ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

অপরাধীরা পার পাবে না ॥ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৫:৪৪, ৪ নভেম্বর ২০১৬

অপরাধীরা পার পাবে না ॥ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরের ঘটনা অনাকাক্সিক্ষত বলে আখ্যায়িত করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিয়েছে। তবে তারা আরও বেশি তৎপর হতে পারত। তবে অপরাধীরা পার পাবে না। সচিবালয়ে বৃহস্পতিবার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত আসন্ন বিশ্ব এজতেমায় আগত বিদেশী মেহমানদের নিরাপত্তা ও তাদের ভিসা সহজীকরণ সংক্রান্ত এক বৈঠক শেষে এ মন্তব্য করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু আমরা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিয়েছি। প্রধানমন্ত্রী নিজস্ব টিম দিয়ে ঘটনার তদন্ত করেছেন। কেন বা কী কারণে এমন ঘটনা ঘটেছে, কারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, এর সব কিছুই তিনি জানেন। এ ছাড়া ঘটনার তদন্তে দলীয় টিম এবং একাধিক তদন্ত টিম সেখানে গেছে। পুলিশের কোন গাফিলতি ছিল কি না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, পুলিশের কোন গ্যাপ ছিল না। তারপরেও ঘটনার নিয়ন্ত্রণে পুলিশ আরও তৎপর হতে পারত। এজন্য তাৎক্ষণিক ওসিকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, পুলিশ শতভাগ ব্যর্থ বলা যাবে না। সবাই বলেছেন, পুলিশ ভালভাবেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছে। কাজেই এই ঘটনায় আইনশৃঙ্খলার অবনতি হয়েছে বলার সুযোগ নেই। গত ৩০ অক্টোবর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং ওসির উপস্থিতিতে সমাবেশে ‘উসকানিমূলক’ বক্তব্যের পর ওই হামলা হয়েছিল। এতে প্রশাসনের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে বিভিন্ন মহল থেকে। অভিযোগের মুখে ওসি আব্দুল কাদেরকে নাসিরনগর থেকে সরিয়ে নিলেও বড় ধরনের ব্যর্থতা তার ছিল না বলেই মনে করছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তারও (ওসি) কোন গ্যাপ ছিল না। তারপরও আমরা মনে করেছি সে (ওসি) আরেকটু তৎপর হতে পারত। সেজন্য আমরা তাকে প্রত্যাহার করেছি। ইসলাম অবমাননার অভিযোগ তুলে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের যে সমাবেশের পর হামলা হয়েছিল, তাতে ওসি কাদের ও ইউএনও চৌধুরী মোয়াজ্জেম আহমেদও বক্তব্যত রাখেন। মন্দির ও বাড়িঘরে হামলার খবর শুনে র‌্যাব গেলেও বাহিনীর কর্মকর্তা বলেছিলেন, তার বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত হওয়ার আগেই হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। এই ঘটনা তদন্তে পুলিশ সদর দফতর থেকে গঠন করা তদন্ত দল বৃহস্পতিবার সকালে নাসিরনগরে গিয়ে তদন্ত শুরু করেছে। তদন্ত দলের নেতৃত্বে রয়েছেন চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি মোঃ শাখাওয়াত হোসেন। জেলা পুলিশ, পুলিশ সদর দফতর ও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মোট তিনটি কমিটি কাজ করছে। এই ঘটনায় দায়ের করা দুটি মামলার প্রত্যেকটিতে আসামি করা হয়েছে অজ্ঞাতনামা ১০০০ থেকে ১২০০ জনকে। গত ২৮ অক্টোবর নাসিরনগরের হরিপুর ইউনিয়নের হরিণবেড় গ্রামের জগন্নাথ দাসের ছেলে রসরাজ দাসের ফেসবুক পাতায় একটি পোস্ট নিয়ে ঘটনার সূত্রপাত বলে স্থানীয়রা জানান। ফেসবুকে রসরাজ ‘ইসলাম অবমাননা করে’ পোস্ট দিয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠার পর পুলিশ তাকে শনিবার আটক করে। পরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। ওই ঘটনা নিয়ে রবিবার বিক্ষোভ সমাবেশের পর হামলার ঘটনা ঘটে।
×