ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

মোটরসাইকেল শিল্পের জন্য নীতিমালা হচ্ছে ॥ ঘুরে দাঁড়াচ্ছে এটলাস

প্রকাশিত: ০৪:১৯, ৬ নভেম্বর ২০১৬

মোটরসাইকেল শিল্পের জন্য নীতিমালা হচ্ছে ॥ ঘুরে দাঁড়াচ্ছে এটলাস

নিজস্ব সংবাদদাতা, টঙ্গী ॥ বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দক্ষ পরিচালনায় আবার ঘুরে দাঁড়াচ্ছে রাষ্ট্রায়ত্ত এটলাস বাংলাদেশ লিমিটেড (এবিএল)। নব উদ্যমে উৎপাদন প্রক্রিয়া শুরু হওয়ায় হতাশা কেটে গেছে শ্রমিক কর্মচারীদের। দৃঢ় আত্মপ্রত্যয়ে এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশ ইস্পাত ও প্রকৌশল কর্পোরেশনের এই প্রতিষ্ঠানটি। জানা গেছে, হিরো ও হোন্ডার সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্ক ছিন্ন হওয়ার পর ২০১৩ সালে এটলাসের মোটরসাইকেল উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। এ অবস্থায় জাপান, ভারত, পাকিস্তান, চীন, তাইওয়ান, দক্ষিণ কোরিয়াসহ বিভিন্ন দেশের মোটরসাইকেল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করেও কোন সাড়া পায়নি এটলাস। এ অবস্থায় কারখানাটির ভবিষ্যত অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কারখানা বন্ধের আশঙ্কায় হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েন শ্রমিক কর্মচারীরা। এই সঙ্কট মুহূর্তে ২০১৪ সালের জুন মাসে এটলাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে হাল ধরেন প্রকৌশলী মোঃ আবুল কাশেম। তিনি যোগদানের মাত্র চার মাসের মধ্যেই চীনের বিখ্যাত প্রতিষ্ঠান চংকিং জংশেন গ্রুপ আই/ই কর্পোরেশনের সঙ্গে অক্টোবর ২০১৪ সালে মেমোরেন্ডাম অব আন্ডার স্ট্যান্ডিং (এমওইউ) সম্পাদন করেন। ফলে দীর্ঘ সময়ের উৎপাদনহীন অবস্থার অবসান হওয়ায় শ্রমিক/কর্মচারী/কর্মকর্তাদের মধ্যে যে চরম হতাশা ছিল তা প্রশমিত হয়। পরবর্তীতে শিল্পমন্ত্রীর নির্দেশক্রমে পরীক্ষামূলক ৫০০টি মোটরসাইকেল আমদানি করে কারখানার উৎপাদন চালু করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় প্রকৌশলী মোঃ আবুল কাশেমের মেধা, দক্ষতা এবং ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় চীনের বৃহৎ কোম্পানি চংকিং জংশেন গ্রুপ আই/ই কর্পোরেশনের সঙ্গে ২০১৫ সালের আগস্ট মাসে ডিস্ট্রিবিউশন এ্যান্ড টেকনিক্যাল এসিস্টেন্স এগ্রিমেন্ট সম্পাদন হয়। প্রকৌশলী আবুল কাশেম প্রশাসনিক ক্ষেত্রেও যথেষ্ট দক্ষতার পরিচয় দেন। উৎপাদনহীন অবস্থা থাকার পরও সরকারের কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধির বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে তিনি কোন শ্রমিক-কর্মচারী-কর্মকর্তাকে স্বাভাবিক নিয়মে অবসর ব্যতীত কাউকে ছাঁটাই করেননি বা বেতন ভাতাদিও বন্ধ করেননি। ইতোমধ্যে শিল্প মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে বাংলাদেশে প্রথম মোটরসাইকেল শিল্পের বিকাশের লক্ষ্যে একটি নীতিমালা তৈরির জন্য আন্তঃমন্ত্রণালয় এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের মাধ্যমে কমিটি গঠন করা হয়েছে। যেখানে বিএসইসির একজন মনোনীত সদস্য হিসেবে প্রকৌশলী আবুল কাশেম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। এটলাস বাংলাদেশ লিমিটেড কর্তৃক পূর্বের হিরো বা হোন্ডা ব্রান্ডের মোটরসাইকেল বাজারজাত করার জন্য কোন প্রতিবন্ধকতা ছিল না। বর্তমানে চীন থেকে আমদানিকৃত নতুন একটি ব্রান্ড বাজারজাত করার শুরুতে নানা প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হতে হয়। বিশেষ করে আরইবি, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন সরকারী প্রতিষ্ঠানে পণ্যের গুণগত মান সম্পর্কে আবুল কাশেম অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে বোঝাতে সক্ষম হন। এরই ধারাবাহিকতায় আরইবি বর্তমানে তাদের ৭৫টি সমিতির জন্য এটলাস থেকে মোটরসাইকেল সরবরাহ নিচ্ছে। তাছাড়া কিছু দিন আগে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ৫৬২টি মোটরসাইকেল ক্রয় করে এই মোটরসাইকেলগুলো শিল্পমন্ত্রী নিজ হাতে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর নিকট মোটরসাইকেলগুলোর চাবি হস্তান্তর করেন। ফলশ্রুতিতে নতুন প্রডাক্ট নিয়ে ব্যবসা শুরু করলেও তাতে যথেষ্ট অগ্রগতি সাধিত হয় এবং প্রবল প্রতিযোগিতামূলক মার্কেটে স্বল্পতম সময়ে ৫,২৫৯টি মোটরসাইকেল আমদানি করে বাজারজাত করা সম্ভব হয়। নতুন প্রডাক্টের ব্যাপক পরিচিতির জন্য তিনি দেশের বিভিন্ন গুরত্বপূর্ণ স্থানে বিলবোর্ড স্থাপনসহ টিভি ও পত্র-পত্রিকায় বিজ্ঞাপন এবং নানা ধরনের প্রমোশনাল কার্যক্রম গ্রহণ করেছেন। যা প্রতিষ্ঠানের প্রবৃদ্ধি অর্জনে যথেষ্ট সহায়ক হবে বলে সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন।
×