ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ভাসমান শিশুস্বর্গ এখন ম্রিয়মাণ

প্রকাশিত: ০৬:৪১, ৫ নভেম্বর ২০১৬

ভাসমান শিশুস্বর্গ এখন ম্রিয়মাণ

মৃত্যুর ২২ বছর পরও বরেণ্য চিত্রশিল্পী এসএম সুলতানের স্বপ্নের বাস্তবায়ন হয়নি। বর্তমানে ‘শিশুস্বর্গ’ অনেকটা ম্রিয়মাণ। ভ্রাম্যমাণ শিশুস্বর্গ এখন চিত্রা নদীতে ভাসে না। ওই নৌকায় শিশুদের তুলে চিত্রা নদীতে নিয়ে তিনি ছবি আঁকতেন। দুই শিক্ষকের অকাল মৃত্যুতে শিশুস্বর্গে স্থবিরতা নেমে এসেছে। দীর্ঘদিন তালাবদ্ধ থাকায় সুলতানের দুর্লভ চিত্রকর্মসহ তাঁর ব্যবহার্য জিনিসপত্র নষ্ট হতে চলেছে। সবুজ-শ্যামলে ঘেরা এসএম সুলতান স্মৃতি সংগ্রহশালার ফুল, পাখি, গাছপালার অপরূপ রূপের আকর্ষণেই প্রতিনিয়ত ছুটে আসে পর্যটক। মুগ্ধ হয় সুলতানের অঙ্কিত ছবি, ভাসমান শিশুস্বর্গ (নৌকা) ও ব্যবহার্য জিনিসপত্র দেখে। ১৯৮০ সালে শিল্পী নিজ বাড়িতে শিশুস্বর্গের নির্মাণকাজ শুরু করেন। তবে শেষ করতে পারেননি। স্থানীয় চিত্রশিল্পী দুলাল চন্দ্র সাহা তাঁর স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখতে শিশুস্বর্গে শিশু-কিশোরদের প্রতি শুক্রবারে চিত্রাংকন শেখাতেন। কিন্তু কয়েক বছর আগে দুলাল চন্দ্র সাহা ও শিল্পী কাজল মুখার্জীর অকাল মৃত্যুতে শিশুস্বর্গে স্থবিরতা নেমে আসে। বর্তমানে তিন শিল্পী নিয়মিত প্রতি শুক্র ও শনিবার দু’দিন শিশুদের চিত্রাঙ্কন শেখায়। এদিকে ১৯৯২ সালে ১২ লাখ টাকা ব্যয়ে ৬০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১৫ ফুট প্রস্থের সুলতানের নির্মিত দ্বিতল নৌকাটিও (ভ্রাম্যমাণ শিশুস্বর্গ) এখন চিত্রা নদীতে ভাসে না। বর্তমানে চিত্রা নদী পাড়ে বন-বনানীর মাঝে রক্ষিত আছে সুলতানের দ্বিতল নৌকাটি। সুলতানের পালিত মেয়ে নীহার বালা বলেন, সুলতান আমাকে মেয়ে হিসেবেই পরিচয় করিয়ে দিতেন এবং আমাকে আপনি সম্বোধন করতেন। আমিও বাবাকে পরম শ্রদ্ধায় দেখাশোনা করতাম। মৃত্যুর আগে আমার হাত ধরে বলেছিলেন- আপনি থাকলেন আর আমার শিশুস্বর্গ রইল। শিশুস্বর্গ যেন বেঁচে থাকে। আপনি দেখবেন, দেখে রাখবেন তো? সেদিনের সেই স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে কান্নাভেজা কণ্ঠে নীহার বালা বলেন, না, পারলাম না। -রিফাত-বিন-ত্বহা, নড়াইল থেকে
×