ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

দিনে রাস্তায় নামছে ৩১৭ নতুন গাড়ি;###;সড়ক বাড়ছে না;###;রাজধানী এখন গাড়িহাট

চলতে পারে সর্বোচ্চ ২ লাখ ১৬ হাজার ॥ সাড়ে দশ লাখ গাড়ি

প্রকাশিত: ০৫:৩৭, ৩ নভেম্বর ২০১৬

চলতে পারে সর্বোচ্চ ২ লাখ ১৬ হাজার ॥ সাড়ে দশ লাখ গাড়ি

রাজন ভট্টাচার্য ॥ আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী রাজধানীর রাস্তায় সর্বোচ্চ দুই লাখ ১৬ হাজার গাড়ি চলতে পারে। অথচ প্রতিদিনই নামছে ৩১৭ নতুন যানবাহন। বর্তমানে নগরীতে চলা মোট গাড়ির সংখ্যা প্রায় সাড়ে ১০ লাখ। এমন বাস্তবতায় গত বছর ঢাকা জেলায় সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে রাজধানীতে মারা গেছেন অন্তত ২২৭। রাজধানীজুড়ে দাবড়ে বেড়াচ্ছে দেড় লাখের বেশি ফিটনেসবিহীন গাড়ি। অবৈধ চালকের পরিসংখ্যান কারও হাতে নেই! সড়ক দুর্ঘটনার জন্য ৫০ ভাগই দায়ী চালকরা। কিন্তু দুর্ঘটনার মামলায় ৮৩ ভাগ আসামিকে আইনের আওতায় আনা সম্ভব হয় না। বাস্তব চিত্র হলো একদিকে বাড়ছে দুর্ঘটনা। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে গাড়িও। এই শহরে সর্বোচ্চ কত গাড়ি নামানো যাবে- এ রকম কোন পরিকল্পনা নেই সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ের। রাস্তা বাড়ছে না, বাড়ছে গাড়ি। এ নিয়ে কারও কোন মাথাব্যথা নেই। বাস্তবতা হলো ব্যক্তিগত গাড়ির সংখ্যা বেশি বাড়ায় ভবিষ্যতে যানজটের ভোগান্তি আরও বাড়বে। তাছাড়া রেজিস্ট্রেশনভুক্ত যানের মধ্যে গণপরিবহনের সংখ্যা সবচেয়ে কম। বিআরটিএ বলছে, রেজিস্ট্রেশনপ্রাপ্ত গাড়ির মধ্যে সর্বোচ্চ সাড়ে চার হাজার গণপরিবহন হিসেবে চলাচল করে রাজধানীতে। এদিকে বেপরোয়া গাড়ি চালানো ও চালকদের প্রশিক্ষণ না থাকাই সড়ক দুর্ঘটনার মূল কারণ বলছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, এমন অনেক চালক আছেন যাদের জেব্রা ক্রসিং সম্পর্কেই ধারণা নেই। আর এ জন্যই এই ক্রসিংয়েও গাড়ি থামে না! রাজধানীতে সড়ক দুর্ঘটনায় তাই পথচারী নিহতের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাত বছরেও বাস্তবায়ন হয়নি নগরীর দুর্ঘটনাপ্রবণ ৫১ ব্ল্যাক স্পটের সুপারিশ। একাধিক নগর কর্তৃপক্ষ থাকায় এসব সুপারিশ বাস্তবায়ন হয়নি। এজন্য সংশ্লিষ্টরাই দায়ী বলে মনে করেন তারা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ফুটপাথ ও রাস্তা দখলমুক্ত করা, ট্রান্সপোর্ট কমিশন গঠন, যথাযথ আইন প্রয়োগ ও কোম্পানির মাধ্যমে গাড়ি চালানোসহ চালক-যাত্রী-পথচারীদের সচেতন করা গেলে সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে আসবে। জানতে চাইলে বিআরটিএ সচিব শওকত আলী জনকণ্ঠকে বলেন, শহরের আয়তন ও জনসংখ্যা বিবেচনায় কত গাড়ি নামবে? এর ধরনের পরিসংখ্যান আমাদের কাছে নেই। কিংবা এ বিষয়ে সরকারী কোন পরিকল্পনা বা নির্দেশনাও নেই। শহর ও সংখ্যা অনুপাতে কত গাড়ি রেজিস্ট্রেশন দেয়া হবে এ ধরনের নীতিমালা প্রয়োজন আছে একথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এজন্য একটি সমন্বিত পরিকল্পনা জরুরী। দিন দিন এই শহরে জনসংখ্যা বাড়ছে, গাড়িও প্রয়োজন। ঠিক এই বিবেচনায় যানবাহনের রেজিস্ট্রেশন চলছে। অথচ পুরো বিষয়টি এখন সিস্টেমে আনা উচিত। তবে সরকার এ বিষয়ে সচেতন। তিনি বলেন, রাজধানীতে ব্যক্তিগত গাড়ির ব্যবহার কমাতে সর্বশেষ বাজেটে একই পরিবারে একাধিক প্রাইভেটকার নামাতে হলে দ্বিগুণ কর দেয়ার বিষয়টি যুক্ত করা হয়েছে। যদিও এতে ব্যক্তিগত গাড়ি নামানোর প্রবণতা কমেনি। রাজধানীতে প্রায় সাড়ে ১০ লাখ রেজিস্ট্রেশনভুক্ত যানবাহনের মধ্যে মাত্র সাড়ে চার হাজার গাড়ি নিয়মিত চলাচল করার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, উন্নত দেশগুলোর মধ্যে আমাদের শহরেও কোম্পানির মাধ্যমে গণপরিবহন চালানোর ব্যবস্থা করা উচিত। এ বিষয়ে বিভিন্ন সময়ে বিশেষজ্ঞ কমিটি গবেষণা চালিয়ে বিভিন্ন পরামর্শ দিলেও তা কার্যকরের ক্ষেত্রে নানা প্রতিবন্ধতা রয়েছে। পরিবহন চলাচলে শৃঙ্খলা ও গাড়ি রেজিস্ট্রেশন দেয়া নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে দুর্ঘটনা কমানো কষ্টকর হবে। রাজধানী যেন গাড়ির হাট! ॥ সত্যিই আশ্চর্যের কথা। গোটা রাজধানী গাড়ি আর গাড়ি। কোথাও ফাঁকা নেই। একে অপরিকল্পিত নগরায়ন। সঙ্গে যোগ হয়েছে রাস্তা সঙ্কট। আন্তর্জাতিক নিয়মে ২৫ ভাগ রাস্তার স্থলে আছে ৬ থেকে সাত ভাগ। এরমধ্যে প্রায় অর্ধেক দখলে। তার ওপর আবার কত গাড়ি চলবে এ রকম কোন পরিকল্পনা নেই। পরিসংখ্যান বলছে, ৩১৭ গাড়ি প্রতিদিন নামছে এই নগরীতে। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রাইভেটকার। অথচ আন্তর্জাতিক মানদ- অনুযায়ী রাজধানীর সড়কগুলোতে ২ লাখ ১৬ হাজার যানবাহন চলতে পারে। দেশে নিবন্ধিত প্রাইভেটকারের ৭৫ শতাংশ চলছে রাজধানীতে। অথচ এসবে যাতায়াত করছে মাত্র ৮ ভাগ যাত্রী। এছাড়া ঢাকায় ব্যক্তিনির্ভরতার কারণে কোম্পানিভিত্তিক বাস ব্যবসা গড়ে উঠছে না। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বেসরকারীভাবে বাস নেটওয়ার্ক গড়ে কোম্পানির মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দ্রুত আন্তর্জাতিক মানদ-ে রাজধানীতে গণপরিবহন বৃদ্ধির পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিআরটিএ’র সেপ্টেম্বর মাসের প্রতিবেদন অনুযায়ী ঢাকায় নিবন্ধিত বিভিন্ন ধরনের গাড়ি রয়েছে ১০ লাখ ৩০ হাজারের কিছু বেশি। এর মধ্যে বাস ও মিনিবাস রয়েছে ৩৩ হাজার ২৮ নিবন্ধিত। কিন্তু পরিবহন সমিতিগুলোর হিসাবে দেখা গেছে, ঢাকায় চলাচল করছে ৪ হাজার বাস। ঢাকায় দিনে অন্তত ৬ লাখ মানুষ নানা প্রয়োজনে আসছেন। যুক্তরাজ্যের লন্ডনে একটি বাস ঘণ্টায় ১৮ কিলোমিটার অতিক্রম করে। ঢাকায় গতি ঘণ্টায় মাত্র ৭ কিলোমিটার। ২০১৩ সালের এপ্রিলে প্রকাশিত ঢাকা যানবাহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ পরিচালিত সমীক্ষায় দেখা যায়, ঢাকার জনসংখ্যার ঘনত্ব বেশি। তাই, দিনে অন্তত ২১ লাখ ট্রিপের প্রয়োজন। কিন্তু যানজটে ২১ লাখের তিনভাগের একভাগ ট্রিপও হচ্ছে না। সমীক্ষা অনুযায়ী, রাজধানীর প্রতি ৩ হাজার যাত্রী যাতায়াতের জন্য বাস ও মিনিবাস আছে মাত্র একটি। তারা জানান, রাজধানীর অটোরিক্সাগুলোর এক তৃতীয়াংশ অচল। গণপরিবহনের সঙ্কটের বিপরীতে ব্যক্তিগত গাড়ির সংখ্যা বাড়ছে। রাজধানীর সড়ক দুর্ঘটনার কারণ ও প্রতিকার প্রসঙ্গে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় এক্সিডেন্ট রিসার্স ইনস্টিটিউটের (এআরআই) অধ্যাপক মোহাম্মদ মাহাবুব আলম তালুকদার জনকণ্ঠ’কে বলেন, সঙ্কট সমাধানে সবার আগে একটি টান্সপোর্ট কমিশন গঠন করা জরুরী। তাদের কাজ হবে পরিবহন নিয়ন্ত্রণ করা। গণপরিবহন বাড়ানোর পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, পরিবহনের মান উন্নত হলে মানুষ গাড়িতে চলাচল করবে। পথচারীর সংখ্যা কমবে। পাশাপাশি যানজটও নিয়ন্ত্রণে আসবে। কারণ রাজধানীতে গাড়ি চাপায় পথচারী নিহতের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। সড়ক দুর্ঘটনার জন্য সবার গাফিলতির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এক্সিডেন্ট রিচার্স ইনস্টিটিউটের পক্ষ থেকে ঢাকাসহ সারাদেশের সাম্প্রতিক ব্ল্যাক স্পটগুলো চিহ্নিত করার পর কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছিল। মহাসড়কে ব্ল্যাক স্পট সমস্যা সমাধানে মন্ত্রণালয় কিছু উদ্যোগ নিলেও ঢাকায় ৫০টির বেশি স্পট আগের অবস্থাতেই রয়েছে। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, সিটি কর্পোরেশন, মহানগর পুলিশ থেকে শুরু করে ঢাকায় অনেক কর্তৃপক্ষ থাকায় এসব সমস্যার সমাধান হয়নি। কিন্তু সিটি গবর্নমেন্ট পদ্ধতি চালু থাকলে এসব সমস্যা অনেক আগেই সমাধান হতো। স্বাভাবিক গতিতে গাড়ি চলাচল করলে রাজধানীতে এত বেশি সড়ক দুর্ঘটনা হতো না এ কথা উল্লেখ করে এই বিশেষজ্ঞ বলেন, প্রতিটি উন্নত শহরে নির্দিষ্ট কিছু প্রতিষ্ঠান গাড়ি চালায়। আমাদের দেশে এ রকম কোন সিস্টেম নেই। ইচ্ছে মতো গাড়ি নামানো হচ্ছে। চালকরা দক্ষ নয়। সবাই সতর্ক হয়ে গাড়ি না চালানোর কারণে দুর্ঘটনা হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, আইন প্রয়োগ না হওয়াও সড়ক দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ। দুর্ঘটনা রোধে চালকদের ওভারটেকিং বন্ধের পরামর্শ দেন তিনি। এছাড়াও দুই সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে ফুটপাথ দখলমুক্ত করার কার্যক্রম সফলভাবে শেষ হলে সড়ক দুর্ঘটনা আরও কমে আসবে বলেও মনে করেন তিনি। রাজধানীর ৫১ স্পট ॥ দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউট ঢাকা নগরীর ৫১ পয়েন্টকে দুর্ঘটনার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করে ২০০৯ সালে তালিকা পাঠানো হয় যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে। এরপর পেরিয়ে গেছে প্রায় সাত বছরের বেশি সময়। অথচ কাজের কাজ কিছুই হয়নি। এসব পয়েন্টের মধ্যে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ হচ্ছে যাত্রাবাড়ী, ফার্মগেট, মতিঝিল, মৎস্য্যভবন, সোনারগাঁও, বিজয় সরণি, শনির আখড়া, জসিমউদ্দীন রোড ক্রসিং, শাহবাগ, সায়দাবাদ ও জিপিও মোড়। প্রতিষ্ঠানটির মতে, ঢাকায় দুর্ঘটনা এবং দুর্ঘটনার কারণে প্রাণহানি বেড়ে যাওয়ার বড় কারণ ফিটনেসহীন যানবাহন ও প্রশিক্ষণহীন গাড়িচালক। ৫০ ভাগ দুর্ঘটনার জন্য দায়ী চালকরাই ॥ দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের (এআরআই) তথ্য মতে, ৫০ ভাগ সড়ক দুর্ঘটনার জন্য দায়ী চালকরা। ৪৯ ভাগ দুর্ঘটনার জন্য দায়ী ছিল বাসচালকদের বেপরোয়া গাড়ি চালানো। চালকদের ওপর করা জরিপে দেখা গেছে, চালকদের ৮১ ভাগ প্রশিক্ষণ ছাড়া, শুধু ওস্তাদদের কাছ থেকে শিখেই চালক বনে যান। চালকদের ৪৮ ভাগই মাধ্যমিক বা সমমানের শিক্ষিত। চালকদের সবাই অধিক রোজগারের জন্য অতিরিক্ত পরিশ্রম করেন। জরিপে দেখা গেছে, ৯ থেকে ১২ ঘণ্টা গাড়ি চালান ৪৮ ভাগ চালক। ১৯ ভাগ চালক গাড়ি চালান ১৩ থেকে ১৬ ঘণ্টা। আবার এসব চালকের বাড়ি গ্রামে থাকলেও ৪১ ভাগই ঘুমান গাড়িতে। বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশের বেশিরভাগ চালক লেখাপড়া জানেন না। তাদের রোডসাইন সম্পর্কে তেমন ধারণা নেই। গাড়ি চালানোর সময় কোথায় ওভারটেক করা যাবে এবং কোথায় যাবে না, সে বিষয়ে তাদের ধারণা নেই। রাজধানীতে দুর্ঘটনা কত ॥ ২০১৫ সালে বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছে ৫ হাজার বলে পরিসংখ্যান জানিয়েছে নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা), যা আগের বছরের চেয়ে দেড় হাজার কম। নিসচার চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, ২০১৫ সালে সারাদেশে ২ হাজার ৬২৬টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। এই বছর ২০১৫ সালে ঢাকা জেলায় সবচেয়ে বেশি মানুষ দুর্ঘটনায় নিহত হন। এই সংখ্যা ৩৫৯। এর মধ্যে রাজধানীতেই নিহত ২২৭। রাজধানীতে দেড় লাখ ফিটনেসবিহীন গাড়ি ॥ সবখানেই দাবড়ে বেড়াচ্ছে ফিটনেসবিহীন যান। এসব যানবাহন নিয়ন্ত্রণে কাগুজে উদ্যোগ থাকলেও বাস্তবে নেই। বাংলাদেশ রোড ট্র্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) সূত্রে জানা গেছে, সারাদেশে ফিটনেস গাড়ির সংখ্যা প্রায় ৩ লাখ। রাজধানীতে গত বছরের জুলাই পর্যন্ত রেজিস্ট্রেশন করা প্রায় ৯ লাখ গাড়ির মধ্যে ১ লাখ ৫৯ হাজার ৬৫১ গাড়িই ফিটনেসবিহীন। সূত্র মতে, গত বছরের জুলাই পর্যন্ত ১ হাজার ১৯২টি বাসের নিবন্ধন করা হয়। তার আগে গত বছর ১ হাজার ৩৬৪, ২০১৩ সালে ৯৭১টি, ২০১২ সালে ১ হাজার ২১৮ গাড়ি নিবন্ধন হয়। মৃৃত্যুদূত অবৈধ চালকরা ॥ বাংলাদেশে নিবন্ধিত মোটরযানের সংখ্যার তুলনায় সনদধারী চালক প্রায় ১০ লাখ কম বলে সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানিয়েছেন। সম্প্রতি সংসদে মন্ত্রী এ তথ্য তুলে ধরেন তিনি বলেন, লাইসেন্সবিহীন চালকের সঠিক পরিসংখ্যান সরকারের কাছে নেই। মন্ত্রী বলেন, সারাদেশে লাইসেন্সধারী গাড়িচালকের সংখ্যা ১৫ লাখ ৪৮ হাজার ৪৬৫। অন্যদিকে রেজিস্ট্রেশন করা মোটরযানের সংখ্যা ২৪ লাখ ৪ হাজার ১১৪। ভুয়া লাইসেন্সধারী চালক ও মোটরযানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য পুলিশসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের চিঠি দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশ বাস-ট্রাক এ্যাসোসিয়েশনের ভাইস-চেয়ারম্যান রমেশ চন্দ্র ঘোষের কাছে জানতে চাইলে, তিনি বলেন, বিশৃঙ্খল চালকরাই সড়ক দুর্ঘটনার জন্য একমাত্র দায়ী। তিনি বলেন, বেপরোয়া গাড়ি চালানো বন্ধ করতে হবে। ‘সাবধান’ কথাটি মাথায় রাখতে হবে। তাছাড়া সড়ক দুর্ঘটনা রোধে চালক, পথচারীসহ যাত্রীদের মধ্যে প্রয়োজনীয় সচেতনতা গড়ে ওঠেনি।
×