ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

মোরসালিন মিজান

বায়ান্ন বাজার তিপ্পান্ন গলি

প্রকাশিত: ০৫:৪৮, ৪ নভেম্বর ২০১৬

বায়ান্ন বাজার তিপ্পান্ন গলি

দেশী-বিদেশী শিল্পীদের অংশগ্রহণে শুরু হচ্ছে এশীয় চারুকলা প্রদর্শনী বাংলাদেশ। দ্বিবার্ষিক আসরে জায়গা করে নেয়ার স্বপ্ন দেখেন দেশের শিল্পীরা। বিদেশীরাও নিজেদের নির্বাচিত শিল্পকর্ম নিয়ে আসরে যোগ দেন। বিগত দিনগুলোতে দেখা গেছে, দেশের যে নবীন শিল্পীরা এই আসরে ভাল করেছেন পরবর্তীতে তাঁরা দেশে-বিদেশে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। এসব কারণে বিয়েন্নালটিকে বাংলাদেশের চারুকলার ইতিহাসে সবচেয়ে বড় অর্জন মনে করা হয়। সাফল্যের ধারাবাহিকতায় এবার বসছে ১৭তম আসর। শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালায় আগামী ১ ডিসেম্বর বিয়েন্নালের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হবে। এখন চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। এরই মাঝে সরগরম হয়ে উঠেছে শিল্পকলা একাডেমি। বিভিন্ন কমিটি দিন-রাত কাজ করছে। বৃহস্পতিবার সমবেত হয়েছিলেন জাতীয় কমিটির সদস্যরা। এসেছিলেন বরেণ্য শিল্পী হাশেম খান, সমরজিৎ রায় চৌধুরী, রফিকুন নবী, আবুল বারক্ আলভী, হামিদুজ্জামান খান, ড. ফরিদা জামান, মোহাম্মদ ইকবাল, নিসার হোসেন প্রমুখ। জাতীয় কমিটির দ্বিতীয় সভায় যোগ দেন তারা। সেমিনার কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। উপস্থিত ছিলেন শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী ও চারুকলা বিভাগের পরিচালক মনিরুল ইসলাম। সভা শেষে সংস্কৃতিমন্ত্রী জানান, এবার আরও বড় পরিসরে প্রদর্শনীর আয়োজন করা হবে। এরই মাঝে ৫২টি দেশের অংশগ্রহণের ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া গেছে। বিদেশ থেকে শিল্পী আসছেন ১৩১ জনের মতো। বাংলাদেশের শিল্পী সংখ্যা ১৫৭। মূল প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হবে জাতীয় চিত্রশালায়। পাশাপাশি রাখা হবে আরও কিছু আয়োজন। জাতীয় জাদুঘরে জয়নুল আবেদিন, কামরুল ইসলাম, সুলতানের মতো কিংবদন্তি শিল্পীদের ছবি নিয়ে বিশেষ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হবে। বিদেশী শিল্পীদের বাংলাদেশের ফোক আর্ট সম্পর্কে ধারণা দিতে একাডেমিতে আয়োজন করা হবে মৃৎ ও কারুশিল্প মেলার। যথাসময়ে সকল কাজ সম্পন্ন করা হবে বলে জানান মন্ত্রী। গুঁড়িয়ে দেয়া হলো ‘বাগ-ই-মোনায়েম’। হ্যাঁ, মোনায়েম খানের বাড়ি। পূর্ব পাকিস্তানের এই গবর্নর বাঙালী হয়েও স্বজাতির বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিলেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতার সংগ্রাম রুখে দেয়ার পাকিস্তানী ষড়যন্ত্রে যোগ দিয়েছিলেন। সেই থেকে গণধিকৃত। বেইমানটি আর নেই। ১৯৭১ সালে মুক্তিযোদ্ধারা তার প্রাপ্য সাজা বুঝিয়ে দেন। মোনায়েম খান নিহত হলেও, তার স্মৃতিচিহ্ন হয়ে বনানী কবরস্থান সড়কে দাঁড়িয়ে ছিল বাড়িটি। মূল সড়ক থেকে এটি ১৬ ফুট ভেতরে। প্রায় ৫ বিঘা জমি দখল করে বাড়িটি নির্মাণ করা হয়। ১০ কাঠা জমির ওপর ছিল অবৈধ ভবন। বাড়ির কোন বৈধ নথি দেখাতে ব্যর্থ হওয়ায় বৃহস্পতিবার এটি গুঁড়িয়ে দেয়া হয়। দুপুর আড়াইটার দিকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ আনোয়ারুল ইসলাম উচ্ছেদ কার্যক্রমে নেতৃত্ব দেন। বিকেলে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আনিসুল হক ওই জায়গা সড়কের জন্য উন্মুক্ত বলে ঘোষণা দেন। আবারও হুমকির মুখে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ। ধর্মান্ধ মৌলবাদী গোষ্ঠী দ্বারা আক্রান্ত হয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জসহ বেশ কিছু এলাকা। উগ্রপন্থীরা এসব এলাকায় হিন্দু সম্প্রদায়ের উপাসনালয়ে হামলা করেছে। বাড়িঘর লুট করেছে। এমন তা-বের খবরে সারা দেশের প্রগতিশীল চিন্তার মানুষ ক্ষুব্ধ, ব্যথিত। রাজধানী শহর ঢাকাতেও চলছে প্রতিবাদী সভা-সমাবেশ। বৃহস্পতিবার বিকেলে শাহবাগে বিভিন্ন প্রগতিশীল রাজনৈতিক দলের কর্মী ও সচেতন নাগরিকরা সমবেত হয়ে বর্বরোচিত হামলার তীব্র নিন্দা জানান। সংশ্লিষ্ট এলাকার মন্ত্রী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের কঠোর সমালোচনা করেন বক্তারা। একই দিন জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সাংবাদিকদের একটি মানববন্ধন থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হিন্দু সম্প্রদায়ের তিন শতাধিক বাড়িতে একযোগে হামলা, ভাংচুর এবং মন্দীর ধ্বংসের ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করা হয়। একদিন আগে বুধবার টিএসসিতে প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট। এখান থেকে সাম্প্রদায়িক হামলার সঙ্গে জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেফতার ও বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান সংস্কৃতি কর্মীরা। মঙ্গলবার একই দাবি জানায় উদীচী। প্রতিবাদী সভা সমাবেশের ধারাবাহিকতায় আজ শুক্রবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করবে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট।
×