ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বিপিএলের চতুর্থ আসরের পর্দা উঠছে আজ

প্রকাশিত: ০৫:৪৫, ৪ নভেম্বর ২০১৬

বিপিএলের চতুর্থ আসরের পর্দা উঠছে আজ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ মাশরাফি বিন মর্তুজার কি কপাল। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগের (বিপিএল টি২০) আগে তিনবার আয়োজন হয়েছে। তিনবারই চ্যাম্পিয়ন দলের অধিনায়ক ছিলেন মাশরাফি। হ্যাটট্রিক শিরোপা জিতেছেন। আজ মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে দুপুর আড়াইটায় কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ও রাজশাহী কিংসের মধ্যকার ম্যাচ দিয়ে পর্দা উঠবে বিপিএল চতুর্থ আসরের। এ আসরেও শিরোপা জিতলেতো টানা চতুর্থবার চ্যাম্পিয়ন অধিনায়ক হয়ে যাবেন মাশরাফি! আরেকদিকে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের কি পোড়া কপাল। গত তিন আসরের মধ্যে সর্বশেষ দুই আসরের ফাইনালে খেলেছেন। কিন্তু একবারও শিরোপা নিজের করে নিতে পারেননি। রানার্সআপেই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে। সর্বশেষ টানা দুইবারতো মাশরাফির কাছেই হেরেছেন মাহমুদুল্লাহ। দুইজনেরই আবার বৃহস্পতিবার দুপুরে অনুশীলনে দেখা হয়ে গেল। মাশরাফি জড়িয়ে ধরলেন মাহমুদুল্লাহকে। মাহমুদুল্লাহর কানে কি যেন বললেনও মাশরাফি। যেন এবারও দুইজন টানা তৃতীয়বারের মতো ফাইনালে মুখোমুখি হওয়ার সম্ভাবনার কথাই বললেন! সত্যিই কী তাই হবে? ‘কাগজে-কলমে’ সেই সুযোগ কোনভাবেই দেখা যাচ্ছে না। ২০১২ সালে মাশরাফির অধিনায়কত্বে ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটর্স চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। রানার্সআপ হয়েছিল বরিশাল বুলস। ২০১৩ সালে আবার মাশরাফির নেতৃত্বে ঢাকা-ই শিরোপা জিতে। রানার্সআপ হয় মাহমুদুল্লাহর চিটাগং কিংস। ম্যাচ গড়াপেটার জন্য এরপর দুইবছর বিপিএল বন্ধ থাকে। আবার ২০১৫ সালে তৃতীয় আসর গড়ায়। এ আসরেও বাজিমাত করেন মাশরাফি। দুর্বল দল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে নিয়ে চ্যাম্পিয়ন হন। একইরকম দল নিয়ে মাহমুদুল্লাহ বরিশাল বুলসকে নেতৃত্বগুণ দেখিয়ে ফাইনালে তোলেন। কিন্তু এবারও মাহমুদুল্লাহর সামনে বাধা হয়ে দাঁড়ান মাশরাফিই। এবারও ২০১৩ সালের পর মাশরাফি-মাহমুদুল্লাহ লড়াইয়ে মাশরাফিই জয়ী হন। এবারও কী সেইরকম কিছুরই দেখার মিলবে? সেই প্রশ্নই থাকছে। দুইজন বৃহস্পতিবার দুপুরে যখন কোলাকোলি করলেন, তখন সেই প্রশ্ন আরও বেশি উঠল! কিন্তু এবার দুইবার বিপিএলের ফাইনালে খেলা মাহমুদুল্লাহ বরিশালে নন, খেলছেন নতুন দল খুলনা টাইটান্সে। যে দলটি আহামরি কিছু নয়। আর তিনবারই ফাইনালে খেলে শিরোপা জেতা মাশরাফি যথারীতি কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সেই আছেন। এ দলটিও খুব বেশি শক্তিশালী নয়। এরপরও দুর্বল দল নিয়েই ফাইনালে ওঠার কৃতিত্ব মাশরাফি ও মাহমুদুল্লাহর আছে। যদি এবারও তাই হয়ে যায়! তাহলেইতো টানা তৃতীয়বার শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে মুখোমুখি হয়ে যাবেন মাশরাফি ও মাহমুদুল্লাহ। বিপিএলে প্রতিদিন দুটি করে ম্যাচ হবে। আজ তাই রাত সাড়ে সাতটায় রংপুর রাইডার্স ও খুলনা টাইটান্স লড়াই করবে। মাশরাফি ও মাহমুদুল্লাহ দুইজনেরই ফাইনালে খেলার মিশনও শুরু হয়ে যাবে। বিপিএলের প্রতিটি ম্যাচ বেসরকারী টেলিভিশন ‘চ্যানেল ৯’ সরাসরি সম্প্রচার করবে। বিপিএল ৩৬ দিন ধরে চলবে। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়াম ও চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে হবে খেলাগুলো। ১৭ থেকে ২২ নবেম্বর চট্টগ্রামে ১০টি খেলা হবে। বাকি খেলাগুলো মিরপুরেই হবে। ৯ ডিসেম্বর টুর্নামেন্টের পর্দা নামবে। এর আগে ডাবল লীগ পদ্ধতিতে সাত দলের মধ্যে লড়াই হবে। টুর্নামেন্টে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স, রানার্সআপ বরিশাল বুলস, ঢাকা ডায়নামাইটস, চিটাগং ভাইকিংস, রংপুর রাইডার্সের সঙ্গে নতুন দুই দল খুলনা টাইটান্স ও রাজশাহী কিংস খেলবে। প্রথম দুই আসরের পর ম্যাচ গড়াপেটায় জড়িত থাকায় ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটর্সকে তৃতীয় আসরে বাদ দেয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে চিটাগং কিংসও তৃতীয় আসরে ছিলেন না। এবার সিলেট সুপার স্টার্স নেই। গত আসরে ৬টি দল খেললেও এবার ৭টি দল নিয়ে হচ্ছে টুর্নামেন্ট। টুর্নামেন্টের লীগ পদ্ধতি শেষে পয়েন্ট তালিকায় সেরা চার দল ফাইনালে খেলার জন্য টিকে থাকবে। বাকি দুই দল বিদায় নেবে। ভারতের আইপিএলের মতো বিপিএলেও প্রথম কোয়ালিফায়ার, এলিমিনেটর ও দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার খেলা হবে। প্রথম কোয়ালিফায়ারে পয়েন্ট তালিকার সেরা দুই দল খেলবে। যে জিতবে ফাইনালে খেলা নিশ্চিত করবে। হারা দল ফাইনালে খেলার যোগ্যতা অর্জন করতে আরেকটি ম্যাচ খেলার সুযোগ পাবে। এলিমিনেটরে পয়েন্ট তালিকার তৃতীয় ও চতুর্থ দল অংশ নেবে। যে দল জিতবে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে খেলবে। হারা দল বিদায় নেবে। দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে এলিমিনেটরের জেতা দল ও প্রথম কোয়ালিফায়ারের হারা দলের মধ্যে লড়াই হবে। যে জিতবে শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে খেলবে। ৪ ডিসেম্বর লীগ পর্বের লড়াই শেষে ৬ ডিসেম্বর দুপুরে এলিমিনেটর ও রাতে প্রথম কোয়ালিফায়ার অনুষ্ঠিত হবে। আর দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার ম্যাচটি হবে পরেরদিন। ৯ ডিসেম্বর হবে প্রথম কোয়ালিফায়ার ও দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার ম্যাচে জেতা দুই দলের মধ্যকার ফাইনাল ম্যাচ। যদি এদিন বৃষ্টি হয়, এজন্য একদিন রিজার্ভ ডে’ও রাখা হয়েছে। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামেই হবে শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচটি। এ ম্যাচটির মধ্য দিয়ে বিপিএলের চতুর্থ আসরের পর্দা নামবে। উদ্বোধনহীন যে টুর্নামেন্টের পর্দা উঠছে আজ।
×