ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

বৃষ্টিঝরা সন্ধ্যায় রবীন্দ্র সুরে কলিম শরাফী স্মরণ

প্রকাশিত: ০৬:০৬, ৫ নভেম্বর ২০১৬

বৃষ্টিঝরা সন্ধ্যায় রবীন্দ্র সুরে কলিম শরাফী স্মরণ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাইরে তখন ঝিরিঝিরি বৃষ্টি। মিলনায়তনে ভেসে বেড়ায় গানের সুর। সম্মেলক কণ্ঠে উচ্চারিত হয়Ñ আগুনের পরশমণি ছোঁয়াও প্রাণে/এ জীবন পুণ্য করো দহন দানে/আমার এই দেহখানি তুলে ধরো, তোমার ওই দেবালয়ের প্রদীপ করো ...। গানটি নিবেদন করা হয় কলিম শরাফীকে। রবীন্দ্রনাথের গানের সুরে স্মরণ করা হলো বরেণ্য এই রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পীকে। দোসরা নবেম্বর ছিল প্রয়াত এই শিল্পীর ষষ্ঠ প্রয়াণবার্ষিকী। এ উপলক্ষে রবীন্দ্র সুরের সুধায় শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করা হয় শিল্পীকে। শুক্রবার হেমন্ত সন্ধ্যায় সুফিয়া কামাল জাতীয় গণগ্রন্থাগারের শওকত ওসমান মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয় এ স্মরণানুষ্ঠান। সঙ্গীতের সঙ্গে স্মৃতিচারণায় সাজানো হয় আয়োজন। অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বাংলাদেশ রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী সংস্থা। গান দিয়ে সূচনা হওয়া অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন সংস্থার সাধারণ সম্পাদক সাজেদ আকবর। কলিম শরাফীর বর্ণাঢ্য জীবনের উপস্থাপনায় সংক্ষিপ্ত কথন শেষে শুরু হয় সঙ্গীতানুষ্ঠান। মঞ্চে আসেন শর্মিলা চক্রবর্তী। প্রিয় শিল্পী কলিম শরাফীর প্রতি মুগ্ধতার প্রকাশ করে গেয়ে শোনানÑ মধুর ও তোমার শেষ নাই যেন ...। বুলা মাহমুদের কণ্ঠে গীত হয়Ñ যদি জানতেম আমার কিসের ব্যথা তোমায় জানাতাম ...। তুমি তো সেই যাবেই চলে শিরোনামের সঙ্গীত পরিবেশন করেন বুলা মাহমুদ। নাই বা ডাকো শিরোনামের গান শোনান অভিক দেব। তপন কুমার সরকার শোনান ‘আমি চঞ্চল হে’। সাঈদা হোসেন পাপড়ি পরিবেশন করেন ‘তুমি তো সেই যাবেই চলে’। এছাড়াও একক কণ্ঠে গান শোনান তপন মাহমুদ, সাদি মহম্মদ, সাজেদ আকবর, প্রমোদ দত্ত, মহাদেব ঘোষ, খন্দকার আবুল কালাম, খন্দকার খাইরুজ্জামান কাইয়ুম, পীযূষ বড়–য়া, মাখন হাওলাদার, মামুন জাহিদ খান, বিষ্ণু ম-ল, সালমা আকবর, অদিতি মহসিন, অনিমা রায়, তানজিনা তমা ও ফাহমিদা হোসেন। তাদের পরিবেশিত কয়েকটি গানের শিরোনাম ছিল ‘তোমায় গান শোনাবো’, ‘দূরে কোথায় দূরে দূরে’, ‘জীবন মরণের সীমানা ছাড়ায়ে’ ও ‘কবে আমি বাহির হলেম তোমারি গান গেয়ে’। এছাড়াও ছিল সংস্থার শিল্পীদের কয়েকটি দলীয় পরিবেশনা। আলিয়ঁসে আলোকচিত্র প্রদর্শনী ‘নভেম্বরে প্যারিস’ ॥ ফ্রান্সের অনিন্দ্য সুন্দর এক শহর প্যারিস। সর্বদাই যেন এই শহরে বিরাজ করে সুন্দরের হাতছানি। আলোকচিত্রী সুমন ইউসুফ সেই প্যারিস শহরে ছিলেন ২০১৫ সালের নবেম্বর মাসে একটি ‘আর্টিস্ট রেসিডেন্সি’ প্রোগ্রামে। শহরটি দেখে মুগ্ধ হয়ে চিরাচরিত ছবি তুলতে থাকেন। তবে ১৩ নবেম্বর পাল্টে যায় চিরচেনা সৌন্দর্যের সেই শহরের দৃশ্যপট । শহরে হামলে পড়ে একদল জঙ্গী। কয়েকটি ধারাবাহিক হামলায় ১৩০ জন নিহত এবং ৩৭০ জনের বেশি মানুষ আহত হলো। সুমনের জন্য এই ভালবাসার শহরটি রূপান্তরিত হয় কান্না ও শোকের শহরে। এই মর্মান্তিক মুহূর্তকে ক্যামেরাবন্দী করেন সুমন। আলোকচিত্রে ধারণ করেন মর্মান্তিক ঘটনার পরের পরিস্থিতি এবং প্যারিসের ভয়ার্ত মানুষের মুখচ্ছবিসহ নানা চিত্র। সেসব ছবি নিয়ে ধানম-ির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে শুক্রবার থেকে শুরু হলো আলোকচিত্র প্রদর্শনী। শিরোনাম ‘নভেম্বরে প্যারি’। বিকেলে প্রধান অতিথি হিসেবে প্রদর্শনী উদ্বোধন করেন ঢাকায় নিযুক্ত ফরাসী রাষ্ট্রদূত সোফি অবের। বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান। সম্মানিত অতিথি ছিলেন আলোকচিত্রী আবীর আবদুল্লাহ্। অনুভূতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন সুমন ইউসুফ। প্রদর্শনী প্রসঙ্গে সুমন ইউসুফ বলেন, আমার ছবিতে শুধু হামলার ভয়াবহতা তুলে ধরিনি। গতানুগতিকতার বাইরে গিয়ে শহরের সৌন্দর্যকেও উপস্থাপন করেছি। সেই সঙ্গে হামলার পর প্যারিসবাসীর মানসিক পরিবর্তনের দৃশ্যও ধারণ করেছি ক্যামেরায়। প্রদর্শনীতে ২১ টি আলোকচিত্র স্থান পেয়েছে। প্রদর্শনী চলবে ১৫ নবেম্বর পর্যন্ত। সোম থেকে বৃহস্পতিবার বেলা ৩টা থেকে রাত ৯টা এবং শুক্র ও শনিবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা এবং বিকেল ৫টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত দর্শনার্থীর জন্য খোলা থাকবে। রবিবার সাপ্তাহিক বন্ধ। আবদুল মান্নানের চিত্রকর্ম প্রদর্শনী ‘প্রিয় বাংলাদেশ’ ॥ ধানম-ির গ্যালারি চিত্রকে শুরু হলো শিল্পী আবদুল মান্নানের চিত্রকর্ম প্রদর্শনী। শুক্রবার বিকেলে প্রিয় বাংলাদেশ শীর্ষক এ প্রদর্শনীর সূচনা হয়। ১২ দিনব্যাপী প্রদর্শনী উদ্বোধন করেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন ল্যাবএইড গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডাঃ এ এম শামীম। সভাপতিত্ব করেন বরেণ্য চিত্রশিল্পী অধ্যাপক সমরজিৎ রায় চৌধুরী। প্রদর্শনীতে শিল্পীর সাম্প্রতিককালে আঁকা প্রায় অর্ধশত চিত্রকর্ম ঠাঁই পেয়েছে। আগামী ১৬ নবেম্বর পর্যন্ত চলবে প্রদর্শনী। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। প্রকৃতি ও নিসর্গ বিষয়ক তিন গ্রন্থের প্রকাশনা ॥ প্রকাশিত হলো প্রকৃতি ও নিসর্গবিষয়ক তিনটি গ্রন্থ। প্রকাশ করেছে প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান কথাপ্রকাশ। বইগুলো হলো বিপ্রদাশ বড়–য়া রচিত ‘অভিমানী নদী ও নিসর্গ’, মোকাররম হোসেন রচিত ‘তুমি বৃক্ষ আদি প্রাণ’ ও জায়েদ ফরিদ রচিত ‘উদ্ভিদস্বভাব : গাছপালার বিচিত্র জীবনকথন’। শুক্রবার বিকেলে জাতীয় জাদুঘরের প্রধান মিলনায়তনে গ্রন্থগুলোর প্রকাশনা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। সঙ্গে ছিল সঙ্গীত ও নৃত্য পরিবেশনায় সাজানো সাংস্কৃতিক পর্ব। অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন চিত্রশিল্পী হাশেম খান এবং বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির সভাপতি ওসমান গনি। আলোচক ছিলেন নিসর্গবিদ অধ্যাপক দ্বিজেন শর্মা, ইনাম আল হক এবং ফিলিপ গাইন। সভাপতিত্ব করেন ড. আইনুন নিশাত। সাংস্কৃতিক পর্বে গান পরিবেশন করেন শিল্পী ফরিদা পারভীন, রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ও সম্পা দাস। এছাড়াও ছিল কথক নৃত্য সম্প্রদায়ের পরিবেশনা। উদীচীর স্মরণে রণেশ দাশগুপ্ত ॥ শ্রদ্ধা ও ভালবাসায় বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা, সাহিত্যিক ও সাংবাদিক রণেশ দাশগুপ্তকে স্মরণ করল উদীচী। রণেশ দাশগুপ্তের ১৯তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে শুক্রবার সন্ধ্যায় উদীচী ঢাকা মহানগর সংসদ এ স্মরণসভার আয়োজন করে। তোপখানা রোডের উদীচীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত স্মরণসভার শুরুতে সঙ্গীত পরিবেশন করেন সংগঠনের শিল্পীরা। এরপর শুরু হয় আলোচনাসভা। এতে সভাপতিত্ব করেন উদীচী ঢাকা মহানগর সংসদের সভাপতি কাজী মোহাম্মদ শীশ। রণেশ দাশগুপ্তের সংগ্রামী জীবনের নানা দিকের ওপর আলোকপাত করেন উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সহসভাপতি হাবিবুল আলম, সাধারণ সম্পাদক প্রবীর সরদার, কেন্দ্রীয় সংসদের সদস্য এবং উদীচী কানাডা সংসদের সাবেক সভাপতি আজিজুল মালিক, ঢাকা মহানগর সংসদের সহসভাপতি অধ্যাপক এএন রাশেদা, অমিত রঞ্জন দে, সাধারণ সম্পাদক ইকবালুল হক খান এবং সহসাধারণ সম্পাদক প্রদীপ ঘোষ। অনুষ্ঠানে আবৃত্তি পরিবেশন করেন উদীচী কাফরুল শাখার সহসভাপতি সুব্রত ভট্টাচার্য, ঢাকা মহানগর সংসদের সম্পাদকম-লীর সদস্য সুমিত পাল। এছাড়া সঙ্গীত পরিবেশন করে উদীচী ঢাকা মহানগর সংসদের শিল্পীরা।
×