ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

টোকিও সফররত সুচিকে আবের প্রতিশ্রুতি

মিয়ানমারের উন্নয়নে শত শত কোটি ডলার দেবে জাপান

প্রকাশিত: ০৪:২৪, ৪ নভেম্বর ২০১৬

মিয়ানমারের উন্নয়নে শত শত কোটি ডলার দেবে জাপান

জাপান মিয়ানমারের উন্নয়নের জন্য সরকারী ও বেসরকারী সহায়তা হিসেবে ৭শ’ কোটি ৭৩ লাখ ডলার (৮০ হাজার কোটি ইয়েন) দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। জাপান চাইছে মিয়ানমারের গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারকে এগিয়ে নিয়ে যেতে। খবর ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের। জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে বুধবার টোকিও সফররত মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা আউং সান সুচির সঙ্গে বৈঠক করেন। আবের সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে সুচি (৭১) বলেন, ‘শান্তি প্রতিষ্ঠা ও জাতীয় উন্নয়ন অবিচ্ছেদ্য বিষয়।’ গত মার্চে সুচির দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্র্যাসি (এনএলডি) ক্ষমতায় আসার পর টোকিওতে এটি তার প্রথম সফর। এর আগে তিনি আঞ্চলিক ভূরাজনীতির প্রধান শক্তি চীন, ভারত, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র সফর করেন। তাদের সবাই আশা করছে, সাড়ে পাঁচ কোটি লোকের দেশ মিয়ানমারের নতুন যাত্রা তাদের কোম্পানিগুলোর জন্য বিশেষ সুযোগ সৃষ্টি করতে পারবে। আবে বলেন, জাপান মিয়ানমারের সবচেয়ে বড় নগরী ইয়াংগুনের উপকণ্ঠে জাপান পরিচালিত দুই হাজার ৪শ’ হেক্টরের শিল্প পার্ক থিলাওয়া বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করবে। এই প্রকল্পের প্রথম ধাপ এ পর্যন্ত ১৫টি দেশের ৭৮টি কোম্পানিকে আকৃষ্ট করেছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে যন্ত্রপাতি প্রস্তুতকারী জাপানী কোম্পানি কুবোতা কর্পোরেশন। তারা মিয়ানমারের ধানচাষীদের জন্য ট্রাক্টর ও ফসল কাটার যন্ত্র বিক্রির আশা করছে। অন্যদিকে আরেক জাপানী কোম্পানি ওয়াকোল কর্পোরেশন গত সেপ্টেম্বর থেকে জাপান ও থাইল্যান্ডে ব্র্যাসিয়ার রফতানি করতে উৎপাদন শুরু করেছে। মিয়ানমার চায় আরও জাপানী কোম্পানি বিনিয়োগে এগিয়ে আসুক। তবে সেক্ষেত্রে এখনও বাধা হয়ে আছে বিদ্যুত সরবরাহের ঘাটতি। মিয়ানমার প্রাকৃতিক গ্যাস উৎপাদন করে। তবে এর সিংহভাগ রফতানি হয় চীন ও থাইল্যান্ডে। অন্যদিকে দেশটির নিম্নমানের কয়লা বিদ্যুত উৎপাদনের জন্য উপযুক্ত নয়। এ পরিপ্রেক্ষিতে জাপানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা দুটি জলবিদ্যুত প্লান্টের উন্নয়নে মিয়ানমারকে ১ হাজার ৮০ কোটি ইয়েন ঋণ দেবে। জাপানের ব্যবসায়ীরা চিন্তা করছিলেন, আউং সান সুচি সাবেক প্রেসিডেন্ট থেইন সেইন ও তার সামরিক নেতৃত্বাধীন সরকারের এই নয়া অর্থনৈতিক যাত্রার পথেই হাঁটবেন কি না। থেইন সেইনের সঙ্গে টোকিওর ঘনিষ্ঠতায় সুচি বিরক্ত হন এবং এ বছর বিদেশী বিনিয়োগ অনুমোদনে ভাটা পড়ায় জাপানের উদ্বেগ আরও বেড়ে যায়। তবে সেপ্টেম্বরে সুচির ওয়াশিংটন সফর এবং একই মাসে মিয়ানমারের ওপর থেকে মার্কিন অর্থনৈতিক অবরোধ তুলে নেয়ায় নতুন করে আশার সঞ্চার হয়। গত মাসে মিয়ানমার দীর্ঘ প্রতীক্ষিত বিনিয়োগ আইন পাস করে। এতে বিদেশী বিনিয়োগের অনুমোদন প্রক্রিয়া অনেক সহজ হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
×