ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

খুনী মোশতাক ছিল বেইমান- জেলহত্যা দিবসের স্মরণসভায় প্রধানমন্ত্রী

বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতা হত্যাকাণ্ডে জিয়া জড়িত

প্রকাশিত: ০৫:৪১, ৪ নভেম্বর ২০১৬

বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতা হত্যাকাণ্ডে জিয়া জড়িত

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতা হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে ‘জিয়াউর রহমান জড়িত’ উল্লেখ করে বলেছেন, খুনী মোশতাক ছিল বেইমান, মীরজাফর। আর সেই খুনী মোশতাকই জিয়াকে সেনা প্রধান করে। এতেই প্রমাণ হয়, বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতার হত্যাকা-ের সঙ্গে জিয়া জড়িত, এতে কোন সন্দেহ নেই। আর বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনীরাও সাক্ষাতকার দিয়ে বলেছে যে, জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধু হত্যাকা-ের কথা জানত, তাদের সঙ্গে ছিল। আত্মস্বীকৃত খুনীদের বিচার না করে যারা মদদ দেয়- তারাও খুনী, সমান অপরাধী। মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের প্রতিশোধ আর কোন মতেই যাতে স্বাধীনতার পক্ষ শক্তি মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারে, মুক্তিযুদ্ধ ও অসাম্প্রদায়িক চেতনাকে ধ্বংস করতেই বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করা হয়। ভয়াল-বীভৎস জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত স্মরণসভায় সভাপতির বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী সরকারের ধারাবাহিকতা রক্ষায় দলের নেতাকর্মীসহ দেশবাসীর সহযোগিতা কামনা করে আরও বলেন, সরকারের ধারাবাহিকতা ছিল বলেই আমরা দেশকে সবদিক থেকে উন্নতি-সমৃদ্ধির দিকে নিয়ে যেতে পেরেছি। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় ছিল বলেই সারাবিশ্বের সামনে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোলমডেল। দেশের এই উন্নতি-অগ্রগতি ও সাফল্যের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে সরকারের ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে হবে। বাংলাদেশ আজ বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতার স্বপ্নের স্বাধীনতার চেতনায় উন্নয়ন ও অগ্রগতির পথে এগিয়ে যাচ্ছে। দেশের এই অগ্রযাত্রা কেউই রুখতে পারবে না। গণতন্ত্র ও নির্বাচন কমিশন নিয়ে কথা বলার আগে বিএনপি নেত্রী ও তার দলের নেতাদের আগে আয়নায় নিজেদের মুখ দেখার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন অনেকের মুখে গণতন্ত্র ও নির্বাচন কমিশন গঠনের কথা শুনি। আমার প্রশ্ন- নির্বাচন নিয়ে জিয়াউর রহমান ও তাঁর স্ত্রী খালেদা জিয়া কী করে গেছেন? এদেশে নির্বাচন নিয়ে প্রহসন ও জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নেয়া তো প্রথম জিয়াউর রহমানই করে গেছেন। আর খালেদা জিয়ার আমলে ১৫ ফেব্রুয়ারি ভোটারবিহীন নির্বাচন, মাগুরা-মিরপুর-ঢাকা-১০ আসনের উপ-নির্বাচনের কথা কী দেশের জনগণ ভুলে গেছে? আজ সেই বিএনপির নেতাদের মুখে গণতন্ত্র, মানবাধিকার, গুম-খুনের কথা যখন শুনি, তখন মনে হয় তারা হয়ত আয়নায় নিজেদের চেহারাটা দেখে না। আয়নায় নিজেদের চেহারাটা দেখলেই বুঝতে পারবে, দেশের নির্বাচনী ব্যবস্থা ধ্বংস করতে ক্ষমতায় থাকতে তারা কী কী করে গেছে। মানুষের ভোট, ভাত, অধিকার কেড়ে নেয়া সবই করে গেছে অবৈধভাবে জন্ম নেয়া এই বিএনপি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে স্মরণসভায় বক্তব্য রাখেন সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টাম-লীর সদস্য ও বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, সভাপতিম-লীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, শহীদ জাতীয় নেতা এম মনসুর আলীর পুত্র স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, ড. আবদুর রাজ্জাক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান, দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী শহীদ তাজউদ্দীন আহমদের কন্যা সিমিন হোসেন রিমি, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান, দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ প্রমুখ। স্মরণ সভা পরিচালনা করেন কেন্দ্রীয় প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ ও আমিনুল ইসলাম আমিন। জঙ্গী-সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সরকারের জিরো টলারেন্স নীতির কথা পুনর্ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, সংবিধান লঙ্ঘন করে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী জিয়াউর রহমানই একাত্তরের গণহত্যাকারী, যুদ্ধাপরাধী, মা-বোনের সম্ভ্রম লুণ্ঠনকারীদের মন্ত্রী-উপদেষ্টা করে লাখো শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি করেছে। এই জিয়াই নিষিদ্ধ জামায়াতে ইসলামীকে রাজনীতির সুযোগ এবং যুদ্ধাপরাধীদের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিয়েছিল। আর তাঁর স্ত্রী খালেদা জিয়া বাংলা ভাই সৃষ্টি করে প্রকাশ্য আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের কুপিয়ে কুপিয়ে খুন করিয়েছেন। আমাদের অবস্থান স্পষ্ট, আমরা জঙ্গী-সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করে যাচ্ছি। আমরা এদেশে কোন জঙ্গী-সন্ত্রাসীদের স্থান দেব না, এদের মদদদানকারীদেরও শাস্তি পেতে হবে। বাংলাদেশে মানুষ শান্তিতে বসবাস করবে, উন্নত-সমৃদ্ধ জীবন পাবে এ লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। প্রধানমন্ত্রী এ প্রসঙ্গে দলের সঙ্গে বেইমানি করে অন্য দলে যোগদানকারীদের উদ্দেশ্যে বলেন, অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারীদের হাতে জন্ম নেয়া রাজনৈতিক দলও অবৈধ হয়। অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে উচ্ছিষ্ট বিলিয়ে এ দলটির জন্ম। যারা এক সময় আমাদের দলের সঙ্গে জড়িত ছিল, ’৬৬ ও ৬৯-এর আন্দোলনের সময় বেইমানি করেছে, স্বাধীনতার সময় এবং বঙ্গবন্ধুকে হত্যা পরবর্তী যারা বেইমানি করেছে- তারাই জিয়ার দল বিএনপিতে গিয়ে ভিড়েছিল। আজ তাদের সন্তানদের মুখে অনেক বড় বড় কথা শুনতে হয়। যারা বেইমানি করে অন্য দলে যোগ দেয়, তাদের সন্তানরা বেইমানি ছাড়া আর কী শিখবে? বিএনপি-জামায়াতের জোটের কঠোর সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটি দেশের প্রধানমন্ত্রী হয়েও খালেদা জিয়া ও তাঁর পুত্র কালো টাকা সাদা করেছে। অর্থ পাচারের দায়ে তাঁর পুত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও সিঙ্গাপুরের আদালতে দোষী সাব্যস্ত হয়েছে। খালেদা জিয়া এতিমের টাকা আত্মসাত করেছেন। উনি (খালেদা জিয়া) জানেন যে, আদালতে গেলে এতিমের টাকা মেরে খাওয়ার জন্য তাঁর শাস্তি হবে, এ জন্যই আদালতে হাজির হতে উনি ভয় পান। সৎসাহস থাকলে আদালতে যেতে তো ভয় পাওয়ার কথা নয়। তবে খালেদা জিয়া ভয় পাচ্ছেন কেন? এতিমের টাকা মেরে খেয়ে এখন খালেদা জিয়ার পালাই পালাই ভাব। আসলে বিএনপি নেত্রী ভাল করেই জানেন যে উনি এতিমের টাকা মেরে খেয়েছেন, এজন্যই আদালতে যেতে ভয় পান। শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপির আমলে বাংলাদেশ পাঁচবার দুর্নীতিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। দুর্নীতি, সন্ত্রাস, মানুষ হত্যা, মানবাধিকার লঙ্ঘন, বিদেশে অর্থ পাচার ও ভোট চুরির মাধ্যমে জনগণের অধিকার কেড়ে নেয়াই হচ্ছে বিএনপির রাজনীতি। এই বিএনপি নেত্রী দেশের সম্পদ বিদেশে বিক্রির মুচলেকা দিয়েই ক্ষমতায় এসেছিলেন। নির্বাচন বানচালের নামে বিএনপি-জামায়াত জোটের পর পর দু’বছর ভয়াল ধ্বংসযজ্ঞ, মানুষ পুড়িয়ে হত্যার বিবরণ তুলে ধরে তিনি বলেন, নির্বাচন ঠেকানোর নামে বিএনপি নেত্রী আড়াইশ’ মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করেছেন। কী অপরাধ ছিল এসব সাধারণ জনগণের? আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, বিএনপি নেত্রী বলেছিলেন, সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত নাকি তিনি ঘরে ফিরে যাবেন না। নির্বাচনে না এসে উনি রাজনীতিতে ভুল করেছেন। রাজনীতিতে কেউ ভুল করলে তার খেসারত তাকেই দিতে হয়, দেশের জনগণ কেন দেবে? অথচ নিজের ভুল সিদ্ধান্তের প্রতি খালেদা জিয়া জনগণের ওপর প্রতিশোধ নিয়েছেন। শত শত মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করেছেন। কিন্তু দেশের জনগণই তাঁর এই ধ্বংসাত্মক রাজনীতি প্রত্যাখ্যান করেছে, প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে। আগামীতেও দেশের জনগণ তাদের প্রতিহত করবে। বিএনপি-জামায়াত জোট আমলে ভয়াবহ দুর্নীতি ও দুঃশাসনের কথা দেশের জনগণকে স্মরণ করিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জিয়াউর রহমান হত্যার পর ৪০ দিনব্যাপী প্রচার করা হয়েছিল যে, জিয়া নাকি ভাঙ্গা স্যুটকেস আর ছেঁড়া গেঞ্জি ছাড়া কিছুই রেখে যাননি। তবে পরবর্তীতে তাদের পরনে সিফন শাড়ি, ইটালিয়ান ফার্নিচার, শত শত কোটি টাকার সম্পদ কোথায় থেকে এলো? এত বিলাসব্যাসন কোথায় থেকে এলো? এসব সম্পদই দেশের জনগণই, যা তারা দুর্নীতি করে অর্জন করেছিল? তবে কী ছেঁড়া গেঞ্জি আর ভাঙ্গা স্যুটকেস জাদুর বাক্স হয়ে গিয়েছিল। আসলে জনগণের টাকা লুণ্ঠন করেই তারা এত ধন-সম্পদের মালিক হয়েছে। দেশের ইতিহাসে আমরাই প্রথম বিএনপি নেত্রীর পুত্রের পাচারকৃত অর্থের কিছুটা অংশ দেশে ফেরত আনতে পেরেছি। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলেই দেশের উন্নতি হয়। তার কারণ হচ্ছে আওয়ামী লীগ আন্তরিকতা ও দেশপ্রেম নিয়ে কাজ করে, এদেশের মানুষকে স্বাধীনতা এনে দিয়েছে। যারা একাত্তরের পরাজিত শক্তি তাদের দোসর, পদলেহনকারী এবং যারা স্বাধীনতাই বিশ্বাস করে না তারা ক্ষমতায় থাকলে দেশের কোন উন্নতি হয় না। কারণ তারা চায় না বাংলাদেশের উন্নতি হোক, দেশের মানুষ বিশ্বসভায় মাথা উঁচু করে দাঁড়াক। ক্ষমতায় থেকে তাদের প্রধান লক্ষ্যই থাকে বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করা। তাই-ই তারা করে গেছে ক্ষমতায় থাকতে। তিনি বলেন, দেশের যে এত উন্নতি হচ্ছে, তাতে বিএনপি নেত্রীর মনে কষ্ট লাগে। কারণ উনিও চান না দেশের উন্নয়ন হোক, বাংলাদেশ এগিয়ে যাক। ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট বিলিয়ে অবৈধভাবে জন্ম নেয়া রাজনৈতিক দল যে দেশ ও জাতির কল্যাণ করতে পারে না তা বারবারই প্রমাণ হয়েছে। বংশ পরস্পরায় স্বাধীনতার সঠিক ইতিহাস যাতে দেশের নতুন প্রজন্মরা জানতে পারে সেজন্য স্বাধীনতায় বিশ্বাস সকল শ্রেণী-পেশার মানুষকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, দেশ আজ সব দিক থেকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাচ্ছে। সারাবিশ্বের সামনে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোলমডেল। এই অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে সরকারের ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে হবে, এসব অর্জন ধরে রাখতে হবে। জঙ্গীবাদ-সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সারাদেশের জনগণের মধ্যে যে চেতনা গড়ে উঠেছে তাও ধরে রাখতে হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগের নাম-নিশানা মুছে ফেলতে বার বার এ দলটির ওপর আঘাত এসেছে। সপরিবারে বঙ্গবন্ধু, জাতীয় চার নেতা এবং হাজার হাজার আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীকে হত্যা করে দলটিকে ধ্বংস করার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু আওয়ামী লীগের শিকড় অনেক গভীরে প্রথিত। হাজার চেষ্টা করেও কেউ আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করতে পারেনি, ভবিষ্যতেও পারবে না। আওয়ামী লীগ স্বাধীনতা এনেছে, এই স্বাধীনতাকে অর্থবহ করতে হবে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত, উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলবই- জাতীয় চার নেতা ও বঙ্গবন্ধুর রক্তের প্রতি আমাদের এই শপথ। ২০২১ সালে মধ্যম আয়ের এবং ২০৪১ সালের মধ্যে বিশ্বের মধ্যে বাংলাদেশকে আমরা উন্নত-সমৃদ্ধশালী দেশ হিসেবে গড়ে তুলবই। সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী বলেন, বঙ্গবন্ধুর রক্ত কী করতে পারে এবং কী করেছে- সারাবিশ্বকে দেখিয়ে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি সব ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে দেশকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। দেশবাসীর প্রতি আহ্বান- শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করুন, জঙ্গীবাদ-সন্ত্রাসমুক্ত উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণে সহযোগিতা করুন। তোফায়েল আহমেদ বলেন, বঙ্গবন্ধুর দুটি স্বপ্ন ছিল। এক স্বাধীনতা অন্যটি অর্থনৈতিক মুক্তি। বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা দিয়ে গেলেও অর্থনৈতিক মুক্তি দিয়ে যেতে পারেননি। বঙ্গবন্ধুর সেই আরাধ্য স্বপ্ন পূরণ করে যাচ্ছেন তাঁরই কন্যা শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধুর পথেই উনি বাংলাদেশকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, জিয়ার কোন নীতি-আদর্শ ছিল না, হত্যা-ক্যু-ষড়যন্ত্রই ছিল তার রাজনীতি। জাতীয় চার নেতা জীবন দিয়ে প্রমাণ করে গেছেন একমাত্র রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগই পারে নীতি-আদর্শের প্রতি অবিচল থেকে দেশের জন্য জীবন উৎসর্গ করতে। কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতা হত্যাকা-ের সঙ্গে জিয়াউর রহমানের জড়িত থাকার কথা উল্লেখ করে বলেন, খুনী মোশতাক-জিয়ার সম্মিলিত সিদ্ধান্তের ফলই হচ্ছে জাতীয় চার নেতার হত্যাকা-। জীবনে-মরনেও বঙ্গবন্ধুর পাশে ছিলেন জাতীয় চার নেতা, নীতির কাছে কোনদিন তাঁরা আত্মসমর্পণ করেননি। দেশের জনগণ আজ শেখ হাসিনার পাশে আছে, দলের নেতারা তাঁর জন্য জীবন উৎসর্গ করতেও প্রস্তুত। শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেন, বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতার হত্যাকা-ের সঙ্গে যে জিয়াউর রহমান জড়িত ছিলেন, তা আজ প্রমাণিত। জিয়া-এরশাদ-খালেদা জিয়া সবাই বঙ্গবন্ধুর খুনীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় ও পুরস্কৃত করেছে। মোহাম্মদ নাসিম আবেগজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার গর্ব লাগে যে আমি এম মনসুর আলীর সন্তান। জাতীয় চার নেতা ঘৃণাভরে সবকিছু প্রত্যাখ্যান করে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করেছেন, কিন্তু জাতির পিতার রক্তের সঙ্গে বেইমানি করেননি। আজ যারা কিছু হলেই মানবতার কথা বলেন, বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতার হত্যার পর ২১টি বছর তাদের মানবতা কোথায় ছিল? আমরা যদি ঐক্যবদ্ধ থেকে আবারও শেখ হাসিনাকে বিজয়ী করতে না পারি তবে বাংলাদেশ আবারও অন্ধকার যুগে ফিরে যাবে, রাজাকার-আলবদর-যুদ্ধাপরাধীদের হাতে চলে যাবে।
×