ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

টয়লেট তৈরি করে বিখ্যাত

প্রকাশিত: ০৫:৫৯, ৩ নভেম্বর ২০১৬

টয়লেট তৈরি করে বিখ্যাত

ভারতের ছত্তিসগড় রাজ্যের ১০৫ বছর বয়সী এক মহিলার চেষ্টায় ধামতারি নামের একটি জেলার লোকজনের খোলা মাঠে মলত্যাগের দীর্ঘদিনের অভ্যাস পুরোপুরি দূর করা সম্ভব হয়েছে। কুনওয়ারি বাই যাদব নামের এই বৃদ্ধা তার নিজের একমাত্র সম্পদ কয়েকটি ছাগল বিক্রি করে তার গ্রামে একটি টয়লেট বানিয়েছিলেন। কোটাবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা এই কুনওয়ারি বাই যাদব। গ্রামটি ছত্তিসগড়ের রাজধানী রাইপুর থেকে ১০০ কিলোমিটার দূরে। টয়লেট বলে যে একটা জিনিস আছে তা এই মহিলা জানতে পারেন মাত্র গত বছর। তার আগে তিনি তার এক শ’ বছরের জীবন কাটিয়েছেন জঙ্গলে-মাঠে মলত্যাগ করে। দুই বছর আগে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ২০১৯ সালের মধ্যে সব বাড়িতে টয়লেট প্রতিষ্ঠার কর্মসূচী ঘোষণা করলে সরকার প্রত্যন্ত এলাকাগুলোতে কর্মকর্তাদের পাঠায়; যারা লোকজনকে টয়লেট ব্যবহারের সুফল সম্পর্কে সচেতন করেন। এক হিসাব অনুযায়ী ভারতে ৫৫ কোটি লোক উন্মুক্ত স্থানে মলত্যাগ করে। মজার ব্যাপার হচ্ছেÑ ভারতে এর চেয়েও বেশি লোক মোবাইল ফোনের মতো প্রযুক্তি ব্যবহার করছে। কুনওয়ারি বাই বলেন, জেলা কালেকটরের মুখে টয়লেটের কথা শুনে আমি প্রথম এ সম্পর্কে জানতে পারি। শুনে মনে হলো, আমাকে যেভাবেই হোক বাড়িতে একটা টয়লেট বানাতেই হবে। আমার কাছে কোন টাকা ছিল না। তাই ছাগল বিক্রি করে আর পুত্রবধূর কাছ থেকে কিছু সাহায্য নিয়ে মোট ২২ হাজার টাকা তুলি। ১৫ দিনের মধ্যে টয়লেট তৈরি হয়ে গেল। এরপর সারা গ্রামে এটা আলোচনার বিষয়ে পরিণত হলো। আশপাশের গ্রাম থেকে লোকেরা টয়লেট দেখতে এলো। তারা আবার অনেকে নিজেরা বাড়িতে টয়লেট বানাতে শুরু করল। মাত্র এক বছরের মধ্যে গ্রামের সব বাড়িতে টয়লেট তৈরি হয়ে গেল বলে জানান এই শতবর্ষী। সারা গ্রাম, এমনকি গোটা রাজ্যের জন্যই এভাবে কুনওয়ারি বাই দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করেছেন। এজন্য তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রীর পদকও পেয়েছেন সম্প্রতি। আর এ পদক নেয়ার জন্যই তিনি জীবনের প্রথম গ্রামের বাইরে অন্য কোথাও গেলেন। প্রধানমন্ত্রী নরেদ্র মোদির সঙ্গে দেখা হয়েছে তার। টয়লেট বিপ্লব ঘটানোর জন্য তিনি এখন ছত্তিসগড়ের বিখ্যাত হয়ে রইলেন।-বিবিসি অবলম্বনে।
×