ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

তৃণমূল ও যুব ফুটবলে বাফুফের গুরুত্বারোপ

প্রকাশিত: ০৬:৩৭, ৫ নভেম্বর ২০১৬

তৃণমূল ও যুব ফুটবলে বাফুফের গুরুত্বারোপ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বাফুফের পরিকল্পনা পর্যবেক্ষণ ও ফিফার নির্দেশনা দেখাতে গত মঙ্গলবার ঢাকা এসেছিলেন ফিফার চার প্রতিনিধি বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক জার্মান কোচ অটো ফিস্টারের ছেলে মাইক ফিস্টার (ফিফার জ্যেষ্ঠ উন্নয়ন ব্যবস্থাপক), সাজি প্রভাকরণ (আঞ্চলিক উন্নয়ন কর্মকর্তা), ভিনসেন্ট সুব্রামানিয়াম (টেকনিক্যাল কর্মকর্তা) ও নুরাইয়াম আলিম কুলভা (এএফসি কর্মকর্তা)। পাঁচদিনের সফরে তারা বাফুফে নীতি নির্ধারক, ক্রীড়া মন্ত্রণালয়, পৃষ্ঠপোষক, পেশাদার লীগের ক্লাব ও জেলা ফুটবল এ্যাসোসিয়েশন প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন। গত মে মাসে মেক্সিকোতে কংগ্রেসে ফুটবল উন্নয়নে সব দেশকে বার্ষিক অনুদানের আড়াই লাখ ডলারকে বাড়িয়ে দ্বিগুণ করেছিল ফিফা। এছাড়া ৩ বছরে প্রকল্পভিত্তিক সাড়ে ৭ লাখ করে মোট সাড়ে ২২ লাখ ডলার দেবে ফিফা। এই অর্থ নিতে ফিফাকে অবশ্যই প্রকল্প দেখাতে হবে। দেশের ফুটবল অবকাঠামো ঢেলে সাজাতে পরিকল্পনা প্রণয়ন-বাস্তবায়নে টেকনিক্যাল ও স্ট্র্যাটেজিক ডিরেক্টর পদে ব্রিটিশ পল স্মলিকে নিয়োগ দিয়েছে বাফুফে। তৃণমূলে জোর দিয়ে পরিকল্পনা সাজানো হয়েছে। ভবিষ্যত ফুটবল উন্নয়নের সম্ভাব্যতা তুলে ধরতে প্রকল্পে তৃণমূলে বয়সভিত্তিক চর্চা, জাতীয় দল ও নারী ফুটবলে জোর দিয়েছে বাফুফে। আছে বাফুফে ভবনে আধুনিক জিম, খেলোয়াড়দের জন্য ডরমেটরি ও ফুটবল একাডেমি। শুক্রবার ফিফা প্রতিনিধি সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তাদের বক্তব্য তুলে ধরে। মাইক ফিস্টার বলেন, ‘বাংলাদেশের ফুটবলের এই দুরবস্থায় ফিফা তাদের সাহায্য করতে প্রস্তুত। এজন্য উন্নয়ন কর্মসূচী দরকার। এ মুহূর্তে বাফুফে আমাদের কাছ থেকে অর্থ পাওয়ার যোগ্য কি না, এটি আমরা যাচাই-বাছাই করেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাব। বাফুফে ক্লাব কর্মকর্তা, স্পন্সর, ফুটবল সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে মনে হয়েছে তৃণমূল ও যুব পর্যায়ে বাংলাদেশের ব্যাপকভাবে কাজ করতে হবে। এটা লজ্জার বিষয় যে বাংলাদেশের পেশাদার লীগের ক্লাবগুলোর বয়সভিত্তিক দল নেই। বাংলাদেশের প্রয়োজন একটি সুষ্ঠু ও সমন্বিত ফুটবল সিস্টেম। ক্লাব, ডিএফএ, প্রশাসন, টেকনিক্যাল অবকাঠামো সবকিছু মিলিয়ে বর্তমানে বাংলাদেশের ফুটবলের যে ধারা চলছে তার পুনর্মূল্যায়ন ও পুনঃপর্যবেক্ষণ খুবই জরুরী। এখানে সরকারী সহযোগিতা ছাড়া ফুটবলের উন্নয়ন সম্ভব নয়। আমরা যেটি সমর্থন করি না তা হচ্ছে ফেডারেশনে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ। ফিফা এখানে কঠোর ও কঠিন। ডিএফএ’র সমস্যা হচ্ছে যে এটি স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছে না। তাই এ ব্যাপারে নতুন কোন মডেল প্রস্তুত করতে হবে। বাফুফের মাস্টার প্ল্যানটা আমার কাছে পরিকল্পিত তবে খুবই উচ্চাভিলাষী মনে হয়েছে। আগামী দু’বছর এ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে তৃণমূল পর্যায়ে কিছু কাজ সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ। তৃণমূল পর্যায়ে একজন কোচকে ফুটবল নেতা হিসেবে তৈরি করা জরুরী।’ মাইক আরও বলেন, ‘বাফুফের একাডেমি বন্ধ হয়ে যাওয়া দুর্ভাগ্যজনক। সরকরের সঙ্গে এ ব্যাপারে বাফুফের আলোচনা করে এটি আবারও চালু করা সম্ভব এবং উচিত। বাফুফে একাডেমির জন্য নির্ধারিত টাকা এখনও ফিফার কোষাগারে জমা আছে।’ বাফুফে সভাপতি কাজী মোঃ সালাউদ্দিন বলেন, ‘আমাদের দরকার বালক অনুর্ধ-১৬ ও ১৮ এবং বালিকা অনুর্ধ-১৬ মহিলা দলের জন্য উন্নত প্রশিক্ষণ ও যাবতীয় খরচ, একটি জিম, বাফুফে ভবনের চারতলায় আবাসিক ব্যবস্থা উন্নতকরণ । যুব পর্যায়ে দুটি ফুটবল টুর্নামেন্ট। এস্ট্রো টার্ফে ফ্লাডলাইট। বাফুফের সামনে ছোট মাঠটিতে একটি টার্ফ স্থাপন।’ বাফুফের এই প্রকল্প যাচাই করে প্রতিনিধি দল রিপোর্ট দিলেই ছাড় হবে অনুদানের অর্থ।
×