ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ঋণ ও আমানত উভয় ক্ষেত্রেই সুদহার কমিয়েছে ব্যাংকগুলো

১৯ ব্যাংকের স্প্রেড বেশি

প্রকাশিত: ০৪:১৭, ৩ নভেম্বর ২০১৬

১৯ ব্যাংকের স্প্রেড বেশি

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়মে কোন ব্যাংকের ঋণ ও আমানতের (স্প্রেড) সুদ ব্যবধান ৫ শতাংশীয় পয়েন্টের বেশি হতে পারবে না। কিন্তু চলতি বছরের সেপ্টেম্বর শেষে ২৩টি ব্যাংকের স্প্রেড কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশীত সীমার বাইরে রয়েছে। এ তালিকায় বেসরকারী খাতের ১৪টি, বিদেশী খাতের ৫টি ব্যাংক রয়েছে। এ সময়ে সবচেয়ে বেশি স্পেড রয়েছে বেসরকারী ব্র্যাক ব্যাংকের। এদিকে সেপ্টেম্বরে ব্যাংকের ভোক্তা খাতে বিতরণ করা ঋণ বাদ দিয়েও স্প্রেডের হিসাব দেখিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এক্ষেত্রেও স্প্রেড সীমা বেশি রয়েছে ১৭টি ব্যাংকের। এ তালিকায় বেসরকারী খাতের ১১টি, বিদেশী খাতের ৬টি ব্যাংকের নাম রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানান, আমানতের অনুপাতে ঋণের সুদ না কমায় স্প্রেড প্রত্যাশিতহারে কমছে না। এর জন্য খেলাপী ঋণ বৃদ্ধিকে দায়ী করছেন তারা। জানা গেছে, গত ২১ জুন এক চিঠিতে ১৫ দিনের মধ্যে স্প্রেড ৫ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনতে ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের সে নির্দেশনা উপেক্ষা করেছে এসব ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে দেখা যায়, সেপ্টম্বর শেষে ঋণ ও আমানত উভয় ক্ষেত্রেই সুদহার কমিয়েছে ব্যাংকগুলো। তবে আমানতের চেয়ে ঋণের সুদ তুলনামূলক কম কমেছে। এ সময়ে দেশের ৫৬টি ব্যাংকের ঋণের গড় সুদহার দাঁড়িয়েছে ১০ দশমিক ১৫ শতাংশ। যা আগের মাসে ছিল ১০ দশমিক ২৪ শতাংশ। এ সময়ে আমানতের গড় সুদহার দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক ৩৯ শতাংশ। যা আগের মাসে ছিল ৫ দশমিক ৪৪ শতাংশ। আমানতের পাশাপাশি ঋণের সুদ কমায় সেপ্টেম্বরে গড় স্প্রেড কমে দাঁড়িয়েছে ৪ ধমমিক ৭৬ শতাংশীয় পয়েন্ট। যা আগস্টে ছিল ৪ দশমিক ৮০ শতাংশীয় পয়েন্ট। তবে এ সময়ে ব্যাংকিং খাতে গড় স্প্রেড ৫ শতাংশের নিচে অবস্থান করলেও বিদেশী খাতের ব্যাংকগুলোর গড় স্প্রেড এখনও ৬ শতাংশীয় পয়েন্টের ওপরে রয়েছে। প্রতিবেদনে দেখা যায়, সেপ্টেম্বর মাসে বিদেশী খাতের ৬টি ব্যাংকের স্প্রেড নির্ধারিত সীমার বাইরে রয়েছে। এগুলো হলো- স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের স্প্রেড ১০ দশমিক ৫৩ শতাংশীয় পয়েন্ট, স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার ৫ দশমিক ৯৩ শতাংশীয় পয়েন্ট, সিটি ব্যাংক এন এ ৬ দশমিক ২৮ শতাংশীয় পয়েন্ট, উরি ব্যাংক ৫ দশমিক ৯৬ শতাংশীয় পয়েন্ট, কমার্শিয়াল ব্যাংক অব সিলনের ৫ দশমিক ১৬ শতাংশীয় পয়েন্ট এবং দ্য হংকং এ্যান্ড সাংহাই ব্যাংক কর্পোরেশন লিমিটেডের (এইচএসবিসি) স্প্রেড দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক ১১ শতাংশীয় পয়েন্টে। এ সময়ে বেসরকারী খাতের ১৪টি ব্যাংকের স্প্রেডও নির্ধারিত সীমা অতিক্রম করেছে। বেসরকারী ব্যাংকের মধ্যে ব্র্যাক ব্যাংকের স্প্রেড ৯ দশমিক ৪৬ শতাংশীয় পয়েন্ট, যা একক ব্যাংক হিসেবে ব্যাংকিং খাতে সবচেয়ে বেশি। এছাড়া ডাচ্ বাংলা ব্যাংকের ৬ দশমিক ৭৮ শতাংশীয় পয়েন্ট, ওয়ান ব্যাংকের ৫ দশমিক ৬৩ শতাংশীয় পয়েন্ট, আইএফআইসির ৫ দশমিক ৮৬ শতাংশীয় পয়েন্ট, ইস্টার্ন ব্যাংকের ৫ দশমিক ৩৪ শতাংশীয় পয়েন্ট, এবি ব্যাংকের ৫ দশমিক ১ শতাংশীয় পয়েন্ট, উত্তরা ব্যাংকের ৫ দশমিক ৭২ শতাংশীয় পয়েন্ট ও ট্রাস্ট ব্যাংকের ৫ দশমিক ২৬ শতাংশীয় পয়েন্ট স্প্রেড রয়েছে। এছাড়া নতুন প্রজন্মের ৯টি ব্যাংকের মধ্যে মধুমতি ব্যাংকের স্প্রেড ৫ দশমিক ৩ শতাংশ, এনআরবি ব্যাংকের ৫ দশমিক ৩৩, ইউনিয়ন ব্যাংকের ৫ দশমিক ৮১ শতাংশ, মেঘনা ব্যাংকের ৫ দশমিক ১৪ ও সাউথবাংলা ব্যাংকের ৫ দশমিক ১৪ শতাংশ রয়েছে।
×