ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

পীরগঞ্জে সেবা পাচ্ছে না রোগীরা

প্রকাশিত: ০৬:৩০, ৫ নভেম্বর ২০১৬

পীরগঞ্জে সেবা পাচ্ছে না রোগীরা

নিজস্ব সংবাদদাতা, রংপুর থেকে জানান, পীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কাক্সিক্ষত চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা। এ জন্য সেখানে কর্মরত ডাক্তার ও কর্মকর্তাদের দায়িত্বহীনতাকেই দায়ী করছেন ভুক্তভোগীরা। তাদের অভিযোগ, উপজেলার ৫ লক্ষাধিক মানুষের জন্য একমাত্র স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র পীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। ২০০৯ সালে ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত হলেও বাড়েনি স্বাস্থ্যসেবার মান। উল্টো বেড়েছে রোগীদের দুর্ভোগ। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আরএমও, কনসালটেন্টসহ অনুমোদিত পদ ২২ হলেও আছেন মাত্র ১৩ জন ডাক্তার। এর মধ্যেও আরএমও সহ ডেপুটেশনে আছেন ৩ জন। এদের মধ্যে ৪ জন ছাড়া ইউএচি এ্যান্ড এফপিও সহ বাকি ডাক্তাররা থাকেন ৪০ কিলোমিটার দূরে বিভাগীয় শহর রংপুরে। কনসালটেন্টের ১০ পদের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ মেডিসিন, অর্থপেডিক্স, কার্ডিওলোজি, রেডিওলোজি, ইএনটি পদগুলো দীর্ঘদিন ধরেই শূন্য। স্থানীয়রা জানান, ডেপুটেশনে থাকা চর্মরোগের কনসালটেন্ট ডাঃ মোস্তফা কবীর সুজন, আরএমও ডাঃ ওবায়দুল আলম এবং ডাঃ মৃদুল কুমার সরকার ৩ জনই সপ্তাহে ৩ দিন পীরগঞ্জে ব্যক্তিগত চেম্বারে রোগী দেখেন। এ হাসপাতালে ডাক্তারদের আসা যাওয়ার কোন নিয়ম নীতি নেই। মেডিক্যাল অফিস সময় সকাল সাড়ে আটটায় শুরু হলেও রংপুর শহরে বসবাসরত ডাক্তারদের অনেকেই বেলা ১১টার আগে হাসপাতালে পৌঁছান না। আবার তারা দুপুর ১টার আগেই চলে যান। এছাড়াও কয়েকজন ডাক্তার আবার হাসপাতালে আসেন একদিন পরপর। ফলে ডাক্তারের দেখা না পেয়ে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের হতাশ হয়ে ফিরে যেতে হয়। সনোলজিস্টের অভাবে পড়ে আছে অত্যাধুনিক ফোর-ডি আলট্রাসনোগ্রাম মেশিন। অথচ হাসপাতালে কর্মরত প্রায় সব ডাক্তারই পার্শ্ববর্তী প্যাথলজিগুলোতে বসে দিব্যি আলট্রাসনোগ্রামের রিপোর্ট করছেন। এ বিষয়ে কথা হলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোখলেছুর রহমান জানান, আলট্রাসনোগ্রাম করতে ডাক্তাররা অনারিয়াম চান, আমি কোথা থেকে অনারিয়াম দেব ? আরএমও এর দায়িত্বে থেকেও ডাক্তার জিয়াউর রহমান বেলা ২টা থেকেই হাসপাতাল গেট সংলগ্ন একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে রাত ১০টা পর্যন্ত রোগী দেখেন। এ বিষয়ে তিনি বলেন, চেম্বার করার অধিকার তার আছে। তিনি আরও বলেন, আমি প্রয়োজন হলেই যথাসময়ে হাসপাতালে হাজির হই। এদিকে ২০১৩ সালে অত্যাধুনিক অপারেশন থিয়েটার নির্মাণ করার পর ওই বছরই মাত্র একটি সিজার করার পর এ্যানেসথেসিয়া ডাক্তার এবং গাইনি ডাক্তারের অভাবে সেটিও বন্ধ রয়েছে ৩ বছর ধরে। হাসপাতালে দুটি এ্যাম্বুলেন্স থাকলেও ড্রাইভার একজন থাকায় রোগীদের রংপুরে নিয়ে যেতে জনগণকে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। বাধ্য হয়ে দ্বিগুণ টাকা দিয়ে বাহির থেকে মাইক্রোবাস ভাড়া করতে হয়। এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে উন্নত মানের একটি জেনারেটর থাকলেও রহস্যজনক কারণে বিদ্যুত চলে গেলেও সেটি চালু করা হয় না।
×