ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

সাম্প্রদায়িক উস্কানির জন্য টিএনওর অপসারণ দাবি সাংস্কৃতিক জোটের

প্রকাশিত: ০৫:৪৭, ৩ নভেম্বর ২০১৬

সাম্প্রদায়িক উস্কানির জন্য টিএনওর অপসারণ দাবি সাংস্কৃতিক জোটের

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রদায়িক হামলার প্রতিবাদে রাজধানীতে প্রতিবাদ সমাবেশ, বিক্ষোভসহ নানা কর্মসূচী পালন করেছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সাংস্কৃতিক সংগঠন। এসব কর্মসূচীতে অংশ নিয়ে নেতৃবৃন্দ বলেছেন, সাম্প্রদায়িক শক্তিকে মোকাবেলা করতে না পারলে দেশের অস্তিত্ব বিপন্ন হবে। তাই অপরাধীদের দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তারা। এদিকে আগামী ৮ নবেম্বর দেশব্যাপী সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস প্রতিরোধ দিবসের ডাক দিয়েছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) জোট। বুধবার সিপিবির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবু জাফর আহমেদ ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল বাসদের সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান এক বিবৃতিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রদায়িক হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন। বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। বিবৃতিতে সিপিবি-বাসদ নেতৃবৃন্দ বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসীরা হিন্দু সম্প্রদায়ের মন্দির, ঘরবাড়ি এবং মানুষজনের ওপর যে বেপরোয়া হামলা চালিয়েছে, তা চরম উদ্বেগের। প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তার সুযোগে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পর দেশের আরও কয়েকটি স্থানে হামলা হয়েছে। সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে মোকাবেলা করতে না পারলে দেশের অস্তিত্ব বিপন্ন হবে। কিন্তু সরকার নমনীয় কিংবা নিষ্ক্রিয় থাকছে। সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে প্রতিরোধ করতে মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ আগামী ৮ নবেম্বর দেশব্যাপী সিপিবি-বাসদ আহূত ‘সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস প্রতিরোধ দিবস’ সফল করার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। সরকারের ব্যর্থতার ফলে বারবার হামলা ॥ ধর্মব্যবসায়ী ও কায়েমি স্বার্থবাদীদের পরিকল্পিত সাম্প্রদায়িক উস্কানি এবং সরকারী নিষ্ক্রিয়তার ফলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হিন্দু সম্প্রদায়ের নিরপরাধ মানুষ আক্রমণের শিকার হয়েছে। মহাজোট সরকারের আমলে কক্সবাজারের রামু, যশোরের অভয়নগর, পাবনার সাঁথিয়াসহ বিভিন্ন স্থানে সংঘটিত সাম্প্রদায়িক হামলার বিচার না হওয়াতে হামলাকারীরা প্রশ্রয় পেয়েছে। ধর্ম অবমাননার গুজব রটিয়ে বারবার সাধারণ মানুষকে উত্তেজিত অসহিষ্ণু করে তোলা সম্ভব হচ্ছে কেন তার কারণ অনুসন্ধান করা জরুরী। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর ও হবিগঞ্জের মাধবপুরে হিন্দু সম্প্রদায়ের মন্দির-বসতবাড়িতে হামলা-ভাংচুর-লুটপাট-মারধর ও প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তার প্রতিবাদে এবং অবিলম্বে সাম্প্রদায়িক হামলাকারী ও ইন্ধনদাতাদের চিহ্নিত করে বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করানোর দাবিতে গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার উদ্যোগে বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট ॥ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ ও পতাকা মিছিল করেছে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট। বুধবার বিকেলে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) শান্তির পায়রা চত্বরে তারা এই বিক্ষোভ কর্মসূচী পালন করে। কর্মসূচী থেকে বর্বরোচিত হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে জড়িতদের দ্রুত চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে সাম্প্রদায়িক হামলার প্রতিবাদে আগামীকাল শুক্রবার দেশের সকল জেলা শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বিকেল সাড়ে চারটায় প্রতিবাদ সমাবেশেরও ঘোষণা দেয়া হয়। সমাবেশে জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক হাসান আরিফ, সাবেক সভাপতি নাসির উদ্দিন ইউসুফ, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার, জাতীয় কবিতা পরিষদের সভাপতি কবি মুহম্মদ ড. সামাদ, নাট্যজন মামুনুর রশীদ প্রমুখ। বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি ॥ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রীস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট রানা দাসগুপ্ত বলেছেন, সংখ্যালঘুদের ওপর যে হামলার ঘটনা ঘটে, তদন্তের অভাবে তার সঠিক বিচার হয় না। নাসিরনগরের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করে তিনি বলেন, সুপ্রীমকোর্টের এক বিচারপতির নেতৃত্বে অবিলম্বে তদন্ত কমিটি গঠন করতে হবে। বুধবার বিকেলে নাসিরনগরে গৌরমন্দির পরিদর্শনকালে তিনি এ কথা বলেন।
×