ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

একটা আইফোন পেতে কত কী না করেছেন এরা!

প্রকাশিত: ২১:১৫, ৪ নভেম্বর ২০১৬

একটা আইফোন পেতে কত কী না করেছেন এরা!

অনলাইন ডেস্ক ॥ আই-ফোন। বাংলা করলে মোটামুটি যা দাঁড়ায় ‘আমার ফোন’। বিশ্বের সবচেয়ে ইপ্সিত, কুলীন, আধ খাওয়া ‘আপেল’ ব্রান্ডের এই মোবাইলকে ‘আমার ফোন’ ভাবলে, একটু রোমাঞ্চিত হতেই হয়। বাজারে নানা ব্র্যান্ডের চোখ ধাঁধানো মোবাইল রয়েছে। কিন্তু নিজস্ব সফটওয়ার, অনন্য লুকস এবং স্মার্ট ফিচারসের জন্য অন্যান্য ব্র্যান্ডের থেকে অনেকখানি এগিয়ে থাকে অ্যাপল। প্রথম আইফোন বাজারে আসে ২০০৭ সালে ২৯ জুন। এরপর থেকে যখনই আইফোনের নতুন জেনারেশন বাজারে এসেছে, হইচই ফেলে দিয়েছে। খবরের শিরোনামে থেকেছে। চলতি বছর ৭ সেপ্টেম্বর বাজারে আসা লেটেস্ট ভার্সন আইফোন সেভেনকে নিয়ে এখনও উন্মাদনায় ভাসছে বিশ্ব। এই আইফোন পাওয়ার জন্য মানুষ কী না করতে পারে। যাঁর কাছে আইফোন কেনার সামর্থ্য আছে, তিনি গোটা বিশ্ব ঘুরে আইফোন কেনেন। কেউ আবার অর্থ না থাকলে নিজের কিডনিটাও অবলীলাক্রমে বিক্রি করে দিতে পারে। এই ধরনের অবাক করা খবর প্রায়ই পেয়ে থাকি। আইফোন কেনার ক্রেজ নিয়ে এক ছাদের তলায় রাখা হল এক ডজন গল্প। আসলে তা সত্যি! আইফোন সেভেন পেতে আগাম বুকিং করেছিলেন ইউক্রেনের অলেক্সান্ডার তুরিন। এক ইলেক্ট্রনিক্স কোম্পানির প্রোমোশন অফারে ফ্রি তে পেয়ে যান আইফোন সেভেন। তারপর তাঁকে দেখে কে! আনন্দে আত্মহারা হয়ে নিজের নামই পাল্টে ফেলেন। মাত্র ২ ডলার খরচ করে নাম রাখেন আইফোন সিম (স্থানীয় ভাষায় সিম মানে সেভেন)। পাগলামী না তো এটা কী? আইফোন ৬ প্রথম বাজারে আসার সময় আমেরিকায় বসে আগাম বুক করেছিলেন এক মার্কিন দম্পতি। সেই আইফোন পেতে ১২ হাজার কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে সিডনিতে গিয়ে পৌঁছন। সিডনিতেই ডেলিভারি ঠিকানা দিয়েছিলেন মার্কিন দম্পতি। মার্কিন দম্পতির মতো তাইল্যান্ডের এক ব্যাক্তিও নিজের দেশ ছেড়ে অস্ট্রেলিয়া যান আইফোন নিতে। সেই ব্যক্তি টানা ১৮ ঘণ্টা বৃষ্টিতে ভিজে অপেক্ষা করেন আইফোন সেভেন প্লাস পাওয়ার জন্য। আইফোন না দিলে বিয়ে হবে না। এমন হুঁশিয়ারি এসেছিল কনের ভাইয়ের পক্ষ থেকে। বোনকে বিয়ে করার শর্ত হিসাবে ভাবি জামাইবাবুর কাছ থেকে একেবারে আইফোন হেঁকে বসেন তিনি। বাজারে আইফোন ৬ আসা মাত্রই তাকে কিনে দিতে হবে, এমনই দাবি ছিল তার। আইফোনের বিনিময়েই শেষ পর্যন্ত বিয়েটা হয়েছিল। আইফোনের প্রথম মডেলটা পেতে কয়েক লক্ষ মানুষের লাইন পড়ে প্রতি বার। কিন্তু হাতে যখন টাকা থাকে, সময় নষ্ট করে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইন দেবেনই বা কেন? প্রতিবারই দেখা যায় গ্রাহকরা কয়েক হাজার ডলার খরচ করে লাইনে ভাড়াটে ব্যক্তিকে নিয়োগ করে। সেই ব্যক্তি যত টাকাই নিক না কেন, প্রথম ফোনটা তাঁরই চাই। আইফোন পেতে নিজের মেয়েকে বিক্রি করতেও বাধে না মা-বাবার। এমনই ঘটনা ঘটেছিল চিনে। ৫ লক্ষ টাকার বিনিময়ে তাঁদের নবজাতককে বিক্রি করে দেয় এক দম্পতি। বিভিন্ন সংবাদপত্রে এই খবর প্রচার হওয়ার পর, দম্পতি জানান, শিশুর ভবিষ্যত ভাল রাখতেই সম্ভ্রান্ত এক পরিবারের কাছে মানুষ করতে দিয়েছেন তাঁরা। তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, শিশু বিক্রির টাকায় নানা বিলাসবহুল সামগ্রী কিনেছিলেন ওই দম্পতি। এবং একেবারে প্রথমেই যে জিনিষটা কিনেছিলেন, সেটা ছিল একটা আইফোন। আইফোন কিনতে অভিনব বিজ্ঞাপন। ২০১৫ সালে চিনে স্পার্ম ব্যাঙ্ক বিজ্ঞাপন দিয়েছিল, স্পার্ম দান করলে আইফোন ৬এস কিনতে পারবেন। কী ভাবে? তারা জানান, স্পার্ম দান করলে যে অর্থ (৩৫০০ ইউয়ান) দেওয়া হয়, তা বাড়িয়ে ৫ হাজার করে দেওয়া হবে। যা ভারতীয় মুদ্রায় ৫০ হাজার টাকার কাছাকাছি। এই অর্থে অনায়াসে আইফোন কিনতে পারবেন বলে জানান তারা। তবে তাদের বিজ্ঞাপনে সতর্কবার্তাও ছিল, “এখানে কিডনি নয় স্পার্ম নেওয়া হয়।” এক জার্মান পড়ুয়ার আইফোন পড়ে যায় একটি লেকে। সেটি উদ্ধার করতে নানা ফন্দি এঁটেও ব্যর্থ হয় সে। লেক কর্তৃপক্ষের কাছে গিয়ে অনুরোধ জানায়, কেউ যদি ডাইভিং স্যুট দেয় তাহলে সে ফোনটি খুঁজতে পারে। অনুরোধ নাকচ হলে, রাতারাতি একটি পাম্প ও দু’টি হোস পাইপ জোগার করে আনে সে। পাম্প চালিয়ে লেকের জল তোলায় কার্যত বন্যার সৃষ্টি হয় আশপাশের এলাকায়। প্রতিবেশীরা ক্ষিপ্ত হয়ে পুলিশে খবর দেয়। তাতে ছেলের ভ্রুক্ষেপ নেই। না আটকালে নাকি আইফোনটা পেয়েই যেত সে। আইফোনের জন্য মা-কে খুন করার ষড়যন্ত্রও বাদ যায়নি। ১২ বছর বয়সী কিশোরী মেয়ের কাছ থেকে আইফোন সরিয়ে রাখলে, নিজের মা-কে দু’বার খুন করার পরিকল্পনা করে সে। মেয়েটিকে পুলিশ গ্রেফতার করে। এখন জুভেনাইল কোর্ট বিচার চলছে তার। আইফোনের জন্য নিজের প্রেমিকাকে ‘ভাড়া’ খাটানোর বিজ্ঞাপনও পড়েছিল! ২০১৪ সালে ঘটনাটি ঘটে চিনে। সংজিয়াং বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আইফোন কেনার জন্য নিজের গার্লফ্রেন্ডকে ‘ভাড়া’ খাটানোর জন্য বিজ্ঞাপন দেয়। আইফোন কিনতে কিডনি বিক্রি এমন জোকস আমরা হামেশাই করে থাকি। বাস্তবে এমন কাণ্ডটা ঘটিয়েছিলেন চিনের এক যুবক। কিডনি বিক্রি করে ২২ হাজার ইউয়ান (ভারতীয় মুদ্রায় ২ লক্ষ ১৭ হাজার টাকা) পান তিনি। তা দিয়ে আই প্যাড এবং আইফোন কেনেন। বাড়ি কেনার জন্য চিনের এক যুবতী অভিনব ফন্দি এঁটেছিলেন। ২০ জনকে বয়ফ্রেন্ড বানিয়ে তাদের কাছ থেকে একটি করে আইফোন সেভেন আবদার করেন তিনি। বয়ফ্রেন্ডের থেকে ২০টি আইফোন বাগিয়ে সেগুলি বিক্রি করে পরিবারের জন্য একটি ফ্ল্যাট বুক করেন। সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা
×