ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

প্রথম টেস্ট শুরু আজ

অস্ট্রেলিয়া-দ. আফ্রিকা হাইভোল্টেজ লড়াই

প্রকাশিত: ০৬:২৯, ৩ নভেম্বর ২০১৬

অস্ট্রেলিয়া-দ. আফ্রিকা হাইভোল্টেজ লড়াই

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ পার্থে আজ থেকে শুরু হচ্ছে অস্ট্রেলিয়া ও সফরকারী দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যকার তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্ট। আইসিসি টেস্ট র‌্যাঙ্কিংয়ে কুলিন অসিরা তৃতীয় স্থানে, আর পাঁচে প্রোটিয়ারা। তবে র‌্যাঙ্কিং দল দুটির শক্তি বোঝানোর জন্য যথেষ্ট নয়। গত সেপ্টেম্বরেই শ্রীলঙ্কা সফরে গিয়ে ৩-০তে ‘হোয়াইটওয়াশ’ হয়ে শীর্ষস্থান খোয়ায় স্টিভেন স্মিথের দল। এরপর গত মাসে দক্ষিণ আফ্রিকায় পাঁচ ওয়ানডের সিরিজে ৫-০তে হারের লজ্জায় ডোবে বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। সুতরাং র‌্যাঙ্কিংয়ে কিছুটা এগিয়ে থাকলেও স্মিথরা এ সিরিজে মানসিকভাবে মোটেই স্বস্তিতে নেই। হয়ত তারা ঘরের মাটিতে খেলছে, কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকা আর অস্ট্রেলিয়ার কন্ডিশনের মধ্যেও খুব একটা পার্থক্য নেই। নিয়মিত অধিনায়ক এবি ডি ভিলিয়ার্সের ইনজুরির কারণে ‘হাইভোল্টেজ’ দ্বৈরথে প্রোটিয়াদের নেতৃত্বে ফ্যাফ ডুপ্লেসিস। ১৯০২ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত মুখোমুখি ৯১ টেস্টে ৫০ জয়ে এগিয়ে অস্ট্রেলিয়া। দক্ষিণ আফ্রিকার জয় ২১টিতে। ড্র ২০ ম্যাচ। ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে সর্বশেষ দুই দল টেস্টে সিরিজে অংশ নেয়। দক্ষিণ আফ্রিকা গিয়ে ৩ টেস্টের সিরিজ ২-১তে জয় করে স্মিথ বাহিনী। কেপটাউনের নিউল্যান্ডসে শেষ দেখায় ২৪৫ রানের বিশাল জয় তাদের। মজার বিষয় ২০১২ সালের নবেম্বরে আগের অস্ট্রেলিয়া সফরে আবার সমান ম্যাচের সিরিজ ১-০তে জিতেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা! যার শেষটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল এই পার্থেই। বিখ্যাত ওয়াকা গ্রাউন্ডসে প্রোটিয়ারা কখনই হারেনি। দ্রুতগতির বাউন্সি পিচে আলোচনায় দুই দলের সব তারকা পেসার। আর মাত্র ৬টি উইকেট পেলে শন পোলককে পেছনে ফেলে দেশটির ইতিহাসের সর্বাধিক উইকেটের মালিক বনে যাবেন ডেল স্টেইন। অভিজ্ঞ এই পেসার আবার তরুণ কাগিসো রাবাদাই পার্থক্য গড়ে দেবে বলে মনে করছেন! ৩৩ বছর বয়সী স্টেইন ৮৪ টেস্টে ৪১৬ উইকেট শিকার করেছেন। তিনি ক্রিকেট ইতিহাসেরই সেরা পেসারদের একজন। স্টেইন বলেন, ‘তিন বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে প্রমাণ করেছে ও মাথা খাটিয়ে বল করতে জানে। সঙ্গে গতি আর সুইংটা ইশ্বর প্রদত্ত। মাত্র ৮ টেস্টে ৩৩ উইকেটই তার প্রমাণ। আমার বিশ্বাস এ সিরিজে সেই পার্থক্য গড়ে দেবে। সঙ্গে মরনে মরকেল, ভারনন ফিল্যান্ডারকে নিয়ে আমাদের পেস আক্রমণ বিশ্বমানের। টেস্ট সাফল্য পেতে সবাই একসঙ্গে ঝাঁপিয়ে পড়তে চাই।’ অধিনায়ক ডুপ্লেসিসের সঙ্গে হাসিম আমলা, ডিন এলগার, কুইন্টন ডি’কক, রাইলি রুশো, টেম্বা বাভুমাকে নিয়ে ব্যাটিং লাইনও কম শক্তিশালী নয়। অন্যদিকে স্মিথের ভা-ারে আছেন ডেভিড ওয়ার্নার, শন মার্শ, উসমান খাজা, এ্যাডাম ভোগস, পিটার নেভিলের মতো উইলোবাজ। সুতরাং লড়াইটা যে জমবে তাতে সন্দেহ নেই। ওয়ানডে হারের বদল নিতে হুঙ্কার ছুড়েছেন ফর্মের তুঙ্গে থাকা ওয়ার্নার। অসি সহঅধিনায়ক বলেন, ‘ওয়ানডে সিরিজের কথা এখনও ভুলিনি আমরা। প্রত্যক ম্যাচেই দারুণ ক্রিকেট খেলেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। আমরাও ভাল খেলেছি। কিন্তু ভাগ্য সহায় ছিল না। তাই সব ম্যাচেই হেরেছিলাম। তবে টেস্ট সিরিজে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারানোর জন্যই মাঠে নামব। প্রতিপক্ষকে কোনভাবেই ছাড় দেব না। ওয়ানডে সিরিজের বাজে স্মৃতি মুছে ফেলতে মুখিয়ে আছে পুরো দল।’ নিজেদের বোলিং সামর্থ্যরে জানান দিতে তিনি আরও যোগ করেন, ‘সফরকারীদের জানাতে চাই, ইনজুরি-আঘাতের ভয়ে নেটে আমি সতীর্থ স্টার্ককে মোকাবিলা করতে চাইনি। ও প্রতিপক্ষের জন্য কতটা আতঙ্ক গত দুটি আন্তর্জাতিক ক্যালেন্ডারের দিকে তাকালেই বুঝতে পারবেন। আমার মনে হয় পার্থের ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ান গ্রাউন্ডসে স্টার্ক তার রুদ্রমূর্তি দেখাতে পুরোপুরি প্রস্তুত।’ হার্ডহিটার এই উইলোবাজ আরও যোগ করেন, ‘এগারো জন ক্রিকেটার নিয়ে একটা দল। আমরা প্রতিপক্ষের কাউকে নিয়ে আলাদা করে কিছুই ভাবছি না। ওয়ানডে আর টেস্টও এক নয়। ঘরের মাটিতে আগ্রাসী ক্রিকেট খেলে যথারীতি সাফল্যের মধ্য দিয়ে নতুন মৌসুম শুরু করতে চাই।’ এ পর্যন্ত ২৫টি টেস্ট সিরিজে মুখোমুখি হয়ে ১৬টিতে জিতেছে অস্ট্রেলিয়া, আর ৪টিতে জয় প্রোটিয়াদের। ৫টি সিরিজ হয় ড্র।
×