ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

পাকিস্তানে প্রশিক্ষিত দেশী জঙ্গীরাই নাশকতায় কলকাঠি নাড়ছে

প্রকাশিত: ০৫:৫৯, ৫ নভেম্বর ২০১৬

পাকিস্তানে প্রশিক্ষিত দেশী জঙ্গীরাই নাশকতায় কলকাঠি নাড়ছে

গাফফার খান চৌধুরী ॥ দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে পাকিস্তানে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত বাংলাদেশী জঙ্গীরাই দেশে একের পর এক নাশকতামূলক কর্মকা-ের মূল কলকাঠি নাড়ছে। এতে মূল সহযোগিতা করছে পাকিস্তানের কতিপয় জঙ্গীগোষ্ঠী। এসব জঙ্গী গোষ্ঠীকে পাকিস্তানের কোন কোন রাষ্ট্রীয় সংস্থাও সহযোগিতা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গুলশানের হলি আর্টিজানে হামলা ছাড়াও বাংলাদেশের অনেক হামলায় অংশগ্রহণকারীর অধিকাংশই পাকিস্তানে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত বাংলাদেশী জঙ্গীগোষ্ঠীর সদস্য। এসব হামলায় নানাভাবে সহযোগিতা করছে ভারতে পলাতক থাকা বাংলাদেশী জঙ্গী, ভারতীয় মুজাহিদীনদের কতিপয় গোষ্ঠী ও ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী বিভিন্ন সংগঠন। সম্প্রতি বাংলাদেশে বড় ধরনের নাশকতায় ব্যবহৃত কোন অস্ত্রের গায়েই অস্ত্রগুলো কোন্ দেশের তৈরি তার উল্লেখ নেই; যা এসব হামলার পেছনে গভীর ষড়যন্ত্র থাকার ইঙ্গিত দিয়েছে। নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, যারা এসব হামলার নেপথ্য কারিগর তাদের সঙ্গে অস্ত্র তৈরি ও পাচারকারী দেশগুলোর সংশ্লিষ্ট উচ্চ পর্যায়ের যোগাযোগ থাকার বিষয়টি প্রমাণ করে। গুলশান হামলায় ব্যবহৃত অস্ত্রের চালান সরবরাহের সঙ্গে জড়িতদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। জিজ্ঞাসাবাদকারী কর্মকর্তারাও এমন তথ্যই পাচ্ছেন। গত ১ জুলাই গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তরাঁ ও বেকারিতে জঙ্গী হামলায় নিহত হন দুই পুলিশ কর্মকর্তা, ১৭ বিদেশীসহ ২২ জন। পরে সেনাবাহিনীর কমান্ডো অভিযানে পাঁচ জঙ্গী নিহত হয়। জিম্মি অবস্থা থেকে উদ্ধার হয় ১৩ জন। গত ২ নবেম্বর রাজধানীর অভিজাত এলাকা গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তরাঁ ও বেকারিতে জঙ্গী হামলায় ব্যবহৃত অস্ত্র ও গোলাবারুদ সরবরাহকারী নব্য জেএমবির চার সদস্য মোঃ আবু তাহের (৩৭), মিজানুর রহমান (৩৪), মোঃ সেলিম মিয়া (৪৫) ও তৌফিকুল ইসলাম ওরফে ডাঃ তৌফিক (৩২) পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের হাতে মিরপুর থেকে গ্রেফতার হয়। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে হ্যান্ডমেড গ্রেনেড তৈরির মূল উপকরণ ৭৮৭টি ডেটোনেটর ও একটি ৯ এমএম বিদেশী পিস্তল ও বিস্ফোরক চোরাচালান সামগ্রী। তাদের তিন দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, জেএমবির মূল আমির জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় শূরা কমিটির সাবেক সদস্য মুফতি মাওলানা সাইদুর রহমান জাফর গ্রেফতার হওয়ার পর জেএমবি ভাগ হয়ে যায়। একাংশের দায়িত্ব পালন করছিল সাইদুর রহমানের প্রথম পক্ষের ছেলে ফাহিম। কলকাতায় গ্রেফতার হওয়া ফারুক অপর অংশের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছিল। তবে দুই পক্ষেরই মূল টার্গেট সাইদুর রহমান ও নিষিদ্ধ জঙ্গী সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলাটিমের আধ্যাত্মিক নেতা মুফতি মাওলানা জসীমুদ্দিন রাহমানীকে ছিনিয়ে নেয়া। মূলত এমন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের সূত্র ধরেই নতুন করে দেশে জেএমবির জোরালো কার্যক্রম শুরু হয়। তারই ধারাবাহিকতায় ত্রিশাল থেকে জেএমবির তিন দুর্ধর্ষ জঙ্গীকে ছিনিয়ে নেয় জেএমবি। পলাতক দু’জনই বর্তমানে ভারতে থাকতে পারে। সাইদুর রহমান ও রাহমানীকে ছিনিয়ে নিতে বাংলাদেশে থাকা জেএমবিকে সহযোগিতা করছে পাকিস্তান ও ভারতে পালিয়ে থাকা বাংলাদেশী জেএমবি সদস্যরা। সাইদুর রহমানের এক মেয়েজামাই ইজাজ ওরফে কারগিল পাকিস্তানের পাখতুনখাওয়া প্রদেশে অবস্থান করছিল। ইজাজ পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের বিভিন্ন জঙ্গীগোষ্ঠীর কাছ থেকে বাংলাদেশে জঙ্গীবাদের বিস্তার ঘটাতে ব্যাপক অর্থ সংগ্রহ করে। সেসব অর্থ পাকিস্তানলাগোয়া ভারতীয় সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় মুজাহিদীনদের মাধ্যমে বাংলাদেশের জেএমবির কাছে পাঠাত। এ কাজে ভারতে পালিয়ে থাকা বাংলাদেশী জেএমবি ও ভারতীয় মুজাহিদীন গোষ্ঠীগুলো এবং ভারতীয় কিছু বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন আগাগোড়াই সহযোগিতা করে আসছে। যদিও পরবর্তীতে এক জঙ্গীবিরোধী অভিযানে ইজাজসহ বাংলাদেশের চার জঙ্গী নিহত হয়। তবে এখনও অন্তত শতাধিক বাংলাদেশী জঙ্গী পাকিস্তান ও আফগানিস্তান সীমান্তবর্তী বিভিন্ন জঙ্গী আস্তানায় সমরাস্ত্রের প্রশিক্ষণ নিচ্ছে। সূত্র বলছে, ইজাজসহ চারজন মারা গেলেও পুরনো চ্যানেল নষ্ট হয়নি। বাংলাদেশের জঙ্গীগোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও ভারতের জঙ্গীগোষ্ঠী ও বিচ্ছিন্নতাবাদী গ্রুপগুলোর পুরনো চ্যানেল এখনও সচল। সেই পুরনো চ্যানেল ধরেই বাংলাদেশের জেএমবির কাছে অস্ত্র ও অর্থ দুটোই আসা অব্যাহত আছে। একাজে সহযোগিতা করছে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের কতিপয় জঙ্গীগোষ্ঠী এবং পাকিস্তানের একটি রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। নব্য জেএমবির কাছে ভারত হয়ে আসা অস্ত্র-গোলাবারুদের অধিকাংশই ভারত ও পাকিস্তানের বিভিন্ন প্রদেশের তৈরি। উদ্ধারকৃত ডেটোনেটর, জেল ও অস্ত্র ভারত থেকে চোরাচালানের মাধ্যমে বাংলাদেশে নিয়ে আসত গ্রেফতারকৃতরা। গ্রেফতারকৃতরা তা আত্মগোপনে থাকা নব্য জেএমবির সদস্যদের কাছে পৌঁছে দিত। গুলশান হামলায় ব্যবহৃত অস্ত্রগুলোও একই কায়দায় সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করিয়ে তা পলাতক মারজানের কাছে পৌঁছে দিয়েছিল গ্রেফতারকৃতরা। অস্ত্র-গোলাবারুদ সাধারণত ভারতের পশ্চিমবঙ্গ থেকে বালির ট্রাকে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করানো হতো। ভারতে বসে এ কাজে সহযোগিতা করত সম্প্রতি সে দেশে গ্রেফতার হওয়া ফারুক ওরফে জামাই ফারুকের নেতৃত্বে থাকা গ্রুপটি। ফারুকের সঙ্গে আরও পাঁচ জঙ্গী ভারতে গ্রেফতার হয়েছে। গ্রেফতারকৃত ফারুক ময়মনসিংহের ত্রিশালে প্রিজনভ্যান থেকে জেএমবির তিন জঙ্গী ছিনতাইয়ের অন্যতম হোতা। সূত্র বলছে, গুলশান হলি আর্টিজান বেকারি ও কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় জঙ্গী হামলায় ব্যবহৃত ছোট অস্ত্র তৈরি করা হয় পশ্চিমবঙ্গের মালদহে। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ থেকে অস্ত্রশস্ত্র চোরাচালানের পর ছোট মিজান ওরফে তারা গুলশান হামলার অন্যতম পরিকল্পনাকারী পরে পুলিশের সঙ্গে নারায়ণগঞ্জে বন্দুকযুদ্ধে নিহত তামিম চৌধুরী ও পলাতক নুরুল ইসলাম মারজানের কাছে পৌঁছে দিয়েছিল। সূত্রটি আরও জানিয়েছে, ভারতের বিহারের মুঙ্গের থেকে আনা অস্ত্র তৈরির কারিগররা মালদায় একটি আস্তানায় বসে অস্ত্রগুলো তৈরি করে দেয়। যারা অস্ত্রগুলো তৈরি করে তারা মূলত পাকিস্তান থেকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। কয়েক পাকিস্তানী তাদের এমন অস্ত্র-গোলাবারুদ তৈরি শেখায়। পুরো চক্রটির সঙ্গে পাকিস্তানের একটি রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা জড়িত। অস্ত্র তৈরির প্রশিক্ষকদের ওই গোয়েন্দা সংস্থাই পাঠিয়েছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে। সূত্র বলছে, অস্ত্র তৈরির প্রশিক্ষকরা পাকিস্তানের পশতু ভাষায় কথাবার্তা বলেছে। তারা মূলত পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশের দারা আদমখেলের বাসিন্দা। দারা আদমখেল মূলত পাকিস্তানের পাখতুনখাওয়া প্রদেশে অবস্থিত। জায়গাটি পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের সীমান্তে অবস্থিত। পাকিস্তানের পেশোয়ার ও কোহাটের মাঝে এক গ্রামে এই আদিবাসী সম্প্রদায়ের বাস। এরা দেশী-বিদেশী যেকোন ধরনের বন্দুক তৈরিতে পারদর্শী। তালেবানদেরও এই সম্প্রদায় অস্ত্র তৈরি করে দেয় এরা। আফগান সীমান্তবর্তী পাকিস্তানের ওই এলাকাটি সমরাস্ত্র তৈরির জন্য সুপরিচিত। ওই এলাকার কারিগররা অল্প সময়েই যে কোন আগ্নেয়াস্ত্রের নকল তৈরি করতে পারে। প্রকাশ্যেই ওই এলাকায় বাজারে অস্ত্র কেনাবেচা হয়। অন্যদিকে ভারতের বিহারের মুঙ্গের ছোট ধরনের আগ্নেয়াস্ত্র তৈরির জন্য পরিচিত। সেখানে পিস্তল জাতীয় অস্ত্র তৈরি হলেও একে-২২ রাইফেলের মতো অস্ত্র সাধারণত তৈরি হয় না। তবে একে-৪৭’র মতো স্বয়ংক্রিয় রাইফেলের বদলে কেন একে-২২ এর মতো আধা স্বয়ংক্রিয় রাইফেল তৈরি করা হলো তা নিয়ে বিস্তর পর্যালোচনা চলছে। প্রাথমিকভাবে বহনে সুবিধা, ওজনের হালকা হওয়ায় হলি আর্টিজানের হামলায় একে টু টু বোরের রাইফেল ব্যবহার করা হয়েছে বলে তদন্তকারীদের ধারণা। একে টু টু রাইফেল তৈরির প্রশিক্ষণও দিয়েছে পাকিস্তানী প্রশিক্ষকরা। এ ব্যাপারে বিশিষ্ট নিরাপত্তা বিশ্লেষক সেনাবাহিনীর সাবেক মেজর জেনারেল আব্দুর রশীদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জনকণ্ঠকে বলেন, বাংলাদেশের প্রায় প্রতিটি নাশকতার সঙ্গেই কোন না কোনভাবে পাকিস্তানের যোগাযোগ থাকার বিষয়টি অনেকটাই স্পষ্ট; যা অতীতে বহুবারই প্রমাণিত। এসব নাশকতামূলক কর্মকা-ে পাকিস্তানের জঙ্গী গোষ্ঠীগুলো ছাড়াও রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা থাকে। বিশেষ করে রাষ্ট্রীয় সামরিক গোয়েন্দা সংস্থারও পৃষ্ঠপোষকতা থাকার নজির রয়েছে। গুলশান হামলার ঘটনায় এখন পর্যন্ত যে ধরনের তথ্য বেরিয়েছে বা জানা গেছে, তাতে পাকিস্তানের মদদ থাকার বিষয়টি অনেকটাই স্টষ্ট। শুধু বাংলাদেশে নয়, ভারতের বিভিন্ন হামলায়ও মূলত পাকিস্তানের জঙ্গীগোষ্ঠীগুলো ও রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা থাকার নজির রয়েছে। পাকিস্তান সব সময়ই বাংলাদেশ ও ভারতে তাদের অনুকূল সরকার বা পরিবেশ না থাকলে এ ধরনের নাশকতায় সরাসরি মদদ দেয়। গুলশান হামলায়ও পাকিস্তানের মদদ থাকার বিষয়টি স্পষ্ট। প্রসঙ্গত, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান সীমান্ত লাগোয়া পাখতুনখাওয়া প্রদেশে বহু জঙ্গী আস্তানা রয়েছে। এসব আস্তানায় ভারি সমরাস্ত্রের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। বর্তমানে বাংলাদেশের অন্তত শতাধিক জঙ্গী এসব আস্তানায় প্রশিক্ষণ নিচ্ছে। ২০১৪ সালে পাকিস্তানের পাখতুনখাওয়ায় সেদেশের সেনাবাহিনী পরিচালিত একটি স্কুলের সবাইকে জিম্মি করে জঙ্গীরা। জিম্মীর পর স্কুলটির আট শিক্ষককে পুড়িয়ে হত্যা করে। এ দৃশ্য শিক্ষার্থীদের দেখতে বাধ্য করে জঙ্গীরা। এমন দৃশ্য দেখার পর স্কুলটির ৪১ ক্ষুদে শিক্ষার্থীকে নির্মমভাবে ব্রাশফায়ারে হত্যা করে। এমন ঘটনা সারা পৃথিবীতে তোলপাড় সৃষ্টি করে। এ ঘটনার পর পাকিস্তানে সাঁড়াশি অভিযান শুরু করে সেদেশের সব বাহিনী। গত বছরের ৮ জানুয়ারি সেই সাঁড়াশি অভিযানে পাকিস্তানের ওয়াজিরিস্তানের একটি জঙ্গী ক্যাম্পে নিহত হয় বাংলাদেশের জেএমবির আমির জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় শূরা কমিটির সাবেক সদস্য মুফতি মাওলানা সাইদুর রহমান জাফরের মেয়েজামাই ইজাজ ওরফে কারগিলসহ চার বাংলাদেশী জেএমবি জঙ্গী। চলতি বছরের ২৬ জুলাই রাজধানীর কল্যাণপুরের ৫ নম্বর সড়কের ৫৩ নম্বর ছয়তলা জাহাজ বিল্ডিংয়ে জঙ্গী আস্তানায় অভিযান চালায় যৌথবাহিনী। অভিযানে নয় জঙ্গী নিহত হয়। আহত অবস্থায় গ্রেফতার হয় জঙ্গী রিগ্যান। রিগ্যানের বরাত দিয়ে একটি সূত্র বলছে, পাকিস্তানের ওই স্কুলের আদলেই রাজধানীর কল্যাণপুরে জঙ্গী আস্তানাটির পাশেই দ্বীন কেজি ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে হত্যার পর শিক্ষকদেরও হত্যা করে সারা পৃথিবীতে বাংলাদেশে জঙ্গীবাদের ব্যাপক উত্থান ঘটেছে বলে ব্যাপক প্রচার চালানোর পরিকল্পনা ছিল। কিন্ত তার আগেই সে পরিকল্পনা ভেস্তে যায়।
×