ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

মানচিত্র পাল্টে গেছে লৌহজংয়ের

পদ্মা গিলে খেয়েছে ২৫ বর্গ কিলোমিটার

প্রকাশিত: ০৬:৩৩, ৫ নভেম্বর ২০১৬

পদ্মা গিলে খেয়েছে ২৫ বর্গ কিলোমিটার

মীর নাসিরউদ্দিন উজ্জ্বল, মুন্সীগঞ্জ ॥ প্রমত্তা পদ্মা। প্রতিবছর পলি মাটি ফেলে জনপদের জীবন সচল রাখে যে পদ্মা তার আরেক নাম কীর্তিনাশা। পদ্মার ভাঙ্গনে মানচিত্র পাল্টে গেছে লৌহজংয়ের। বিস্তীর্ণ এলাকা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙ্গন অব্যাহত আছে এখনও। এখন ভাঙ্গছে লৌহজংয়ের যশলদিয়া কান্দিপাড়া। ইতোমধ্যেই বিলীন হয়ে গেছে ঘর-বাড়ি, রাস্তা-ঘাটসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। একইভাবে গত বছর ভেঙ্গে গেছে খড়িয়া গ্রাম। এভাবে কত গ্রামগঞ্জ আর জনপদ এর মধ্যে গিলে খেয়েছে পদ্মা তার হিসেব নেই। অন্য অনেক জনপদের মতো রুদ্র মূর্তিতে সে গিলে নিয়েছে অনেক গ্রাম, হাট বাজার, সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠান, রাস্তা ঘাট। ১০ বছরের অব্যাহত ভাঙ্গনে লৌহজং উপজেলার মানচিত্র, সামাজিক ও অর্থনৈতিক পরিবেশ বদলে গেছে। ১৯৯২ থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত লাগাতার একদশকের ভাঙ্গনে ১২টি ইউনিয়নের মধ্যে আট ইউনিয়নের গ্রামের কোনটি পুরোপুরি আবার কোনটি আংশিক পদ্মাগর্ভে বিলীন হয়েছে। যার পরিমাণ ২৫ বর্গকিলোমিটার। যা উপজেলার মোট আয়তনের অর্ধেকের বেশি। ভিটে মাটি, আবাদি জমি হারিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের সংখ্যা অর্ধ লক্ষাধিক। এদের অধিকাংশ এ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বসতি গেড়েছে। আবার অনেকে হয়েছে শহরমুখী। পদ্মার ভয়াল গ্রাসে লৌহজং ভূমি অফিস ছাড়া উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্স, থানা কমপ্লেক্স, খাদ্য গুদাম, ডাকবাংলো, পশু হাসপাতাল, টেলিফোন এক্সচেঞ্জ অফিস, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, প্রধান ডাকঘর, ঐতিহ্যবাহী দিঘলী বাজার ও বন্দর, গান্ধীর মাঠ, পালের বাজার, লৌহজং ক্লাব, লৌহজং গার্লস হাইস্কুল, লৌহজং ইউপি ভবন, তেউটিয়া ইউপি ভবন ও তেউটিয়া পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র, কদম পাগলের মাজারসহ সরকারী-বেসরকারী অবকাঠামো নদীগর্ভে তলিয়ে যায়। মানুষ তখন ভাঙ্গনের ভয়াবহতার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ঘরবাড়ি ও দোকান পাট সরিয়ে নিতে হিমশিম খায়। নদী ভাঙ্গা মানুষ আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়।
×