ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সমাবেশের বিকল্প স্থান চাইবে বিএনপি

প্রকাশিত: ০৫:৫৯, ৫ নভেম্বর ২০১৬

সমাবেশের বিকল্প স্থান চাইবে বিএনপি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ৭ নবেম্বর সমাবেশ করার জন্য বিএনপি সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যানের বিকল্প স্থান চাইবে বলে জানিয়েছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শুক্রবার দুপুরে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীদের নিয়ে রাজধানীর শেরে বাংলা নগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মাজারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন আমরা অবশ্যই বিকল্প স্থান চাইব। আশা করছি সেখানে আমরা সমাবেশ করার অনুমতি পাব। ফখরুল বলেন, বিএনপিকে সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করতে না দেয়ার মাধ্যমে প্রমাণিত হলো সরকার গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। এ ঘটনার মধ্য দিয়ে সরকারের স্বরূপ উন্মোচিত হয়েছে। এ সরকার যে একদলীয় শাসনব্যবস্থা কায়েম করতে চাইছে এটি তারই প্রতিফলন। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতার আসার পর থেকেই আমাদের সভা-সমাবেশের জন্য অনুমতি দেয়া হয় না। তিনি বলেন, স্বেচ্ছাসেবক দল জিয়ার মাজারে শপথ নিয়েছে তারা গণতন্ত্র ফিরে আনতে সংগ্রাম করবে। এই সংগ্রামে বিজয়ী না হওয়া পর্যন্ত তারা বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে আন্দোলন চালিয়ে যাবে। উল্লেখ্য, ৭ নবেম্বর ‘বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ উপলক্ষে রাজধানীর সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করতে চেয়েছিল বিএনপি। ৭ বা ৮ নবেম্বর সমাবেশ করার প্রস্তুতিও নেয়া হয়। এজন্য বিএনপির পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অনুমতি চাওয়া হয়। কিন্তু বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে জানানো হয় ৭, ৮ ও ৯ নবেম্বর সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যানে কাউকে সমাবেশ করতে দেয়া হবে না। বি-বাড়িয়ার নাসিরনগরে হিন্দু সম্প্রদায়ের মন্দির ও বাড়িঘরে হামলার ঘটনা প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করতে পরিকল্পিতভাবে এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে। একটি মহল, যারা গণতন্ত্রের দাবি থেকে দৃষ্টি সরিয়ে দিতে চায়, তারা এ ধরনের হীন কার্যকলাপে জড়িত। নাসিরনগরের ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসনের গাফিলতি ছিল এমন অভিযোগ করে তিনি বলেন, যে ব্যবস্থা নেয়া উচিত ছিল, তারা তা নেয়নি। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিচের দিকে নেমে গেছে। হিন্দু সম্প্রদায়ের মন্দির ও বাড়িঘরে হামলার ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, দেশে গণতন্ত্র না থাকার কারণেই বার বার এমন ঘটনা ঘটছে। সরকার যেহেতু একদলীয় শাসনব্যবস্থার দিকে এগিয়ে চলেছে এবং জনগণের অধিকার কেড়ে নিচ্ছে, সেক্ষেত্রে এ ধরনের অবস্থা স্বাভাবিক। তবে এ ধরনের ঘটনা যাতে আর না ঘটে সেজন্য সরকারকেই কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। তিনি বলেন, এ সরকার মানুষের সমস্যা সমাধান না করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করছে। যার ফলে এ ধরনের ঘটনাগুলো ঘটছে। হিন্দু সস্প্রদায়ের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় বিশেষ মহলের হাত রয়েছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন। জিয়ার মাজারে শ্রদ্ধা জানানোর সময় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, স্বেচ্ছাসেবক দলের নতুন কমিটির সভাপতি শফিউল বারী বাবু, সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েল, সাংগঠনিক সম্পাদক ইয়াসিন আলী প্রমুখ। এদিকে বিকেলে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলানয়তনে মহিলা দলের জেলা প্রতিনিধি সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সরকার ভয়ে বিএনপিকে ৭ নবেম্বরের সমাবেশ করতে অনুমতি দিচ্ছে না। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ জনগণকে ভয় পায় বিশেষ করে খালেদা জিয়াকে ভীষণ ভয় পায়। এ কারণেই তারা সমাবেশ করার অনুমতি দিচ্ছে না। মহিলা দলের জেলা প্রতিনিধি সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ৭ নবেম্বর আরও কয়েকটি রাজনৈতিক দল একই স্থানে সমাবেশ করতে চেয়েছে অজুহাত দিয়ে আমাদের সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের অনুমতি দেয়া হয়নি। তাহলে আমরা ৮ তারিখে সমাবেশ করব। সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যানে না হোক, আমাদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে করব। এখন দেখি আপনারা কোন অজুহাত দেন। মহিলা দল সভাপতি আফরোজা আব্বাসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী প্রমুখ। আজ মহিলা দলের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন খালেদা জিয়া ॥ মহিলা দলের নতুন কমিটির নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। রাত ৮টায় বিএনপি চেয়ারপার্সনের গুলশান কার্যালয়ে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হবে। সম্প্রতি আফরোজা আব্বাসকে সভাপতি, নুরজাহান ইয়াসমিনকে সিনিয়র সহ-সভাপতি, জেবা খানকে সহ-সভাপতি, সুলতানা আহমেদ সাধারণ সম্পাদক এবং হেলেন জেরিন খানকে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক করে বিএনপির অঙ্গ সংগঠন স্বেচ্ছাসেবক দলের নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়।
×