ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ ফুটবল ॥ মোহামেডান ২-১ রহমতগঞ্জ

মোহামেডানের ঘাম ঝরানো জয়

প্রকাশিত: ০৬:৩০, ৩ নভেম্বর ২০১৬

মোহামেডানের ঘাম ঝরানো জয়

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ একটা সময় ছিল, যখন মোহামেডান ছিল জায়ান্ট আর রহমতগঞ্জ ছিল জায়ান্ট কিলার। কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় আজ দুইদলের পরিচয় উল্টো হয়ে গেছে। ১২ দলের পয়েন্ট টেবিলে রহমতগঞ্জ যেখানে তৃতীয়, সেখানে মোহামেডানের অবস্থান অনেকটাই তলানিতে, দশম। ‘জেবি বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ’ ফুটবলে বুধবার যখন দিনের প্রথম ম্যাচে দুইদল মুখোমুখি হয়, তখন স্পষ্টতই ফেভারিট ছিল পুরনো ঢাকার দল রহমতগঞ্জ। কিন্তু বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত এই ম্যাচে বিস্ময়করভাবে পিছিয়ে পড়ে মোহামেডানই ২-১ গোলে হারিয়ে দেয় রহমতগঞ্জকে। স্বাধীনতা-উত্তর প্রিমিয়ার ফুটবল লীগে সবচেয়ে বেশি ১২ বারের চ্যাম্পিয়ন মোহামেডান। অথচ তারা শেষবার শিরোপা জেতে ১৪ বছর আগে, ২০০২ সালে! অধঃপতনের শুরু তখন থেকেই। বুধবারের আগে এবারের লীগে ১১ ম্যাচ খেলে মাত্র একটি জয় পেয়েছিল মোহামেডান, তাও সেটা তাদের মতোই দুর্বল ও পয়েন্ট টেবিলের তলানির আরেক দল শেখ রাসেলের বিরুদ্ধে! ফলে প্রথম লেগ শেষে রেলিগেশনের শঙ্কায় ভোগা দলগুলোর সারিতে নেমে গিয়েছিল তারা। এদিকে বুধবারের ম্যাচে জিতলেই পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে আবারও উঠতে পারতো রহমতগঞ্জ। আর হেরে গেলে আরও নিচে নামতে হতো সাদা-কালোদের। ম্যাচে আগে গোল করে রহমতগঞ্জ। মোহামেডানের আরও তলানিতে পাঠানোর বন্দোবস্ত করে ফেলে তারা। কিন্তু দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায় মোহামেডান। একে একে দুই গোল দিয়ে উল্টো এগিয়ে যায় তারা। খেলা শেষ হলে তারা হতাশার অনলে পোড়ায় গ্যালারিতে আসা হাজার খানেক রহমতগঞ্জ সমর্থক-অনুরাগীদের। আরও বিস্ময়কর ব্যাপারÑ দ্বিতীয় লেগ শুরুর আগে সদ্য সমাপ্ত মধ্যবর্তীকালীন দলবদলে যেখানে অন্য ক্লাব একাধিক বিদেশী ফুটবলার দলভুক্ত করেছে, সেখানে মোহামেডান-রহমতগঞ্জের কেউই এই পথে হাঁটেনি। অবশ্য মোহামেডান মাহবুব সরকার নামের এক দেশী ফুটবলারকে (গোলরক্ষক) নিবন্ধন করায়, যিনি বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়নশিপ লীগে অগ্রণী ব্যাংক স্পোর্টিং ক্লাবে খেলতেন। আর রহমতগঞ্জ তো দেশী-বিদেশী কোন ফুটবলারকেই নিবন্ধন করায়নি! ম্যাচের ২৮ মিনিটে এগিয়ে যায় রহমতগঞ্জ। মাঠের বাঁপ্রান্ত থেকে মিডফিল্ডার আলী হোসেনের বাড়িয়ে দেয়া বল নিয়ে মোহামেডানের বক্সে ঢুকে পড়েন রহমতগঞ্জের গাম্বিয়ান ফরোয়ার্ড দাওদা সিসে। প্রতিপক্ষের দু’জন ফুটবলারকে কাটিয়ে দাওদা মোহামেডানের আগুয়ান গোলরক্ষক মোঃ নেহালের ডান পাশ দিয়ে বাঁ পায়ে বল তুলে দেন। বল চলে যায় জালে (১-০)। ৪০ মিনিটে ম্যাচে সমতায় ফেরে মোহামেডান। ফ্রি কিক পায় তারা। ফরোয়ার্ড আমিনুর রহমান সজীবের ডান পায়ের তীব্র শট পোস্টে লেগে ফেরত আসে। ফিরতি বলে ক্যামেরুনের মিডফিল্ডার নাজিকো প্যাট্রিস হেডে বল পাঠান জালে (১-১)। ৮৫ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করে মোহামেডান। পুরো ম্যাচ জুড়ে ব্যর্থ ইসমাইল বাঙ্গুরাই দলকে দারুণ এক গোল এনে দেন। সতীর্থ ফরোয়ার্ড তৌহিদুল আলম সবুজের সেন্টার থেকে লাফিয়ে উঠে হেড করে লক্ষ্যভেদ করেন বাঙ্গুরা (২-১)। আর এই গোলেই জয় নিশ্চিত হয় সাদা- কালোদের। প্রথম লেগে রহমতগঞ্জের সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করেছিল মোহামেডান। ওই ম্যাচেও গোল ছিল বাঙ্গুরার! নিজেদের ১২ ম্যাচে এটা দ্বিতীয় জয় মোহামেডানের। ১২ পয়েন্ট নিয়ে তারা উঠে এসেছে দশম থেকে একলাফে সপ্তম স্থানে। পেছনে ফেললো ব্রাদার্স, বিজেএমসি ও ফেনী সকারকে। পক্ষান্তরে সমান ম্যাচে এটা রহমতগঞ্জের দ্বিতীয় হার (আগের ম্যাচেই তারা ঢাকা আবাহনীর কাছে হারে ০-২ গোলে)। ২২ পয়েন্ট নিয়ে তারা রয়ে গেছে আগের তৃতীয় স্থানেই।
×