবে বৃষ্টি যদি অব্যাহত থাকে, তাহলে নিম্নচাপটি সাগরেই দুর্বল হয়ে যেতে পারে। চট্টগ্রাম ॥ স্টাফ রিপোর্টার চট্টগ্রাম অফিস থেকে জানান, নিম্নচাপের প্রভাবে সাগর উত্তাল রয়েছে। গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে শনিবার সকাল থেকে বন্দরনগরী চট্টগ্রাম ও উপকূলীয় এলাকাজুড়ে কখনও হালকা, কখনও ভারিবর্ষণ চলছে। সন্ধ্যায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তা অব্যাহত ছিল। এদিকে চট্টগ্রামের পতেঙ্গাসহ উপকূলীয় এলাকাগুলোতে বসবাসরত লোকজন শনিবার পুরো সময় উদ্বেগ উৎকণ্ঠায় কাটিয়েছে। আজ রবিবার কী হতে পারে তা নিয়েও শঙ্কায় রয়েছেন। জেলা প্রশাসন, সিটি কর্পোরেশন, রেড ক্রিসেন্ট ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের তৎপর রাখা হয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে বহির্নোঙ্গরে অবস্থানরত দেশী-বিদেশী জাহাজগুলোকে নিরাপদ স্থানে থাকার নির্দেশনা প্রদান করেছে। অপরদিকে সমুদ্রে চলাচলরত বিভিন্ন ধরনের ইঞ্জিনচালিত নৌকা ও ট্রলারগুলোকে নিরাপদ স্থানে থাকার নির্দেশ প্রদান করায় অনেকেই উপকূলে ফিরে এসেছে। মহানগরীর ফিশারিঘাট থেকে শুরু করে পতেঙ্গা এলাকা পর্যন্ত কর্ণফুলী নদীতে এখনও অসংখ্য বোট, কার্গো বোট, লাইটার জাহাজ এবং বন্দরের জেটিগুলোতে পণ্যবোঝাই জাহাজ নোঙ্গর করে আছে। সাগর উত্তাল হওয়ায় ঢেউ আচড়ে পড়ছে তীরে। ফলে শনিবার পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে পর্যটকদের সংখ্যা নেই বললেই চলে। এছাড়া চট্টগ্রাম থেকে অভ্যন্তরীণ নদী ও সমুদ্র পথে যাত্রীবাহী নৌযান চলাচল থমকে আছে। সকাল থেকে বর্ষণ অব্যাহত থাকায় নগরীর নিম্নাঞ্চলগুলোতে জলজটের সৃষ্টি হয়েছে, তবে তা এখনও সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে। বরিশাল ॥ স্টাফ রিপোর্টার বরিশাল থেকে জানান, নিম্নচাপের প্রভাবে বরিশাল নদীবন্দরে দুই নম্বর সতর্ক সঙ্কেত থাকায় অভ্যন্তরীণ রুটে এমএল টাইপের লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে। শনিবার সকাল থেকে এ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ। বরিশাল নদীবন্দরের বিআইডব্লিউটিএ’র নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের উপ-পরিচালক আজমল হুদা মিঠু বলেন, নৌবন্দরগুলোতে আবহাওয়া অধিদফতর দুই নম্বর সতর্ক সঙ্কেত জারি করায় বরিশালের অভ্যন্তরীণ রুটে ৬৫ ফুটের নিচের লঞ্চ চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। যাত্রীদের নিরাপত্তায় সতর্ক সঙ্কেত কমানোর আগ পর্যন্ত এ নির্দেশ বলবত থাকবে। এদিকে সাগরে নিম্নচাপের কারণে জেলার সর্বত্র শুক্রবার দুপুর থেকে শনিবার সারাদিন ভারি বৃষ্টিপাত হচ্ছে। অতি প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বাইরে বের হচ্ছেন না লোকজন। চরম দুর্ভোগে পড়েছেন দিনমজুররা। জেলার দশ উপজেলার অভ্যন্তরীণ কাঁচা সড়কগুলো কর্দমাক্ত হওয়ায় যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। বৃষ্টিতে শীতকালীন শাকসবজির ক্ষেতের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। আমতলী নিজস্ব সংবাদদাতা আমতলী, বরগুনা থেকে জানান, গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে উপকূলীয় আমতলী-তালতলী উপজেলায় বিরামহীন বর্ষণে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। অতি বর্ষণের কারণে আমন ক্ষেতের বড় ধরনের ক্ষতির আশঙ্কা করছে কৃষক। কলাপাড়া ॥ নিজস্ব সংবাদদাতা কলাপাড়া থেকে জানান, কুয়াকাটা সংলগ্ন গভীর সাগরবক্ষে এফবি শুকতারা-০২ নামের একটি মাছ ধরার ট্রলার ১৭ জন জেলে নিয়ে ডুবে গেছে। ডুবে যাওয়া ট্রলারটির সকল জেলেদের এফবি ভাই ভাই ট্রলার উদ্ধার করে পাথরঘাটায় নেয়ার সময় ওই ট্রলারটিও ডুবে যায়। শনিবার বেলা ১১টা থেকে দুপুরের মধ্যে সাগরের উত্তাল ঢেউয়ের তোড়ে এ ট্রলার ডুবির ঘটনা ঘটে। তবে দুই ট্রলারের অধিকাংশ জেলেদের এফবি মহসিন আউলিয়া নামের অপর একটি ট্রলার উদ্ধার করেছে। ট্রলার দুটি উদ্ধার করা যায়নি। এফবি ভাই ভাই ট্রলারের মালিক নাসির পাহলোয়ান জানান, তার ট্রলারের তিন জেলে নিখোঁজ রয়েছেন। তবে তিনি কারও নাম জানাতে পারেননি। শুকতারা ট্রলারের মালিক খাজুরার আলহাজ আব্দুল কাদের মাঝি জানান, তার অন্তত অর্ধকোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। ট্রলারগুলো সাগর থেকে কিনারে ফিরছিল। পাথরঘাটা ॥ সংবাদদাতা পাথরঘাটা, বরগুনা থেকে জানান, বঙ্গোপসাগরে ৫টি মাছধরা ট্রলার ডুবে ৩ জন জেলে নিখোঁজ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। শনিবার সকাল ৭টার দিকে এ ট্রলার ডুবির ঘটনা ঘটে। এ সময় ৪৬ জেলেকে উদ্ধার করা সম্ভব হলেও ৩ জেলে বিকেল সাড়ে চারটা পর্যন্ত নিখোঁজ রয়েছেন। বাউফল ॥ নিজস্ব সংবাদদাতা বাউফল থেকে জানান, অবিরাম বৃষ্টির কারণে বাউফলে আমান ধান ও সবজির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ধানে শীষ আসার পূর্বমুহূর্তে এ ধরনের দুর্যোগ ধান ফলনের ক্ষেত্রে ব্যাপক প্রভাব পড়বে বলে জানিয়েছে উপজেলা কৃষি অফিস। এ দুর্যোগের ফলে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন উপজেলার প্রান্তিক কৃষকরা। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর উপজেলায় ৩৭ হাজার ৬শ’ হেক্টর জমিতে আমন চাষ করা হয়েছে। এর মধ্যে ২০ হাজার হেক্টর জমিতে স্থানীয় জাতের ও ১৭ হাজার ৬শ’ হেক্টর জমিতে উচ্চ ফলনশীল আমান চাষ করা হয়। অপরদিকে ৩ হাজার ৫শ’ হেক্টর জমিতে বেগুন, টমেটো, লাউ, পালনশাক ও লালশাক ইত্যাদি ধরনের সবজি চাষ করা হয়েছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সরোয়ার জামান জানান, আমরা মাঠ পর্যায়ের কৃষকদের এ ধরনের দুর্যোগের পূর্বাভাস দুই দিন আগেই দিয়েছিলাম। চাষীদের ক্ষেতের পানি নিষ্কাশনের জন্য বলা হয়েছে। তবে যে জমির ধানগাছ শুয়ে পড়েছে তার ৩৫ ভাগ ধান নষ্ট হলেও বাকিটা ভাল থাকবে বলে আশা করা যায়। গলাচিপা ॥ নিজস্ব সংবাদদাতা গলাচিপা থেকে জানান, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে দু’দিন ধরে পটুয়াখালীসহ উপকূলীয় অঞ্চলে চলছে লাগাতার বর্ষণ। তলিয়ে গেছে মাঠঘাট। রোপা আমন নিয়ে এলাকার কৃষকদের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা চরম আকার ধারণ করেছে। স্থানীয় কৃষি বিভাগ এরই মধ্যে অবিরাম বর্ষণে শতকরা ১০ থেকে ১৫ ভাগ ফসলের ক্ষতির আশঙ্কা করছে। বাস্তবে ক্ষতির পরিমাণ বাড়তে পারে বলে মাঠ পর্যায়ের কৃষকরা ধারণা করছেন। বৃহস্পতিবার থেকেই পটুয়াখালীর উপকূলীয় অঞ্চলে বর্ষণ শুরু হয়েছে। শনিবার বৃষ্টির পরিমাণ আরও বেড়ে যায়। এদিন সকাল থেকে বর্ষার সঙ্গে শুরু হয়েছে থেমে থেমে ঝড়ো বাতাস। বৃষ্টি-বাতাসের কারণে উপকূল অঞ্চলের কৃষকের ঘুম ছুটে গেছে। গলাচিপা ও রাঙ্গাবালীর দায়িত্বপ্রাপ্ত উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবদুল মান্নান জানান, বর্ষণে এরই মধ্যে ১০ থেকে ১৫ ভাগ উফসী আগাম জাতের আমন ধানক্ষেতে নুইয়ে পড়েছে। তবে স্থানীয় জাতের আমন ধানের কোন ক্ষতি এখন পর্যন্ত হয়নি। যদি বৃষ্টি অব্যাহত থাকে এবং সাথে বাতাসের গতিবেগ বাড়ে, তবে ক্ষেতে নুইয়ে পড়া ধানের পরিমাণ আরও বাড়বে। কক্সবাজার ॥ স্টাফ রিপোর্টার কক্সবাজার থেকে জানান, বঙ্গোপসাগরে বৈরী আবহাওয়া ও সাগর উত্তাল হওয়ার কারণে প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনে আটকা পড়েছেন শতাধিক পর্যটক। কক্সবাজার উপকূলে ৪নং সতর্ক সঙ্কেত বলবত থাকায় টেকনাফ-সেন্টমার্টিন রুটে জাহাজ চলাচল বন্ধ রয়েছে। আটকা পড়া পর্যটকদের মধ্যে শুক্রবার তিনটি ট্রলারযোগে ১২৫ জন পর্যটক টেকনাফে ফিরে গেলেও আরও শতাধিক পর্যটক দ্বীপে অবস্থান করছেন বলে জানিয়েছেন সেন্টমার্টিন হোটেল মালিক সমিতির সভাপতি মুজিবুর রহমান। সেন্টমার্টিন ইউপি চেয়ারম্যান নুর আহমদ জানান, সাগরে নিম্নচাপ ঘনীভূত হওয়ায় গত বৃহস্পতিবার সেন্টমার্টিনে ভ্রমণে আসা পর্যটকদের হোটেল-মোটেল ও বাজার এলাকায় অবস্থান না করার জন্য ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে প্রচার-প্রচারণা চালানো হলেও শতাধিক পর্যটক রয়ে যান। জাহাজ চলাচল বন্ধ থাকায় পর্যটকরা ফিরতে পারেননি। ঝালকাঠি ॥ নিজস্ব সংবাদদাতা ঝালকাঠি থেকে জানান, ঝালকাঠি জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে শনিবার বিকেল ৫টায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির বিশেষ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। জেলা প্রশাসক মিজানুল হক চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভায় ধেয়ে আসা ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানলে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে করণীয় বিষয়সমূহ আলোচনা হয়েছে। জেলার সব উপজেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের নদীর তীরবর্তী এলাকার মানুষকে দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে আনার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
×